স্টার সিনেপ্লেক্সে আসছে ম্যান ইন ব্ল্যাকসহ তিন ছবি
হলিউডের তিনটি ছবি একসঙ্গে মুক্তি পাচ্ছে স্টার সিনেপ্লেক্সে। তারমধ্যে অন্যতম ‘মেন ইন ব্ল্যাক’ : ইন্টারন্যাশনাল’ ছবিটি। বহুল প্রতিক্ষীত এই ছবিটি নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই হলিউপ্রেমীদের।
প্রায় সাত বছরের লম্বা বিরতির পর পর্দায় এসেছে সিরিজের চতুর্থ ছবিটি। এর পরিচালক এফ. গ্যারি গ্রে।
এছাড়াও মুক্তি পাচ্ছে ‘দ্য সিক্রেট লাইফ অব পেটস ২’ এবং ‘টয় স্টোরি ৪’। ২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া অ্যানিমেশন ছবি ‘দ্য সিক্রেট লাইফ অব পেটস’ রাতারাতি ব্লকবাস্টারে পরিণত হয়। সব মিলিয়ে এ ছবির আয় ছিল ৮৭৫ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার। এ রকম আর্থিক সাফল্যের পর এর সিক্যুয়াল হওয়াটাই স্বাভাবিক। দর্শকরাও অপেক্ষা করছিলেন পরবর্তী ছবির জন্য। অবশেষে মুক্তি পেয়েছে ‘দ্য সিক্রেট লাইফ অব পেটস ২’। আন্তর্জাতিক বাজার মাতিয়ে এবার আসছে বাংলাদেশেও।
অন্যদিকে ৯ বছর পর আবারও পর্দায় হাজির হচ্ছে পিক্সার অ্যানিমেশন স্টুডিওজ প্রযোজিত এবং ওয়াল্ট ডিজনি পিকচার্স পরিবেশিত ‘টয় স্টোরি’ সিরিজের চতুর্থ কিস্তি ‘টয় স্টোরি ৪’। এবারের কিস্তি নির্মাণ করেছেন জোশ কুলি।
‘মেন ইন ব্ল্যাক : ইন্টারন্যাশনাল’
কেতাদুরস্ত কালো পোশাকের সঙ্গে কালো জুতা এবং চশমা। একটি বিশেষ সংস্থার মানুষ এমন পোশাক পরে থাকেন যাদেরকে বলা হয় ‘মেন ইন ব্ল্যাক’। এরা রাষ্ট্রের গোপন কাজে নিয়োজিত থাকে বলেই ধারণা করা হয়। বিশেষ করে যারা ভিনগ্রহের মানুষ নিয়ে কাজ করে। পৃথিবীতে এলিয়েন সংক্রান্ত সকল নথিপত্রের তদারকি নাকি তারাই করে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ কয়েকবার উঠলেও তারা বিষয়টা এড়িয়ে যায়। ফলে এ নিয়ে একটা ধোঁয়াশা তৈরি হয়। ১৯৯৭ সালে এই বিশেষ শ্রেনীর মানুষদের নিয়েই নির্মিত হয়েছিলো ‘মেন ইন ব্ল্যাক’। যেখানে অভিনয় করেছেন উইল স্মিথ ও টনি লি জোনসের মত তারকারা।
এ পর্যন্ত সিরিজের তিনটি ছবি মুক্তি পেয়েছে। প্রতিটি ছবিই পেয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। প্রায় সাত বছর পর সেই বিরতি ভাঙছে। পর্দায় আসছে সিরিজের চতুর্থ ছবি ‘মেন ইন ব্ল্যাক: ইন্টারন্যাশনাল’।
এবারের ছবিতে থাকছে ব্যাপক পরিবর্তন। এ ছবির পরিচালক এফ. গ্যারি গ্রে। আগের ছবিগুলোতে ‘এজেন্ট জে’ ও ‘এজেন্ট কে’ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন যথাক্রমে উইল স্মিথ ও হলিউডের প্রখ্যাত অভিনেতা টমি লি জোনস। ছবিগুলোতে তাদের শ্বাসরুদ্ধকর সব কর্মকান্ড দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন দর্শকেরা।
