সালমান শাহ ভক্তদের আমন্ত্রণ জানাই : আরজু
শামীমুল ইসলাম শামীম পরিচালিত কায়েস আরজু ও পরীমনি অভিনীত সিনেমা ‘আমার প্রেম আমার প্রিয়া’ মুক্তি পেয়েছে গেল ৮ ফেব্রুয়ারি। প্রসংশা পাচ্ছে সিনেমাটি। এর আগে ‘ছেলেটি আবোল তাবোল মেয়েটি পাগল পাগল’ নামের একটি সিনেমাতে অভিনয় করেছিলেন আরজু।
সাইফ চন্দন পরিচালিত সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছিল ২০১৫ সালের ৯ অক্টোবর। আরজুর প্রথম সিনেমা মুক্তি পায় ২০০৭। ‘তুমি আছো হৃদয়ে’ নামের চলচ্চিত্রটিতে তার অভিনয় দর্শকদের নজর কাড়ে। এর পর একে একে মুক্তি পায় ‘প্রেম বিষাদ’ (২০০৯), ‘বাজাও বিয়ের বাজনা’ (২০১০), ‘মন তোর জন্য পাগল’ (২০১৩), ‘অবুঝ প্রেম’ (২০১৩) ও ‘হেডমাস্টার’ (২০১৪)।
আরজু তার নতুন সিনেমা ও অন্যান্য বিষয়ে কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে-
জাগো নিউজ : ছবি মুক্তি পাওয়ার আজ চতুর্থ দিন, কেমন সাড়া মিলেছে?
আরজু কায়েস : ছবি যারা দেখেছেন, তাদের মতামত পেয়েছি শতভাগ পজেটিভ। সবাই ছবিটির প্রসংশা করছেন। বিপিএলের ক্রিকেট খেলার কারণে কোনো হল দর্শক পূর্ণ হয়েছে, কোনো কোনো হলে কম দর্শক হয়েছে। সব মিলিয়ে ছবির রিপোর্ট অসম্ভব ভালো।
হল মালিকরাও বলছে দিনে দিনে ছবিটির দর্শক বাড়ছে। ছবি রিলিজের একদিন আগে পোস্টার লাগানো হয়েছে। আমরা সেইভাবে ছবিটির প্রচারণাও করতে পারিনি। যতটুকু প্রচরণা হয়েছে ফেসবুকেই। এরপরও ভালো সাড়া মিলছে।
জাগো নিউজ : আপনি কি হলে গিয়ে সিনেমা দেখেছেন?
আরজু কায়েস : হ্যাঁ। মধুমিতা ও বলাকা সিনেমা হলে দর্শক সারিতে বসে সিনেমা দেখেছি। আমাদের সিনেমার টিম ঘুরেছে অনেকগুলো হলে। তারা চম্পাকলি ও সৈনিক ক্লাবসহ বেশ কিছু হলে গেছে। সবখানে রেসপন্স ভালো।
জাগো নিউজ : দর্শক সারিতে বসে সিনেমা দেখার সময় দর্শকের কেমন প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করেছেন?
আরজু কায়েস : সিনেমার প্রথম দৃশ্য থেকে শুরু করে শেষ দৃশ্য পুরোটাই উপভোগ করছেন দর্শক। অনেক কমেডি দৃশ্য দেখে দর্শক যেমন হাসছেন। আবার ছবিটা উপভোগ করে ট্রাজেডি দৃশ্যগুলো কাঁদছেন। এটা খুব ভালো লেগেছে। একজন দর্শকও উঠে যায়নি। শুক্রবারে বিপিএল খেলার কারণে দর্শক কম ছিল। শনিবার থেকেই দর্শক বেড়েছে।
আমি সালমান শাহকে দেখে নায়ক হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি। তাই রোমান্টিক ছবি করতেই বেশি আগ্রহী আমি। ‘আমার প্রেম আমার প্রিয়া’ ছবিতে প্রিয় নায়ক সালমান শাহের একটি গানও রিমেক করা হয়েছে আমার আগ্রহে। যারা সালমান শাহের ভক্ত, তার ছবিগুলো মিস করেন তাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি ছবিটি দেখার জন্য।
জাগো নিউজ : একটা ছবির সাফল্য প্রচরণার উপর কতোটা নির্ভর করে?
আরজু কায়েস : আমি মনে করি প্রচারেই প্রসার। বাংলা ছবির এমনিতেই এখন খারাপ অবস্থা । সেখানে প্রচারণা শতভাগ দরকার। প্রচারণা ছাড়া সম্ভবই নয় সফলতা।
জাগো নিউজ : আপনাকে প্রচারণায় দেখা গেলেও নায়িকা পরীমনি তেমন দেখা যায়নি?
কায়েস আরজু : এ বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না। তবে একটা ছবি মুক্তি পেলে সেই সিনেমার সম্পৃক্ত সকলেরই প্রচারণায় থাকা উচিৎ। শুধু নায়ক নায়িকা নন, সিনেমার আরও অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র থাকে তাদেরও নিজের ছবির প্রচারণায় থাকা উচিৎ।
জাগো নিউজ : এই সিনেমায় নিজের অভিনয় নিয়ে আপনি কতটুক সস্তুষ্ট?
