আমাকে খুঁজে বের করেছিলেন সালমান শাহ : কুমার বিশ্বজিৎ
কিছুক্ষণের জন্য বেশ স্মৃতিকাতর হয়ে পড়লেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ। ২৫ বছর আগে ফিরে গিয়ে শোনালেন কালজয়ী একটি গানের গল্প। গানটির প্রথম লাইনটি শুনলেই বাকি কথাগুলো মনে পড়ে যাবে অনেকেরই।
‘জ্বালাইয়া প্রেমের বাত্তি, কোথায় তুমি থাকো রে, তুমি দাও না দেখা বন্ধু আমারে....’
নব্বই দশকের মাঝামাঝিতে এই গান ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মুখে মুখে। ভালোবাসার মানুষের দেখা পাওয়ার আকুতি নাড়া দিয়ে ছিলো সব প্রেমিকের হৃদয়ে। এই গান দিয়ে নব্বই দশকের তরুণদের মন জয় করেন চিরসবুজ গায়ক কুমার বিশ্বজিৎ। কুমার বিশ্বজিতের কণ্ঠে ঠোঁট মিলিয়ে ছিলেন অমর নায়ক সালমান শাহ।
প্রয়াত চিত্র পরিচালক জহিরুল হকের ‘তুমি আমার’ সিনেমা গান ছিলো এটি। ছবিটি মুক্তির ২৫ বছর পূর্তি হলো গত ২২ মে। এ উপলক্ষে স্মৃতিচারণে সুপারহিট ছবির সুপারহিট গানের পেছনের গল্প শুনিয়েছেন কুমার বিশ্বজিৎ। বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘সালমান শাহের পরিবারের সবাই আমার খুব ভক্ত। এখনো নিউইয়র্কে, কানাডায় গেলে দেখা হয় সালমান শাহের বেশ ক’জন আত্মীয় স্বজনের সাথে। সালমান শাহ নিজেও আমার গান খুব পছন্দ করতেন।
তখন সালমান খুব জনপ্রিয়। আমারও অনেক গান সুপারহিট হয়েছে। হঠাৎ একদিন আমার রেকর্ডিংয়ে আসলেন। আমার গান গাওয়ার স্টাইল দেখলেন। কিভাবে আমি থ্রো করি। কিভাবে আমি ইমোশন দেই।
এগুলো দেখার জন্য স্টুডিতে পরে আরও বেশ কয়েকবার এসেছিলেন। সেই সূত্রেই কয়েকবার তার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে।’
এই শিল্পীকে নিয়ে অনেক আগ্রহ ছিলো সালমানের। সেই কথা জানিয়ে কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, ‘পরিচয়ের বেশ আগে থেকেই নাকি আমার সঙ্গে দেখা করতে আগ্রহী ছিলেন সালমান শাহ। প্রিন্স মাহমুদের খুব কাছের বন্ধু ছিলেন। তার মৃত্যুর পর আমাকে প্রিন্স মাহমুদই বলে যে, আমার ব্যাপারে তার কাছে জানতে চাইতেন সালমান। আমার সঙ্গে তার আলাপের আগ্রহের কথা নাকি প্রিন্সকে বলেও ছিলেন। নিজেই আমাকেত খুঁজে বের করেছিলেন।’
‘জ্বালাইয়া প্রেমের বাত্তি’ গান প্রসঙ্গে শিল্পী বলেন, ‘গানটা যেহেতু অফট্র্যাকের ছিলো। আধুনিক ফোক বলা যেতে পারে এটাকে। এই গান আমি কেমন গাইবো, সেটা বোঝার জন্য সালমানের স্টুডিওতে আসা। মনে পড়ে, গানটার সুর সংগীতায়োজন করেছিলেন আবু তাহের ভাই, লিখেছিলেন মনিরুজ্জামান।
তাহের ভাই ও মনিরুজ্জামান নেই মারা গেছেন। গানটি নিয়ে আমরা বসেছিলাম মোহাম্মদপুরে তাহের ভাইয়ের বাসায়। তার বাসার পাশেই বুড়িগঙ্গা নদী ছিলো। খুব ভালো ভাবে মনে আছে আমারে, তাহের ভাই বললো চল নৌকা বাই। সম্ভত রোজারই সময় ছিলো তখন। আমরা নৌকাতে ইফতার করেছিলাম।
ওই দিন রাত ১০টা পর্যন্ত গবেষণা করে গানটা তৈরি করা হয়। এরপর রেকর্ডিং হয়ে গেল। গান প্রকাশের পরে সবাই পছন্দ করলো। ভাবতেই অবাক লাগছে গানটি গাওয়ার ২৫ বছর পার হয়ে গেছে। সময় আসলে কত দ্রুত চলে যায়।
এত বছর আগেও গাওয়া একটা গান এখনো মানুষের ভালো লাগে, এখনো মানুষ শুনছে। একজন শিল্পীর জন্য এটা অনেক ভালো লাগার ব্যাপার। আমার ভীষণ ভালো লাগছে। আর গানটির রজত জয়ন্তী মনে করিয়ে দেয়ার জন্য আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।’
এলএ/এমকেএইচ