ছাত্রনেতা থেকে চলচ্চিত্রকার, আলমগীর কুমুকুম এক প্রেরণার নাম
মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলা! বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ এক নাম। তার বুকে জন্ম নেয়া এক সোনার মানুষ আলমগীর কুমকুম। স্বাধীনতার আগে এদেশে যেসব ছাত্রনেতা রাজপথ কাঁপিয়েছেন, দেশের স্বাধীনতার জন্য বুক পেতে নিয়েছেন নিষ্ঠুর শাসকের অমানবিক অন্যায়-অবিচার; তাদের অন্যতম একজন তিনি।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শে ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন এবং ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সত্তরের নির্বাচনেও ছিলেন সক্রিয়। একাত্তরে অস্ত্র হাতে নেমে পড়েছিলেন যুদ্ধেও।
রাজনীতির পাশাপাশি নিজেকে জড়িয়ে নিয়েছিলেন চলচ্চিত্রেও। সেই ১৯৬৮ সাল থেকেই চলচ্চিত্র পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত হন। পরবর্তীতে তার হাত ধরে ঢাকাই সিনেমাতে যুক্ত হয়েছে বহু কালজয়ী ও ব্যবসা সফল সিনেমা।
বাংলাদেশের নন্দিত অভিনেতা আলমগীরের আবিষ্কারক হিসেবেও তার নাম সর্বজন শ্রদ্ধেয়।
গুণী এই চলচ্চিত্রকারের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস ও কিডনির সমস্যায় ভুগে ২০১২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বেলা ১২টা ৪৫ মিনিটে রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।
১৯৪২ সালের ২২ জানুয়ারি মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার সমষপুর গ্রামে জন্মেছিলেন মুক্তিযোদ্ধা, চলচ্চিত্রকার, প্রযোজক, পরিচালক আলমগীর কুমকুম। ১৯৬৮ সালে মামা পরিচালক ইআর খানের ‘চেনা অচেনা’ ছবির সহকারী হিসেবে চলচ্চিত্রে আসেন তিনি।
এরপর ‘রূপবানের রূপকথা’ ও ‘মধুবালা’য় সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৬৯ সালে মুক্তি পায় তার পরিচালিত প্রথম ছবি।
আলমগীর কুমকুমের ছবির তালিকায় উল্লেখযোগ্য ‘স্মৃতিটুকু থাক’, ‘আমার জন্মভূমি’, ‘গুন্ডা’, ‘মমতা’, ‘আগুনের আলো’, ‘কাপুরুষ’, ‘সোনার চেয়ে দামি’, ‘রাজবন্দি’, ‘ভালোবাসা’, ‘রাজার রাজা’, ‘কাবিন’, ‘শমসের’, ‘রকি’, ‘মায়ের দোয়া’, ‘অমর সঙ্গী’, ‘জীবন চাবি’।
রাজনীতির সুন্দর চর্চা তিনি আজীবন করে গেছেন। একজন দক্ষ সংগঠক হিসেবে তিনি সমাদৃত ছিলেন রাজনীতি ও চলচ্চিত্রের আঙিনায়। তার প্রমাণ মিলে যখন আলমগীর কুমকুমের নাম উচ্চারিত হয় বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছিলেন আলমগীর কুমকুম।
এলএ/এমকেএইচ