মেঘকন্যার বদলে শাকিবের পুরনো ছবি চাইছেন হল মালিকরা
বেশ কয়েকবার মুক্তির তারিখ পিছিয়েছে ‘মেঘকন্যা’ ছবিটির। অবশেষে আগামী ১২ অক্টোবর ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে যাবার তারিখ নির্ধারিত হয়েছে। সে তারিখটিও অবশ্য নিশ্চিত হয়নি এখনো। আসছে সপ্তাহে মুক্তির জন্য বেশ কঠিন লড়াই করতে হচ্ছে ‘মেঘকন্যা’কে।
নায়ক ফেরদৌস অভিনীত ছবিটির প্রতিদ্বন্দ্বী সাইমনের ‘মাতাল’ ও বাপ্পীর ‘নায়ক’ ও ‘আসমানী’। এই তিনটি ছবিও ১২ অক্টোবর মুক্তির জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত কোন দুটি ছবি মুক্তি পাবে সেটি এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
এর মধ্যেই চলছে চারটি ছবির প্রচারণা। সেই প্রচারণায় পিছিয়ে ভিন্নধর্মী গল্পের দুই ছবি ‘মেঘকন্যা’ ও ‘আসমানী’। এদিকে গতকাল মঙ্গলবার কাকরাইল পাড়ায় ঘুরে জানা গেল ‘মেঘকন্যা’ ছবিটি নিয়ে কোনো উচ্ছ্বাস নেই হল বুকিং এজেন্টদের মধ্যে। তাদের ভাষ্য, ছবিটি হলে চালাতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না হল মালিকরা। মুক্তির আর মাত্র একটা দিন বাকী থাকলেও এখনো একটি হলও বুকিং দেয়নি ‘মেঘকন্যা’। অন্যদিকে মুক্তি নিয়ে সংশয় থাকলেও বেশ কিছু হলে বুকিং পেয়েছে ‘মাতাল’ ও ‘নায়ক’।
প্রথমে শোনা গিয়েছিলো ১২ অক্টোবর সাইমন ও বাপ্পীর দুটি ছবি মুক্তি পাবে। হল মালিকরা সাধারণত শাকিব খানের ছবির বাইরে খুব একটা আগ্রহ দেখান না। তবে শাকিবের বিকল্প হিসেবে সাইমন-বাপ্পীদের ছবি তারা নেন। সর্বশেষ সাইমনের ‘জান্নাত’ ছবিটির রেসপন্স ভালো। তাই আসছে সপ্তাহে ‘মাতাল’ নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। কিন্তু এখন শোনা যাচ্ছে ‘মাতাল’র মুক্তি নিয়ে জটিলতা রয়েছে। সেইসঙ্গে বাপ্পীর ‘নায়ক’ ছবিটিও সরে যেতে পারে মুক্তির তালিকা থেকে। তাই হল মালিকরা পুরনো ছবি চাইছেন। তারা ‘মেঘকন্যা’ মুক্তির আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।
হল মালিকদের দাবি, মন্দার বাজারে এখনো শাকিব খান দর্শক টানতে পারেন। তার পরে গুটি কয়েকজন নায়ক-নায়িকা ছাড়া আর কারোরই উল্লেখ করার মতো দর্শক নেই। সাইমন-বাপ্পী ও আরিফিন শুভ’র ছবি আসলে কিছু দর্শক তবু পাওয়া যায়। এই তিন নায়কের কোনো ছবি থাকছে না বলে নতুন সপ্তাহে পুরনো ছবিতেই ভরসা রাখছেন তারা।
চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি সূত্রে জানা গেল, গেল সপ্তাহে শাকিব খানের ‘নাকাব’ হতাশ করেছে হল মালিকদের। শাকিবের ছবি দিয়েই সেই হতাশা কাটাতে চাইছেন তারা। দেশের বেশ কিছু হল থেকে নতুন করে শাকিব খানের ‘ভাইজান এলো রে’ ছবিটি চাওয়া হচ্ছে নতুন সপ্তাহের জন্য। পাশাপাশি কিছু হলে ‘চালবাজ’, ‘পোড়ামন ২’ ছবিও মুক্তি পেতে পারে।
দীর্ঘদিন ধরে সিনেমায় অনিয়মিত ফেরদৌস ‘মেঘকন্যা’ ছবিটি দিয়ে ফিরলেও এর ট্রেলার ও গান আলোচনায় আসেনি। ছবিটিতে চমক বা প্রচারেরও ঘাটতি আছে। তাই এই ছবি মুক্তি দিয়ে ঝুঁকি নেয়ার সাহস দেখাতে পারছেন না নেত্রকোণায় অবস্থিত ‘হীরামন’ সিনেমা হলের মালিক। শোনা যাচ্ছে, রাজধানীর জনপ্রিয় সিনেমা হল ‘মধুমিতা’-তেও মুক্তি পেতে পারে শাকিবের ‘ভাইজান এলো রে’ ছবিটি।
এদিকে ‘মেঘকন্যা’ ছবির প্রযোজক জয়া মিডিয়া প্রোডাকশনের কর্ণধার এ জেড এম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমরা ‘মেঘকন্যা’ মুক্তি দেয়ার সব প্রস্তুতিই নিয়েছি। কিছু ষড়যন্ত্র হচ্ছে ছবিটি আটকে দিতে। কিন্তু আমি সব নিয়ম মেনেই এগিয়ে যাবো। অযৌক্তিক কোনো কিছু ‘মেঘকন্যা’-কে আটকাতে পারবে না। আমি ১২ তারিখে ছবি মুক্তির বিষয়ে প্রযোজক সমিতি থেকে নিবন্ধনপত্র নিয়েছি। ছবিও মুক্তি পাবে ইনশাল্লাহ।’
অপ্রত্যাশিতভাবে হঠাৎ করে ১২ অক্টোবর ছবি মুক্তির ঘোষণা দেয়ায় ‘মাতাল’ ও ‘নায়ক’ ছবির প্রযোজকদের বিরুদ্ধে ‘মেঘকন্যা’র প্রযোজক মামলা করেছেন বলে শোনা যাচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে এ জেড জাহাঙ্গীর বলেন, ‘এই বিষয়ে আমি এখন কিছু বলতে চাই না। আমি সমঝোতা চাই। সুন্দর একটি ছবি বানিয়েছি। আমার বিশ্বাস এটি দর্শক পছন্দ করবেন।’
মিনহাজ অভি পরিচালিত ‘মেঘকন্যা’ ছবির মূল ভূমিকায় অভিনয় করেছেন নায়ক ফেরদৌস ও নায়িকা নিঝুম রুবিনা। এতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন একসময়ের জনপ্রিয় নায়িকা সুচরিতা, শম্পা হাসনাইন, ঋদ্ধ প্রমুখ।
এলএ/জেআইএম