দরজার ওপাশে...
এখন অনেক রাত/ খোলা আকাশের নিচে/ জীবনের অনেক আয়োজন/ আমায় ডেকেছে/ তাই আমি বসে আছি/ দরজার ওপাশে/ দরজার ওপাশে...
মানুষকে তার জীবনে সত্যের মুখোমুখি হতেই হয়। সত্যের মুখোমুখি হওয়ার কোনো বিকল্প নেই জীবনে। তারপরও সব সত্য সহ্য করার মতো ক্ষমতা মানুষের থাকে না।
বৃহস্পতিবার সকালটা বাংলাদেশের জন্য এমনই একটা সকাল হয়ে এলো। হেমন্তের আকাশ যখন শীতের আগমনী বার্তা দিয়ে যাচ্ছে, তখনই এলো বিদায় বার্তা। যার গান শুনে, গিটারের টানে এখনকার বহু যুবকের কৈশোর কেটেছে সেই আইয়ুব বাচ্চু আর নেই। তিনি চলে গেলেন দরজার ওপাশে..
ওপাশ থেকে আর কখনো ফেরা যায় না। ওপাশে যে চলে যায় তাকে ডেকে আর ফেরানোও যায় না। এ এক অসম্ভব দূরত্ব,যে দূরত্ব কখনও ঘুচবে না। যে দূরত্বে জীবনের আর কোনো আয়োজন তাকে স্পর্শ করবে না।
কিন্তু কিসের এত তাড়া ছিল আইয়ুব বাচ্চুর? কোনো অভিমান ছিল? ওপাশে যাওয়ার জন্য বড্ড জলদি হয়ে গেল না কি?
একজন আইয়ুব বাচ্চুর জন্ম প্রতি দশকে হয় না। প্রতি শতাব্দীতেও একজন আইয়ুব বাচ্চু পাওয়া যাবে তাও নিশ্চিত করে বলে যায় না।
সঙ্গীতজগতকে আইয়ুব বাচ্চু যা দিয়ে গেছেন তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা সম্ভব নয়। শ্রোতাদের তিনি যেমন দিয়ে গেছেন অনবদ্য সব গান, তেমনি নিজের হাতে তৈরি করে গেছেন অসংখ্য গিটারিস্ট।
আইয়ুব বাচ্চুকে বাংলাদেশের ব্যান্ড ও গিটারের জগতে নক্ষত্র বলে অভিহিত করা হয়। বাচ্চু কেবল তার গলা দিয়েই মুগ্ধতা ছড়াননি, সমান্তরালে তিনি বাজিয়ে গেছেন গিটার। আইয়ুব বাচ্চু আর গিটার যেন একে অপরের পরিপূরক, প্রতিশব্দ। বাচ্চুকে বাদ দিয়ে গিটার, গিটার বাদ দিয়ে বাচ্চুর অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না, যাবে না।
এনএফ/আরআইপি