আইয়ুব বাচ্চুর স্মরণে আবেগপ্রবণ এস আই টুটুল
জনপ্রিয় গায়ক ও সংগীত পরিচালক এস আই টুটুলের শুরুটা ছিলো এলআরবি ব্যান্ডের সাথেই। প্রয়াত ব্যান্ড লিজেন্ড আইয়ুব বাচ্চুর গড়া দলটির কী বোর্ড বাজানোর পাশাপাশি ব্যাকআপ ভোকাল হিসেবেও যুক্ত ছিলেন টুটুল।
হঠাৎ করেই ২০০৩ সালের দিকে এলআরবি ছেড়ে দেন তিনি। নিজে গড়ে তুলেন ফেস টু ফেস নামে আলাদা ব্যান্ড। ক্যারিয়ার গড়েন এককভাবে। সে থেকেই আইয়ুব বাচ্চুর সঙ্গে টুটুলের দূরত্ব বাড়ার অনেক গল্প ছড়িয়েছে এ দেশের সংগীতাঙ্গণে।
তবে মৃত্যু সব দূরত্ব ঘুচিয়ে দেয়। মুছিয়ে দেয় সব অভিমান, সম্পর্কের যাতনা। তারই নতুন প্রমাণ মিললো রোববার সন্ধ্যায় আইয়ুব বাচ্চুর স্টুডিও এবি কিচেনে। পরিবারের আয়োজনে আইয়ুব বাচ্চুর স্মরণে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছিলো। সেখানে বাচ্চুর স্ত্রী-সন্তানের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন সংগীতাঙ্গনের অনেক তারকা, সাংবাদিক ও আইয়ুব বাচ্চুর কাছের মানুষজন। এসেছিলেন এস আই টুটুলও।
প্রায় ১৫ বছর পর এবি কিচেনে পা রাখলেন টুটুল। পুরোনো স্টুডিও, পুরনো সব কাছের মানুষদের পেয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন এই গায়ক। আইয়ুব বাচ্চুর স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার সময়ও আবেগে আক্রান্ত ছিলেন। আর আইয়ুব বাচ্চুকে নিয়ে বলতে গিয়ে ভিজে এলো তার চোখের পাতা, ভারী হয়ে এলো কণ্ঠও।
এস আই টুটুল বলছিলেন, পেশাদারীত্বের প্রয়োজনে আইয়ুব বাচ্চুর সঙ্গে একটা দূরত্ব ছিল তার। তবে মনের দূরত্ব কোনোদিন হয়নি। অনেক অভিমান বুকে চেপে রেখেছিলেন তিনি নিজের গুরুর জন্য। টুটুল বলেন, 'আমার একজন জন্মদাতা বাবা আছেন যিনি আমাকে এই পৃথিবীতে এনেছেন। কিন্ত আমার আরেকজন বাবা ছিলেন আইয়ুব বাচ্চু যিনি আমাকে মিউজিকের জগতে জন্ম দিয়েছেন। তার ছায়া না পেলে, তার আশ্রয়-স্নেহ না পেলে আমি কোনোদিন আজকের টুটুল হতাম না। বাচ্চু ভাইয়ের কাছ থেকে দূরে গিয়েও আমি তার ছায়া কাটাতে পারিনি। লোকে আমাকে এলআরবি'র টুটুল বলেই চিনে এসেছে সবসময়।'
এস আই টুটুল আরও বলেন, 'বাচ্চু ভাই আমার গুরু। তার মতো গান পাগল, গিটার পাগল মানুষ আমি খুব কম দেখেছি। অনেক ইমোশনাল একজন মানুষ ছিলেন। এই ইমোশন তাকে অনেক কষ্ট দিয়েছে, তার কাছের মানুষ হিসেবে আমরাও অনেকে অনেক কষ্ট পেয়েছি। কিন্তু সেসবই কেবল মিছে অভিমান। আমি দোয়া করি, আল্লাহ বাচ্চু ভাইকে যেন বেহেস্ত দান করেন। তার মৃত্যুর পর বোঝা যাচ্ছে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির কত বড় জায়গাজুড়ে তিনি ছিলেন।'
মিলাদ মাহফিলে আইয়ুব বাচ্চুর বিদেহী আত্মার জন্য দোয়া করা হয়।
প্রসঙ্গত, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেল ১৮ অক্টোবর সকালে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান আইয়ুব বাচ্চু। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে শোবিজে।
এলএ/এমবিআর