ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিনোদন

বিশ্ব সংগীত দিবসে গুণী শিল্পীদের উপেক্ষা করায় বিতর্ক

বিনোদন প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৩:৫৩ পিএম, ২০ জুন ২০১৯

প্রতি বছরের ২১ জুন বিশ্ব সংগীত দিবস হিসেবে পালিত হয়। ১৯৮২ সাল থেকে ফ্রান্সে এর প্রবর্তন। ১৯৮৫ সালের ২১ জুন গোটা ইউরোপ এবং পরবর্তী সময়ে সেটা পুরো বিশ্বে মর্যাদা লাভ করে। তখন বিশ্বের প্রায় ১১০টি দেশ নানা আয়োজনে উদযাপন করত দিবসটি।

বাংলাদেশেও গেল কয়েক বছর ধরে রাষ্ট্রীয়ভাবেই পালন করা হচ্ছে বিশ্ব সংগীত দিবস। এবারও ঢাকায় বড় পরিসরে দিনটি উদযাপন করা হবে বলে প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। আগামীকাল ২১ জুন, শুক্রবার সংগীত দিবসের আয়োজনে উপস্থিত থাকবেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকি। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীকে এম খালিদ।

কিন্তু আয়োজনের কোথাও থাকছে না দেশের গুণী ও প্রবীন শিল্পীদের কোনো অংশগ্রহণ। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনের সূচিতে দেখা গেল জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে বিকেল ৪টায় শুরু হবে এক ঘণ্টাব্যাপী সংগীত দিবস উদযাপন অনুষ্ঠান।

শিল্পকলা একাডেমি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক প্রতিষ্ঠান ও দলের পরিবেশনার পাশাপাশি দিনাত জাহান মুন্নীর নেতৃত্বে ১০টি ভাষার গান নিয়ে হাজির হবেন ৪৫ জন গায়ক ও গায়িকা। সেখানে রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমিন, আব্দুল হাদী, খোরশেদ আলম, কনকচাঁপা, এন্ড্রু কিশোর, সামিনা চৌধুরী, আসিফ আকবরের মতো শিল্পীদের নাম দেখা যায়নি। সে নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক।

অনেক শিল্পী ও সংগীত পরিচালকগণ আয়োজনটি নিয়ে আপত্তি তুলেছেন। তারা প্রশ্নও করছেন দেশের গুণী শিল্পীদের ছাড়া কেন এই আয়োজনটি তৈরি করা হলো। বিশ্ব সংগীত দিবসের আয়োজনে কেন দেশের গানের সেরা নামগুলোকে খোঁজে পাওয়া যাবে না?

এ বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকির মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ওপাশে কল রিসিভ হয়নি।

এদিকে দেশের কিংবদন্তী কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাকে শিল্পকলা একাডেমি থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে কাল সংগীত উৎসবে যেন উপস্থিত থাকি। কী আয়োজন তা বিস্তারিত কিছু জানি না। কোনো গান করতে হবে বা কোনো রকম পরিবেশনার কথাও আমাকে বলা হয়নি।’

একই কথা জানালেন নন্দিত কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ। তিনি বলেন, ‘আমি আমন্ত্রণ পেয়েছি অনুষ্ঠানে যাবার। তবে মনে হয় না আমার যাওয়া হবে।’ তাকেও কোনো পরিবেশনার কথা জানানো হয়নি বলে নিশ্চিত করলেন তিন।

এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আসিফ আকবর বলেন, ‘সংগীত দিবসের যে পোস্টার দেখছি। এখানে তো গুণী ও সিনিয়র কাউকেই দেখি না। শিল্পকলা শিল্পীদের সঙ্গে ডিভাইড রুল খেলছে। ব্রিটিশরা এই খেলা খেলতো। সংগীত দিবসের পোস্টারে যাদের ছবি দেখছি এরা অনেকেই না জেনে গেছে। আমার কথা হলো শিল্পকলা গানমেলা বন্ধ করেছে ২০১৫ সালে।

গানমেলা সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার একটা পরিকল্পনা করেছিলাম আমরা। এই গানমেলার লোকজনই শিল্পকলায় তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। এটা একটা খেলা। এখানে সিনিয়রদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমরা এমন সংগীত দিবস চাই না। আমরা সবার অংশগ্রহণে গানমেলা চাই।’

এদিকে ১০টি ভাষার গান নিয়ে আয়োজনের নেতৃত্ব দেয়া গায়িকা দিনাত জাহান মুন্নী বলেন, ‘সংগীত দিবসের বিস্তারিত কী আয়োজন সেটা তো আমি বলতে পারবো না। আমাকে বলা হয়েছে একটা আয়োজনের কথা আমি সেটা করার চেষ্টা করেছি।’

তিনি জানান, দেশের ৪৫ জন শিল্পী সংগীত দিবসে বাংলা, হিন্দি, উর্দু, ইংরেজি, স্প্যানিশ, জাপানিজ, চাইনিজ, নেপালি, অ্যারাবিয়ান ও রাশান ভাষায় গান পরিবেশন করবেন।

শিল্পীদের মধ্যে রয়েছেন বাদশা বুলবুল, ডলি সায়ন্তনী, মৌটুসি পার্থ, দিনাত জাহান মুন্নী, প্রিয়াংকা গোপ, কনা, ইমরান, লিজা, কোনাল, সাব্বির, মুহিন, রাজিব, জয় শাহরিয়ার, শান, সিথি সাহা, সুজন আরিফ, হৈমন্তী, রাফাত, আরমীন মুসা, আর্নিক, রন্টি দাস, লুইপা, তানভীর আলম সজীব, আলিফ আলাউদ্দিন, পিঙ্কি ছেত্রী, স্মরণ, শুভ, প্রতীক হাসান, পুতুল, পারভেজ , পুলকসহ আরও অনেকে।

এদিকে শিল্পকলা একাডেমির পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে অনুষ্ঠানের সূচি দেখে জানা গেল আগামীকাল বিকেল ৪টায় হবে আনন্দ শোভাযাত্রা। এরপর থাকবে জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে সংগীত দিবসের উদ্বোধন।

এরপর মো. মুনীরুজ্জামানের বাঁশি বাদনের সাথে সংগীত ও সংস্কৃতিকে ঋদ্ধ করেছেন এমন প্রয়াত শিল্পীদের ছবি এলইডিতে প্রদর্শন হবে। তার পরপর বিশ্বের সেরা ১০টি সংগীত কম্পোজ সংগ্রহ করে ১ মিনিট করে এলইডিতে প্রদর্শন হবে।

খানিক বিরতি শেষে আলোচনায় অংশ নেবেন উপস্থিত অতিথি ও বক্তরা। এরপর গানের পরিবেশনা নিয়ে হাজির হবে যথাক্রমে বাংলাদেশ মিউজিশিয়ানস ফাউন্ডেশন। তারা ৭ মিনিটের সমবেত যন্ত্রসংগীত পরিবেশন করবেন।

এরপর সমবেত সংগীত পরিবেশন করবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি শিশু দল, ঢাকা সাংস্কৃতিক দল ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত শিল্পীবৃন্দ ও আলোর পথযাত্রী, উত্তরায়ন জাগ জাগরে জাগ সংগীত, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত বিভাগ, সরকারী সংগীত মহাবিদ্যালয়, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি বাউল দল।

পুরো অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করবেন মাশকূর-এ-সাত্তার কল্লোল ও তামান্না তিথি।

এমএবি/এলএ/পিআর

আরও পড়ুন