পথ চলাটা খুব সহজ ছিল না : ইমরান
গানের জগতে বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় ইমরান মাহমুদুল। যিনি একাধারে সংগীতশিল্পী ও সংগীত পরিচালক। বেশ কিছু গান দিয়ে জয় করে নিয়েছেন দর্শক হৃদয়। একের পর এক জনপ্রিয় গান উপহার দিয়ে যাচ্ছেন। গানের বাজার এবং বাণিজ্যের জনপ্রিয়তায় রয়েছেন শীর্ষসারিতে।
আজ ইমরানের জন্মদিন। ১৯৮৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর এই তরুণ কন্ঠশিল্পী জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৮ সালে চ্যানেল আই সেরা কন্ঠ প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার্স আপ হয়েছিলেন ইমরান। এরপর থেকেই শুরু হয়েছিলো সংগীত জগতে নতুন করে পথ চলা। এরমধ্যে দশটি বছর পার করেছেন এই ইন্ডাস্ট্রিতে। জন্মদিনে জাগো নিউজের সঙ্গে ইমরান শেয়ার করেছেন তার জীবনের নানা গল্প। লিখেছেন ইমরুল নূর-
দীর্ঘ এ দশ বছরের পথ চলা নিয়ে ইমরান বলেন, ‘এ পথ চলাটা আমার জন্য সহজ ছিলো না। ২০০৮-থেকে ২০১৮ আজ এ পর্যন্ত আমি যা হয়েছি তা আমার কষ্টের অর্জন,আমার বাবা-মায়ের দোয়া আর শ্রোতাদর্শকদের ভালোবাসা। এই দশটা বছর অনেক স্ট্রাগল করেছি আমি। অনেক ভালো মন্দ মানুষের সাথে মিশেছি, অনেক কিছু শিখেছি। যার কারণে আমি অনেক কিছু পেয়েছি আবার হারিয়েছিও।
নতুন হিসেবে শুরুর দিকে অনেক কিছুই ফেইস করতে হয়েছে। আশানুরূপ অনেক কিছুই হয় নি। একটু একটু করে তিলে তিলে গড়ে আজকের এই অবস্হানে এসেছি। প্রথম দিকে অনেক জায়গায় ঘুরেছি নিজের একটা গানের জন্য কিন্তু করতে পারছিলাম না। তখন অ্যালবামের প্রচলন ছিলো তাই নতুন একটা শিল্পীর উপর ভরসা করে কেউ গান করাতে চাই তো না। এভাবে অনেকটা সময় চলে যায়। এরপর নিজের প্রথম অ্যালবাম বের হয়েছিলো ২০১১ সালে ‘স্বপ্নলোক’ শিরোনামে। এরপর নিজেই সংগীত পরিচালনা শুরু করি।’
এখন পর্যন্ত তিনটি একক ও একাধিক মিক্সড অ্যালবাম করেছেন ইমরান। এর পাশাপাশি করেছেন প্লে-ব্যাকও। সব অঙ্গনেই রেখেছেন নিজের কৃতিত্বের স্বাক্ষর। প্রথম অ্যালবামের পর প্রকাশ করেছেন তার দ্বিতীয় ও তৃতীয় একক 'তুমি' ও 'বলতে বলতে চলতে'। এরপর একে একে নতুন গান দিয়ে শ্রোতাদের কাছে জনপ্রিয় হতে শুরু করেন ইমরান।
ইমরান বলেন, ‘প্রথম অ্যালবাম করার পর থেকে আমি দেখি যে আমার ফ্যান তৈরি হচ্ছে। আমার গান শুনছে। এই অ্যালবামের 'মন তুমি ভাসালে' গানটার জন্য রেডিওতে অনেক রিকুয়েস্ট আসতো, তখন রেডিওর যুগ ছিলো। তখন বুঝতে পারি যে আমার শ্রোতা তৈরি হচ্ছে। তখন আমাকে ওভাবে কেউ চিনতো না! রেডিওতে শুধু রিকুয়েস্ট আসতো ইমরানের 'মন তুমি ভাসালে' প্লে করার জন্য।’
