সংগীত দিবসের বিতর্ক নিয়ে যা বললেন দিনাত জাহান মুন্নি
বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশে ২১ জুন বিশ্ব সংগীত দিবস পালিত হয়। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও উদযাপিত হয়ে আসছে দিবসটি বেশ কয়েক বছর ধরে। এবারও হতে যাচ্ছে বর্ণাঢ্য আয়োজনে।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে আয়োজিত হতে যাচ্ছে ‘বিশ্ব সংগীত দিবস ২০১৯’। এবারের দিবসের স্লোগান- ‘সুরের আগুন ছড়িয়ে দেব সব প্রাণে’।
আগামী ২১ জুন শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে র্যালি ও এরপর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালিত হবে এবারের সংগীত দিবস। বেশ কিছু গণমাধ্যামে খবর প্রকাশিত হয়েছে শিল্পকলা একাডেমির হয়ে পুরো আয়োজনের তত্ত্বাবধানে আছেন সংগীতশিল্পী দিনাত জাহান মুন্নি। তার নেতৃত্বে ১০টি ভাষার গান করবেন দেশের ৪৫ জন শিল্পী।
সে তালিকায় নেই দেশের প্রতিথযশা কিংবদন্তী ও গুণী শিল্পীরা। সে নিয়ে চলছে বিতর্ক। অভিযোগ উঠছে দেশের সিনিয়র শিল্পীদের এড়িয়ে তরুণ প্রজন্মের কয়েকজন অল্প পরিচিত শিল্পীদের নিয়ে এবারের সংগীত দিবস পালিত হতে যাচ্ছে। আর সেজন্য সমালোচকদের কাঠগড়ায় দিনাত জাহান মুন্নী।
কিন্তু বিষয়টি সবাই ভুল বুঝছেন বলে দাবি করলেন মুন্নী। বৃহস্পতিবার তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি এই আয়োজনের দায়িত্ব পাইনি। কেবলমাত্র একটা পার্টের স্বমন্বয়ক। এখানে অনেক আয়োজন থাকছে। জগন্নাত ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ, ছায়ানটসহ অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান যোগ দেবে।
এর মধ্যে একটা পার্ট আছে যেখানে ১০টা বিদেশি গান রিপ্রেজেন্ট করা হবে। যেহেতু আন্তর্জাতিক সংগীত দিবস সেই ভাবনা থেকেই বিশ্বের ১০টা দেশের ভাষার গান গাইবে আমাদের তরুণ প্রজন্মের শিল্পীরা। এই অংশের দায়িত্ব আমি পেয়েছি। তাদের স্বমন্বয়ক হিসেবে আমি কাজ করছি। কিন্তু পুরো সংগীত দিবস তো শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করছে।’
১০ ভাষার গানের শিল্পীদের তালিকায় সিনিয়র বলতে আপনি, ডলি সায়ন্তনী ও বাদশা বুলবুল। এর বাইরে দেশের কোনো গুনী বা জনপ্রিয় শিল্পীদের দেখা যাচ্ছে না। কেন? এই প্রশ্নের জবাবে মুন্নী বলেন, ‘আমি যখন একটা বিদেশি জাপানিজ গান, কিংবা চাইনিজ গান উপস্থাপন করবো সেই গানে কী আমাদের সিনিয়র শিল্পীরা পারফর্ম করবে চার-পাঁচজন মিলে! এটা কী শোভনীয় দেখায়!
যে শিল্পীদের নিয়ে আমরা বিদেশি গানের অনুশীলন করেছি সেই ছবিগুলো হয় তো সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়েছে। সেই ছবিগুলো দেখে অনেকেই ভুল বুঝেছেন।
সিনিয়র শিল্পীরা পারফর্মার হয়ে নয়, আমাদের অতিথি হয়ে থাকছেন। আমি জেনেছি সিনিয়রদের শিল্পকলা একাডেমি আমন্ত্রণ করছে। কিন্তু গানে তারা থাকছেন না। এইসব গানের জন্য তো তাদের বলাও যায় না।
যেভাবে প্রতিবছর বিশ্ব সংগীত দিবস পালন করা হয় এভাবেই পালিত হচ্ছে এইবারও। যাদেরকে আমন্ত্রণ জানানো প্রয়োজন, তাদের শিল্পকলা থেকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’
দিনাত জাহান মুন্নি আরও বলেন, ‘বিদেশি ১০ গানে ৪৫ জন শিল্পী পারফর্ম করবে। আমি শুধু এই স্লটের দায়িত্ব নিয়েছি। এটার সঙ্গে শিল্পকলা কাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে কিংবা জানায়নি সেটার কোনোই সম্পর্ক নাই। ওই ব্যপারে তো আর আমি কথা বলতে পারি না।
কিছু দিন আগে সুবীর নন্দীর দা স্বরণসভার আয়োজন করেছিলাম। আমরা সেখানে সাবিনা ইয়াসমিন, সৈয়দ আব্দুল হাদী, রফিকুল আলম, আবিদা সুলতানাসহ অনেক শিল্পীকে হাজির করতে পেরেছিলাম। এই আয়োজনে যখন তরুণ প্রজন্মের ৪৫ জন শিল্পী গান করবে, তাদের সঙ্গে তো আমি রুনা আপাকে দিয়ে বিদেশি গান গাওয়ার জন্য বলতে পারি না। এটা তো শোভনীয় হবে না। তাদেরকে তো অসম্মান করতে পারি না।
আমি শিল্পকলাকে বলেছি আমাদের সিনিয়র শিল্পীরা যেনো আমাদের সংগীত দিবসের র্যালিতে থাকেন। জাতীয় সংগীতের সঙ্গে সবাই কণ্ঠ মেলান। তারা আমাদের অতিথি হয়ে থাকবেন। এখানে বাদশা বুলবুল, ডলি সায়ন্তনী, ফেরদৌসী রহমান থাকবেন।
লিয়াকত আলী লাকী ভাই বললেন, সৈয়দ আব্দুল হাদীসহ সব সিয়নয়র শিল্পীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। রফিকুল আলম ও আবিদা সুলতানা আপাকে বলা হয়েছিলো উনারা জার্মানি চলে গেছেন। উনাদের কোরিয়ান গানে পারফর্ম করার কথাও ছিলো।
এ ছাড়াও সব শিল্পী তো সব দেশের গান গেয়ে অভ্যস্ত না। ফেসবুকে অনেকে সমালোচনা করছেন কেন এই সব গানের পারফর্মে সিনিয়র শিল্পীদের রাখা হয়নি। আমি খুব বিব্রত বিষয়টি নিয়ে।’
এমএবি/এলএ/এমকেএইচ