ঈদে অনিশ্চিত শাকিব-ববির নোলক
সেন্সর ছাড়পত্র পাওয়ার পরও শাকিব-ববি জুটির ‘নোলক’ ছবিটি নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি। ঈদে বেশ বড় পরিসরে ছবিটি মুক্তির কথা থাকলেও এখনো অনিশ্চিত বিষয়টি। কোর্টের রায়ের উপরই নির্ভর করছে ঈদে ‘নোলক’ ছবির মুক্তি পাওয়া না পাওয়া।
‘নোলক’ সিনেমা নিয়ে প্রযোজক ও পরিচালের দ্বন্দ্বের কথা সবার জানা। শুরুতে ছবিটি পরিচালনা করেছেন রাশেদ রাহা। প্রযোজক ছিলেন সাকিব সনেট। ছবিটি সম্প্রতি সেন্সর হয়েছে এখানে দেখা যাচ্ছে পরিচালক এর স্থানে সাকিব সনেটের নাম।
সনেটের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ‘নোলক’ ছবির পরিচালক হিসেবে নিজের নাম ফিরে পেতে, সিভিল কোর্টে ও ক্রিমিনাল কোর্টে দুটি মামলা করেছেন রাশেদ রাহা। আগামী মঙ্গলবার কোর্ট মামলার রায় দিবে। সমস্যা না মেটার আগে ছবি মুক্তির নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে!
এক বছর ধরে ‘নোলক’ সিনেমার পরিচালক পরিবর্তন নিয়ে জটিলতা চলছে। চলচ্চিত্রের সংগঠনগুলো দফায় দফায় মিটিং করলেও এর সমাধান হয়নি। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়।
বিষয়টি নিয়ে রাশেদ রাহা জাগো নিউজকে বলেন, ‘মঙ্গলবার কোর্টের রায়ের অপেক্ষায় আছি। ওই দিনই জানা যাবে সব। আমি বিশ্বাস করি সত্যের জয় হবেই। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতিও আমার সঙ্গে আছে। একজন পরিচালকের কাছ থেকে অন্যায় করে কেউ ছবি কেড়ে নিতে পারবে না।’
এ বিষয়ে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সাংগঠনিক সচিব অপূর্ব রানা জাগো নিউজকে বলেন, ‘পরিচালক সমিতি তার সদস্যের সঠিক স্বার্থ রক্ষার জন্য সবসময়ই কাজ করে আসছে। সবাই জানে এই ছবির পরিচালক রাশেদ রাহাই ছিলো। ছবির ৮৫ ভাগ শুটিং শেষ করার পরে প্রযোজকের সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে তার। এরপরে পরিচালক সমিতিতে বিচার সালিশ হয়েছে। প্রযোজক সাকিব সনেট বিচার মানেননি।
পরে প্রযোজক সমিতির কাছে বিচার গেছে এ নিয়ে। প্রযোজক সমিতি ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটা কমিটিও গঠন করে। সেই কমিটির সঙ্গে পরিচালক সমিতির কেবিনেট মিটিং হয়। এখানে সিদ্ধান্ত হয়, যেহেতু ছবির কিছু অংশের কাজ অন্যজন করেছেন সেহেতু যৌথ পরিচালক হিসেবে দুই জনের নামে ছবিটি মুক্তি পাক।
কিন্তু ছবিটি সেন্সরে নিজের নামে জমা দিয়েছে সাকিব সনেট। শবে বরাতের পরের দিন, সরকারি ছুটির দিন সেন্সর করা হয়েছে ছবিটি। অথচ আগেই পরিচালক সমিতির পক্ষ থেকে সেন্সর বোর্ডকে অবগত করা হয় যে ছবিটি নিয়ে ঝামেলা রয়েছে। ছবিটিকে যেন প্রদর্শনের অনুমতি না দেয়া হয়। তবুও কেমন করে সেন্সর পেল সেটাই অবাক করেছে।’
সেন্সর পাওয়ার পর এখন তো আর ‘নোলক’ মুক্তিতে কোনো বাঁধা নেই। অপূর্ব রানা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আপাতদৃষ্টিতে না। তবে সেন্সর পাওয়ার পরও ছবির মুক্তি স্থগিত হতে পারে। যেহেতু ‘নোলক’ নিয়ে মামলা চলছে’। আদালতের রায়ের উপর নির্ভর করছে সব কিছু।’
দুই বছর আগে জমকালো আয়োজনে ঢাকার একটি হোটেলে ‘নোলক’ সিনেমার মহরত হয়। সেখানে আয়োজন করে ঘোষণা দেয়া হয় ছবিটি পরিচালনা করবেন রাশেদ রাহা। এরপর টানা ২৮ দিন ভারতের হায়দরাবাদে ‘নোলক’ সিনেমার শুটিং করেন পরিচালক রাশেদ রাহা। শুটিং শেষে ইউনিট নিয়ে দেশে ফেরার পর পরিচালকের সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হয় প্রযোজক সাকিব সনেট। এরই জেরে পরের লট থেকে প্রযোজক তার ছবির পরিচালক রাশেদ রাহাকে ছাড়াই শুটিং শুরু করেন।
রাশেদ রাহা জানান, তাকে বাদ দিয়ে নায়িকা ববির অনুরোধে ছবিটিতে প্রথমে যুক্ত করার পরিকল্পনা হয় ইফতেখার চৌধুরীর নাম। কিন্তু সেটা নিয়ে সমালোচনা উঠায় অবশেষে সাকিব সনেট নিজেই নিজের নাম পরিচালক হিসেবে যুক্ত করে দিয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টাপাল্টি অভিযোগে অনেক সময় পার হয়। ২০১৭ সালের ১ ডিসেম্বর ভারতের হায়দরাবাদে ‘নোলক’ সিনেমার শুটিং শুরু হয়। এতে অভিনয় করেছেন শাকিব খান, ববি, মৌসুমী, ওমর সানী, তারিক আনাম খান, নিমা রহমান, রেবেকা, ভারতের রজতাভ দত্ত, সুপ্রিয় দত্ত, অমিতাভ ভট্টাচার্য প্রমুখ।
এমএবি/এলএ/জেআইএম