এরপর ২০১২ তে 'মনের ঠিকানা' মিক্সড অ্যালবামে 'দূরে দূরে' শিরোনামে আমার একটা গান ছিলো পূজার সাথে। এই গানটির ভিডিওর কারণে মানুষ আমাকে চিনতে শুরু করে আর এই গানটা ব্যাপক হিট হয়েছিলো। এই অ্যালবামে 'সখি ভালোবাসা কারে কয়' শিরোনামে গানটির সুর ও সংগীত আমার করা ছিলো, গেয়েছিলো মিলন। এ গানটিও ম্যাসিভ হিট হয়। এ বছরই আমার 'আরাধনা' গানটি প্রকাশ পেয়েছিলো নির্ঝরের সাথে। এ গানটিও পছন্দ করে শ্রোতারা। ২০১৩ সালে আমার 'তুমি' অ্যালবামটা জনপ্রিয় হয়। তখন থেকেই বুঝতে পারি আমার গান শ্রোতাদর্শকদের ভালো লাগছে।’
২০১৫ সালে 'বলতে বলতে চলতে চলতে' শিরোনামের গান দিয়ে ব্যাপক আলোচনায় আসেন ইমরান। এই গানটি প্রথমবারের মত বাংলা সংগীতাঙ্গনে ইউটিউবে কোটি ভিউর মাইলফলক স্পর্শ করে। এরপর একে একে ইমরানের ১০-১২ টি গান কোটির ভিউ পার করে যা বাংলা সংগীতের ইতিহাসে রেকর্ড। ইমরানের প্রথম চলচ্চিত্রে প্লে-ব্যাক ছিলো শাকিব খানের 'ভালোবাসার লাল গোলাপ' ছবির টাইটেল ট্র্যাক গানটি, দ্বৈত কন্ঠ দিয়েছিলেন সাবিনা ইয়াসমিন। প্লে-ব্যাকে 'বসগিরি' ছবিতে ইমরান ও কনার গাওয়া 'দিল দিল দিল' গানটি প্রায় চার কোটির মাইলফলক ছুঁয়েছে।
দেশ ও দেশের বাইরে ইমরানের অনেক ভক্ত অনুরাগী আছে যারা প্রতিনিয়ত ইমরানকে নিয়েই মেতে থাকেন। এই শ্রোতাদর্শক দের উদ্দেশ্যে ইমরান বলেন, ‘এমন অনেকে আছেন যারা আমাকে নিয়ে স্ট্যাটাস দেন, গান শেয়ার করেন। তারা প্রত্যেকে ভালোবেসে এ কাজটা করে। যারা আমাকে ভালোবাসেন, আমার গানকে ভালোবাসেন সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আমাকে সবসময় সাপোর্ট দিয়ে যাবেন আশা করি। আপনাদের আরও ভালো কাজ উপহার দিবো।’
ইন্ডাস্ট্রিতে নতুনরা কাজের ক্ষেত্রে কতটা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয় বা কতটুকু সহায়তা পায় এমন প্রশ্নে ইমরান বলেন, ‘একটা সময় ছিলো যে অনেক প্রতিবন্ধকতার শিকার হতে হয় কিন্তু এখন আর তেমন একটা না। প্রতিভা থাকলে তাকে কেউ আটকাতে পারবে না।’
নতুন কাজ নিয়ে ইমরান বলেন, ‘এ মাসেই আমার নতুন একটা কাভার গান আসবে যেটা প্রয়াত চিত্রনায়ক সালমান শাহ্কে উৎসর্গ করে করা। সালমান শাহের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ গানটি প্রকাশ করবে অনুপম মিডিয়া।’
আইএন/এমএবি