‘মেন ইন ব্ল্যাক ৪’ ছবিতেও এ দুটি চরিত্র থাকছে। তবে উইল স্মিথ এবং টনি লি জোনস থাকছেন না। তাদের পরিবর্তে থাকছেন ক্রিস হেমসওয়ার্থ এবং টেসা থম্পসন। তবে এখানে তাদের ভূমিকা বদলাচ্ছে। আগের ছবিতে উইল স্মিথদের মত এলিয়েনদের সাথে যুদ্ধ করে পৃথিবীকে রক্ষা করার দায়িত্বে দেখা যাবে না তাদেরকে।
আগের ছবির অভিনেত্রী এমা থম্পসন থাকছেন এ ছবিতেও। ‘টেকেন’খ্যাত অভিনেতা লিয়াম নেসনকেও দেখা যাবে এ ছবিতে। তিনি থাকছেন মেন ইন ব্ল্যাক লন্ডন শাখার প্রধান হিসেবে।
‘দ্য সিক্রেট লাইফ অব পেটস ২’
ইউনিভার্সেল পিকচার্স ও ইলুমিনেশন-এর প্রযোজনায় এ ছবির পরিচালক ক্রিস রেনাড। আগের ছবির সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এবারও তার ওপর পরিচালনার ভার পড়বে এমনটি প্রত্যাশিতই ছিলো। তবে এবারের পর্বে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। লুই সিকে আর মূল চরিত্রে নেই।
এই কৌতুক অভিনেতা মূল দ্য সিক্রেট লাইফ অব পেটসে প্রধান চরিত্র ম্যাক্স নামের কুকুরের কণ্ঠ দিয়েছিলেন। লুই আর ফিরছেন না এই সিক্যুয়ালে। ম্যাক্স পশু ডাক্তারের কাছে গিয়ে এক অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির মুখে পড়ার ঘটনা দিয়ে ফাস্ট লুকের ট্রেইলার ছাড়া হয়েছে। ম্যাক্স দেখবে এখানে এসে অনেকেই মানসিক বৈকল্যের মুখে পড়ে গেছে।
লুই সিকে দ্বিতীয় পর্বের সঙ্গে না থাকলেও ‘দ্য সিক্রেট লাইফ অব পেটস ২’ ছবিতে ম্যাক্স থাকছে স্বমহিমায়, মূল চরিত্রেই। প্যাটন অসওয়াল্ট এখন ম্যাক্সের কণ্ঠ দেবেন। কণ্ঠাভিনয়ে অসওয়াল্ট নতুন নয়, ডিজনি/পিক্সারের রেমি ও রাটাটুলে ছবিতে কণ্ঠ দিয়ে সমালোচকদের বাহবা পেয়েছেন তিনি।
প্রথম পর্বের কেভিন হার্ট আর এরিক স্টোনস্ট্রিট অবশ্য দ্বিতীয় পর্বেও আছেন। তবে চমকপ্রদ খবর হলো, ‘দ্য সিক্রেট লাইফ অব পেটস’-এর সিক্যুয়ালে কণ্ঠ চরিত্রে অভিনয় করেছেন খ্যাতিমান অভিনেতা হ্যারিসন ফোর্ড। ৫০ বছরেরও বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো কোনো অ্যানিমেশন চলচ্চিত্রে নাম লেখান তিনি।
যে অ্যানিমেশন ছবির চরিত্রে হ্যারিসন ফোর্ড কণ্ঠ দিয়েছেন, সে ছবি নিশ্চয়ই আকর্ষণীয় কিছু হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। মাত্র ৭৫ মিলিয়ন ডলারে বানানো ‘দ্য সিক্রেট লাইফ অব পেটস’ ২০১৬ সালে বিশ্বব্যাপী আয় করেছিল ৮৭৫ মিলিয়ন ডলার।