কায়েস আরজু : আমি অনেক খুশি কারণ, দর্শক আমার অভিনয় পছন্দ করেছেন। এই ছবির রেজাল্ট দেখার অপেক্ষায় গত দুই বছর আমি কোনো ছবিতে অভিনয় করিনি। মানিক চরিত্রে আমি অভিনয় করেছি। সামনা সামনি দর্শকের রেসপন্স দেখেছি। অনেকেই ফোন করেও প্রসংশা করেছেন।
জাগো নিউজ : পরিচালক ও নায়িকা পরীমনি, উভয়ের সঙ্গেই এটা প্রথম ছবি ছিল আপনার, কেমন ছিল শুটিংয়ের দিনগুলো?
কায়েস আরজু : ছবিটি করতে গিয়ে, পরিচালক শামীম ভাই ও নায়িকা পরীমনি সবার সঙ্গে ভালো একটা সম্পর্ক হয়ে গিয়েছিল। আমরা অনেক আনন্দে শুটিং করেছি। ভালো একটা টিম ওয়ার্কের ফসল আমাদের এই সিনেমা। ছবির অসাধারণ গল্পের সঙ্গে আমার জার্নিটা অনেক ভালো ছিল।
জাগো নিউজ : নতুন কোনো ছবিতে কী যুক্ত হয়েছেন?
কায়েস আরজু : মার্চ মাসে শফিক হাসানের পরিচালনায় নতুন একটি ছবির শুটিং শুরু করবো। এই ছবিটির রচনা ও চিত্রনাট্য তৈরি করেছেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। আরো দুটি নতুন ছবির ব্যাপারে কথা চলছে। এই ছবি মুক্তি পরেও অনেক নির্মাতা আমাকে উইশ করেছেন।
জাগো নিউজ : সিনেমাতে অনেক দিনই তো হলো। আপনার স্বপ্ন কতটুকু পূর্ণ হয়েছে?
কায়েস আরজু : আমার স্বপ্নের নায়ক ছিলেন সালমান শাহ। যার ছবি দেখে অনুপ্রেরণা পেয়ে আমি সিনেমায় এসেছিলাম। সেই স্বপ্ন নিয়ে যখন সিনেমায় আসলাম তখন ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা ভালো ছিল না। ২০০৮ সালে। তখন থেকেই সিনেমা হলের সংখ্যা কমতে শুরু করেছিল।
আমি খুব বেশি ছবিও করিনি। এখনো স্বপ্ন দেখছি ভালো ছবি আসবে, ভালো ছবি করবো। দেখা যাক।
জাগো নিউজ : সিনেমার সংখ্যা আপনার কম। কেন?
কায়েস আরজু : আমি কখনোই ছবির সংখ্যা নিয়ে ভাবিনি, আমি কোয়ালিটিতে বিশ্বাসী। তাছাড়া কয়েকটা ছবির শুটিং শুরু করেও পরে সেই ছবি ছেড়ে দিয়েছি। কথায় কাজে সেইসব ছবির মানুষদের মিল খুঁজে পাইনি বলে।
আবার সব ছবিই যে খুব ভালো করেছি তা নয়। তবে ভালো কাজের সঙ্গে থাকর চেষ্টা করেছি। আমার সময়ের পরে, বা সমসাময়িক নায়ক যারা আছেন তাদের অনেকেই অনেক ছবি করেছেন বাট প্রত্যেকেরই একই রকম।
সব নায়কই প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছে। শুধু নায়কেরা নয়, আসলে সবাই লেগে আছে একদিন ইন্ডাস্ট্রি ঘুরে দাঁড়াবে বলে। এক সময় সিনেমা হল বাড়বে। ভালো ভালো সিনেমা নির্মাণ হবে।
আশার কথা হলো নতুন বছরটা বেশ ভালো কিছু দিয়েই শুরু হলো। সিনেপ্লেক্স বাড়ছে, ইটিকিটিং ব্যবস্থা হচ্ছে। এই বছরের মধ্যে যদি এগুলো হয়, তাহলে সিনেমার দিন ঠিকই ফিরবে।
জাগো নিউজ : সিনেমার সাফল্যের জন্য হল সংকটই মূল সমস্যা বলে মনে করেন?
কায়েস আরজু : না। সিনেমার অনেক সিস্টেমেই সমস্যা আছে। শুধু হল ভালো হলেই হবে না। সারাদেশেই সিনেমার সিস্টেম ফেল করেছে। নট সিনেমা হল। গল্প, গান, মেকিং, বিজনেস পলিসি, ডিস্ট্রিবিউশন, প্রচার-প্রচারণা, প্রযোজকের অভাব সব মিলিয়েই সমস্যা।
তবে আমি মনে করি, এই সমস্য থাকবে না। শিগগিরই বড় ধরনের একটা পরিবর্তন আসবে আমাদের সিনেমায়।
এমএবি/এলএ/এমএস