‘ইন্ডাস্ট্রিকে এগিয়ে নিতে না পারলে সিনেমা বানিয়ে কী লাভ’
সিরিয়াস ধারার ও মননশীল নাট্যনির্মাতা আবু হায়াত মাহমুদ। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে নাটক নির্মাণে জড়িত আছেন। তার নাটক সব ধরণের দর্শক উপভোগ করেন। তিনি যাপিত জীবনের পটভূমি তুলে আনেন নাটকের ক্যানভাসে।
একজন দর্শক তার নাটকের নির্মাণশৈলী, সংলাপ, রুচিশীল সেট, ফ্রেম, কালারগ্রেডিং, সাউণ্ড, এমনকি নামলিপির ডিজাইন দেখেই বলে দিতে পারে এটা-নাট্যনির্মাতা আবু হায়াত মাহমুদ’র নাটক। এটাই তার স্বকীয়তা, স্বাতন্ত্র সৃষ্টিশীলতার সাফল্য।
‘অভিনেতা’, ‘রুমাল’ ‘রেড এলার্ট’, ‘আঁধারের ঋন’, ‘ছায়া বৃত্তে শেষের কবিতা’,‘হঠাৎ দেখা’,‘ভাঙ্গন’, ‘বৃত্ত’, ‘মিছিলের মুখ’,‘স্বর্ণমানব’র মতো সব জনপ্রিয় নাটক উপহার দিয়েছে এই নাট্যনির্মাতা। আজ তার জন্মদিন। জীবনের বিশেষ দিনটিতে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। এই আলাপনের সঙ্গে ছিলেন কবি ও নাট্যকার মিজানুর রহমান বেলাল-
জাগো নিউজ : আপনার শৈশবের কথা জানতে চাই....
আ হা মাহমুদ : বেড়ে ওঠা কুমিল্লায়। ইবনে তাইমিয়া স্কুল, কলেজ ভিক্টোরিয়া। ছোটবেলা থেকেই সাংস্কৃতিক চর্চার মধ্যে ছিলাম। সব সময় একটু ভিন্ন কিছু করার, ভাবার চেষ্টা ছিল।
জাগো নিউজ : নাট্যনির্মাতা হবার ইচ্ছেটা কীভাবে এলো?
আ হা মাহমুদ : ১৯৯৬ থেকেই থিয়েটার চর্চার সাথে যুক্ত ছিলাম। ২০০৬ সালে ঢাকার অন্যতম থিয়েটার দল প্রাঙ্গনেমোর’র সাথে যুক্ত হই। থিয়েটার করতে করতেই একসময় নির্দেশনার ভুত চেপে বসে। আর মন যে বিষয়ে সায় দেয় সেটা করার চেষ্টা করি আমি।
জাগো নিউজ : আপনার অনেক নাটক দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে এবং প্রসংশিত হয়েছে। প্রতিক্রিয়ার এ দুটির মধ্যে কোনটা গুরুত্ব দেন আপনি?
আ হা মাহমুদ : দুটোই গুরত্বপূর্ণ। তবে ভালো ও মানসম্মত নাটক দর্শকপ্রিয়তা পাওয়াটা জরুরি। যা খুশি তা করলেই হবে না। যুগের সাথে গা ভাসাতে গিয়ে স্বস্তা উৎপাদন করলে চলবে না। মনে রাখতে হবে দর্শক রুচি তৈরি করাটাও আমাদের দায়িত্ব।
আপনার তৈরি করা ট্রেন্ডের উপরই আপনার ভবিষ্যত প্রজন্ম বেড়ে উঠবে। আপনার সন্তান বেড়ে উঠবে। সুতরাং যে অখাদ্য আজ আপনি বানাবেন, আপনার সন্তানই হয়তো সে অস্বাস্থ্যকর সংস্কৃতিকে বুকে নিয়ে মানুষ হবে। সহজ করে বললে আপনার সন্তানই ক্ষতিগ্রস্ত হবে আপনার তৈরি মন্দ সংস্কৃতি দ্বারা। তাই ভালো কাজের দায়বোধটা থাকতে হয় নিজের মধ্যে।
জাগো নিউজ : আপনার পছন্দের কয়েকটি নাটকের নাম বলুন; যা আপনাকে আত্মতৃপ্তি দিয়েছে?
আ হা মাহমুদ : অভিনেতা, রেড এলার্ট, আঁধারের ঋন, ছায়া বৃত্তে শেষের কবিতা, হঠাৎ দেখা, ভাঙ্গন, বৃত্ত, মিছিলের মুখ, স্বর্ণমানব, রুমাল...... এই নাটকগুলো আমাকে নির্মাণের জায়তা কিছুটা হলেও তৃপ্তি দিতে পেরেছে।
জাগো নিউজ : আজকাল ছোটপর্দার অনেক নির্মাতাই সিনেমা নির্মাণে ঝুঁকছেন। কেউ কেউ সাফল্যও পাচ্ছেন। আপনার কোনো পরিকল্পনা আছে কী?
আ হা মাহমুদ : সব নির্মাতাই বড় ক্যানভাসে গল্প বলার ইচ্ছে রাখেন। আমারও আছে। সবকিছু ব্যাটেবলে মিলে গেলে আমিও ঘোষণা দেব। তবে দায়সারাভাবে কিছু করার ইচ্ছে নেই।
আমি সিনেমা না করলে কোনো অসুবিধা নেই। তবে করলে সেটা নতুনত্ব নিয়ে করব। ইন্ডাস্ট্রিকে এগিয়ে নিতে না পারলে সিনেমা বানিয়ে কী লাভ? তাই ভালো কিছুর প্রত্যাশা তৈরি হলে তবেই সিনেমায় আসবো।
এলএ/জেআইএম