১৯ বছর পর এই ফিরে আসাটা উপভোগ করছি : চৈতী
নব্বই দশক ছিল বিটিভির সোনালী যুগ। ওই সময় যে ক’জন মডেল ও অভিনেত্রী দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম লামিয়া তাবাসুসম চৈতী। জুঁই নারকেল তেল, বার্জার পেইন্টসের বিজ্ঞাপন দিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন তিনি।
খুব অল্প দিনের ক্যারিয়ার তার। অল্প কিছু টিভিসিতে কাজ করেছেন। কিন্তু জনপ্রিয়তায় ছুঁয়েছিলেন আকাশ। পুরো ক্যারিয়ারে একটি মাত্র টেলিফিল্মে কাজ করেছিলেন তিনি। সেটির নাম ‘ছবির মতো মেয়ে’। ইমদাদুল হক মিলনের লেখা গল্প নিয়ে এটি তৈরি করেছিলেন নন্দিত নির্মাতা ও অভিনেতা আফজাল হোসেন। সেখানে চৈতীর বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন আফজাল হোসেন ও মনির খান শিমুল।
এটি বিটিভিতে প্রচার হয়েছিল ২০০০ সালে। এটাই ছিল তখনকার মতো ক্যামেরার সামনে শেষ দাঁড়ানো। তারপর আর শোবিজে দেখা মিলেনি চৈতীর। নতুন খবর হলো প্রায় ১৯ বছরের বিরতি কাটিয়ে আবারও ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছেন তিনি। মডেল হয়েছেন ২৫ বছর আগে নিজেরই করা একটি বিজ্ঞাপনের সিক্যুয়েলে। সঙ্গে রয়েছেন শিমুল।
নতুন করে এই ফেরা প্রসঙ্গে চৈতী জাগো নিউজকে বলেন, ‘১৯ বছর বিরতি শেষে যে কোনো কিছুতে প্রত্যাবর্তন করা অনেক আনন্দের। আমার কাছেও দারুণ লাগছে। আমি সম্মানিত বোধ করছি, বার্জার পুরনো সেই বিজ্ঞাপনটিকে নতুন করে নতুন গল্পে তৈরি করেছে বলে। দর্শকের কাছ থেকে খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি। উপভোগ করছি আমি এই ফেরা।’
বার্জারের সেই বিজ্ঞাপনটি নির্মাণ করেছেন আদনান আল রাজীব। সেখানে চৈতীর সঙ্গে দেখা গেছে প্রথম বিজ্ঞাপনের জুটি মডেল শিমুলকেও। টিভিসিটি প্রচারে আসার পর থেকেই আলোচনায় এসেছে এটি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দর্শক চৈতীকে অনেক দিন পর দেখে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন।
দর্শক সাড়া প্রসঙ্গে চৈতী বলেন, ‘এটাই তো কাজের অনুপ্রেরণা। আমি খুব বেশি কাজ কিন্তু করিনি। যে দু-চারটি বিজ্ঞাপনে হাজির হয়েছি সেগুলো দর্শক এখনো মনে রেখেছেন। এটা দেখে সত্যি দারুণ লাগে।’
নতুন করে যেটা ভালো লাগছে সেটা হলো দর্শকের সরাসরি প্রতিক্রিয়া। আমাদের সময় তো সেই সুযোগটা ছিল না। আমরা কাজ করতাম। দর্শক দেখে মনে রাখতেন। কোথাও হঠাৎ দেখা হলে কেউ কেউ অটোগ্রাফ নিতেন। কিন্তু এখন তো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের হাত ধরে যে কোনো কাজের ফিডব্যাকটা সরাসরি দ্রুত পাওয়া যাচ্ছে।
আমার নতুন বিজ্ঞাপনটি ফেসবুকে পোস্ট হওয়া মাত্রই সাড়া পড়ে গেছে। অসংখ্য দর্শক আমার নাম ম্যানশন করে তাদের মনের কথা জানাচ্ছেন। এটা বেশ ভালো লাগছে আমার। বলতে পারেন খানিকটা অনুপ্রাণিতও নতুন করে কাজ করতে।
তাকে নিয়ে অনেক কৌতূহলও প্রকাশ করছেন তারা। জানতে চাই নব্বই দশকের সেই জনপ্রিয় মডেল চৈতী এখন কী করেন? কেন তিনি শোবিজ থেকে দূরে সরে ছিলেন? তারই উত্তর জানালেন চৈতী।
তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘২০০০ সাল থেকেই আমি শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত। প্রায় ১৮ বছর ধানমন্ডির সানিডেল স্কুলে পড়িয়েছি। শিক্ষকতা ও সংসার সামলানোর জন্যই শোবিজ থেকে দূরে সরে থাকতে হয়েছে।
তাছাড়া পছন্দমতো কাজের প্রস্তাবও আর আসেনি। সেজন্য করা হয়নি। দীর্ঘদিন পর বার্জার একটি দারুণ আয়োজনের প্রস্তাব নিয়ে এলো। ২৫ বছর আগের বিজ্ঞাপনের সিক্যুয়েল করেছে তারা। এটা ইউনিক একটা কাজ। বাংলাদেশে প্রথম। সেজন্য এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। ভবিষ্যতেও এমন মানসম্পন্ন ও চমৎকার আয়োজনের কাজ পেলে করবো।’
চৈতী বিয়ে করেছেন। স্বামী ইমরান আসিফের সঙ্গে সুখের দাম্পত্য তার। সেই দাম্পত্য জীবন আলো করে আছে দুই কন্যা। বড় মেয় ‘এ লেভেল’ করছে। ছোট মেয়ে পড়ছে প্রথম শ্রেণিতে। স্বামী-সন্তান নিয়েই চৈতীর এখনকার ব্যস্ত দিনযাপন।
পাশাপাশি করছেন শিক্ষকতাও। আগে ধানমন্ডি থাকলেও বর্তমানে উত্তরার বাসিন্দা চৈতী। সেখানকারই সানবীমস স্কুলে পড়ান তিনি।
এলএ/এমকেএইচ