মুক্তির প্রথম সপ্তাহেই এটি পকেটে তুলেছিল ১০৪ মিলিয়ন ডলার। ছবিটির দ্বিতীয় কিস্তিতেও যেন এ ব্যবসা রমরমা থাকে, হয়তো সে কারণেও এর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এতে যুক্ত করেছেন খ্যাতিমান অভিনেতা হ্যারিসন ফোর্ডকে।
‘টয় স্টোরি ৪’
টয় স্টোরি। যে গল্পের মূল চরিত্র মানুষ রোবট কিংবা পশু-পাখি নয়, খেলনা। এবারের কিস্তিতে দেখা যাবে বনি তার খেলনা নিয়ে বের হয় এক রোড ট্রিপে। যেখানে উডির সাথে দেখা হয় হারানো প্রেমিকা বো পিপের। এরপর কি হয়? উডি কি বনির সাথে ফিরে আসে? না-কি থেকে যায় তার প্রেমিকার সাথে। এমন প্রশ্নের উত্তর নিয়েই ‘টয় স্টোরি ৪’।
এর আগে ১৯৯৫ সালে মুক্তি পায় ‘টয় স্টোরি’। এরপর ১৯৯৯ সালে ‘টয় স্টোরি ২’ এবং ২০১০ এ মুক্তি পায় ‘টয় স্টোরি ৩’। সবশেষ ছবি ‘টয় স্টোরি ৩’ বক্স অফিসে দারুণ সাফল্য পায়। প্রথম সপ্তাহেই ১৪৫.৩ মিলিয়ন আয় করে বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে শীর্ষে অবস্থান করে।
উত্তর আমেরিকায় ৪১৫ মিলিয়ন ডলার এবং অন্যান্য দেশে ৬৫২ মিলিয়ন ডলার আয় করে। বিশ্বব্যাপী এর দাঁড়ায় মোট ১.০৬৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের দুই ছবির মোট আয়ের চেয়েও বেশি। ছবিতে দেখানো হয়েছে, অ্যান্ডি ডেভিস কলেজে পড়তে যাওয়ার সময় তার খেলনা শেরিফ উডি, বাজ লাইটইয়ারসহ অন্যান্যরা নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শংকিত হয় এবং তারা নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পায়।
এই চলচ্চিত্রেও আগের কিস্তির মত প্রধান দুই চরিত্র শেরিফ উডি ও বাজ লাইটইয়ারের চরিত্রে কণ্ঠ দিয়েছেন টম হ্যাঙ্কস ও টিম অ্যালেন। পুরনো চরিত্র উডি ও বাজ এবারও থাকছে। তবে যুক্ত হয়েছে নতুন বেশ কয়েকটি চরিত্র।
‘টয় স্টোরি ৪’-এ ‘বো পিপ’র অনুসন্ধান করে ছবিটির গল্প সাজানো হয়েছে। ‘বো পিপ’ হচ্ছে বিখ্যাত চরিত্র ‘সেরিফ উডি’র প্রেমিকা। ‘বো পিপ’ টয় স্টোরিজ সিরিজের প্রথম দুটিতে সহ ভূমিকায় ছিলো। তবে, তৃতীয় সিরিজে তাকে ইয়ার্ড সেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিলো। শোনা যাচ্ছে, ছবিটির কাহিনী আগের সিরিজকে অনুসরণ করেনি।
নির্মাতারা জানান, ‘এটি টয় স্টোরিজ সিরিজের মধ্যে স্বতন্ত্র এবং দুঃসাহসিক ভালোবাসার গল্প নিয়ে নির্মিত।’ বরাবরের মত এবারও সেরিফ উডির ভয়েজ দিয়েছেন বিখ্যাত মার্কিন অভিনেতা টম হ্যাঙ্কস। পাশাপাশি ড্যাফ্ট পাংকের ভয়েজ শিল্পীরা এতে ভয়েজ দিয়েছেন।
এলএ/এমএস