সরকারি অনুদানে অনিয়ম, চার সদস্যের পদত্যাগ
ঘোষিত হয়েছে ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে চলচ্চিত্রের জন্য সরকারি অনুদানপ্রাপ্তদের তালিকা। গত ২৪ এপ্রিল তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সেই ঘোষণায় জানানো হয়, এবার একটি শিশুতোষ চলচ্চিত্র, দুটি পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্র এবং ৫টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রকে অনুদান দেয়া হয়েছে।
কিন্তু অনুদান দেওয়ার প্রক্রিয়ায় কিছু গড় মিল হয়েছে বলে উল্লেখ করে পদত্যাগ করেছেন চূড়ান্ত অনুদান কমিটির চার সদস্য, বরেণ্য অভিনেতা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, খ্যাতিমান নির্মাতা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক মোরশেদুল ইসলাম ও ড. মতিন রহমান।
২৮ এপ্রিল তথ্যমন্ত্রী বরাবর লিখিত পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন তারা। চিঠিতে পদত্যাগের বিস্তারিত কারণও জানানো হয়েছে। এক চিঠিতেই স্বাক্ষর করেছেন পদত্যাগ করা চার সদস্য।
চিঠিতে বলা হয়েছে-
৭ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে আপনার (তথ্যমন্ত্রী) সভাপতিত্বে এবং সচিব মহোদয়ের উপস্থিতিতে ২০১৮-১৯ সালের জন্য গঠিত চলচ্চিত্র অনুদান কমিটির সভায় ২টি পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্র ও একটি শিশুতোষসহ ৫টি পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনীচিত্রকে অনুদান দেওয়ার বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়।
কিন্তু আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করলাম যে, অনুদান কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কোনরকম আলোচনা না করে সম্পূর্ণভাবে মন্ত্রণালয়ের একক সিদ্ধান্তে সেই সভার সিদ্ধান্তকে পরিবর্তন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। অনুদান কমিটির সদস্য হিসেবে আমাদের আগেও কাজ করার সুযোগ হয়েছে, কিন্তু এ ধরনের দুঃখজনক অভিজ্ঞতা আর কখনো হয়নি।
এমতাবস্থায় অনুদান কমিটির সদস্য হিসেবে থাকা আমাদের জন্য সম্মানজনক ও যুক্তিযুক্ত মনে না হওয়ায় আমরা চলচ্চিত্র অনুদান কমিটি থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অতএব, এই পত্রটিকে আমাদের পদত্যাগপত্র হিসেবে গণ্য করে তা অবিলম্বে কার্যকর করার জন্য আপনাকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
প্রজ্ঞাপনে অনুদান কমিটির দেওয়া সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের সত্যতা স্বীকার করে মোরশেদুল ইসলাম বলেন, ‘তথ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আমরা যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিয়েছিলাম, প্রজ্ঞাপনে তা মানা হয়নি। প্রাথমিক অনুদান প্রদান কমিটি হঠাৎ করেই নম্বর দিয়ে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় নির্ধারণ করে ২০টি ছবির একটি তালিকা চূড়ান্ত অনুদান কমিটির কাছে পাঠায়। আমরা তা প্রত্যাখ্যান করি এবং আবারও তা প্রাথমিক অনুদান প্রদান কমিটির কাছে পাঠাই। কারণ প্রাথমিক অনুদান প্রদান কমিটির নম্বর দিয়ে স্থান নির্ধারণের এখতিয়ার নেই। কারণ সেটি হলে চূড়ান্ত অনুমোদন কমিটির আর প্রয়োজন নেই। ’
এই বিষয়ে চূড়ান্ত অনুদান কমিটির সদস্য বরেণ্য অভিনেতা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা যা বলার এই চিঠিতে বলেছি। আমরা আলোচনা করেই বুঝেই চারজন পদত্যাগ করেছি। শিগগিরই আমরা সম্মিলিত ভাবেই সংবাদ সম্মেলন করে এই বিষয়ে বিস্তারিত সবার সামনে তুলে ধরা ধরবো।’
এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
এমএবি/এলএ/এমকেএইচ