বাপ্পার সঙ্গে বিচ্ছেদে চাঁদনীর জবাব, ‘আমি কার জন্য কাঁদবো?'
কেমন আছেন? প্রশ্নটাই ছুড়তেই পাল্টা প্রশ্ন উড়ে এলো- বাপ্পা মজুমদারের নতুন বিয়েতে আমার অনুভূতি জানতে কল করেছেন? একটু ইতস্তত লাগলো। আজকের মিডিয়ার সবকিছুতেই অনুভূতি দরকার পড়ে এই নেতিবাচক ভাবনার বিষয়টা দিনে দিনে সবাই মেনে নিচ্ছেন। টিভি পর্দার জনপ্রিয় মুখ চাঁদনীও মেনে নিয়েছেন।
তার প্রশ্নের উত্তর দিতে দেরি হওয়ায় তিনি নিজেই বলে গেলেন, ‘আমার ভাই কোনো অনুভূতি নেই। আমি এখন অনুভূতিহীনতায় চলে গেছি। আজ সকালে ঘুম ভাঙলো মোবাইলের কল পেয়ে। কোনো এক সাংবাদিক ভাই জানালেন বিয়ে করছেন বাপ্পা। শুনে মুচকি হাসলাম। এছাড়া আমি কী করবো? আমার কী করার আছে? আমার কী করা উচিত? আমি বাবা হারানোর শোকে রয়েছি। তার মধ্যে এ ধরনের খবর। এমন পরিস্থিতিতে মানুষ কী করে? আমি কার জন্য কাঁদবো? বাবার জন্য নাকি সংসারের জন্য? অন্য কোনো মেয়ে এই পরিস্থিতে থাকলে কী করতো আমার জানা নেই।’
বাপ্পা মজুমদারের সঙ্গে বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে জাগো নিউজকে আজ সোমবার (২১ মে) দুপুরে চাঁদনী বলেন, ‘সবাই কেন আমাকে কল দেয়? কেন এই বিচ্ছেদের ব্যাপারে বাপ্পার কাছে জানতে চায় না। বিয়ে তো সে করছে, আমি না। আপনাদের উচিত তার কাছেই জানতে চাওয়া কেন বিচ্ছেদ হলো, কবে বিচ্ছেদ হলো। আমি এসব নিয়ে মুখ খুলতে চাই না। আমার মুখ খুলে গেলে অনেক জনপ্রিয় মানুষের মুখোশ খুলে যাবে। আমি এসব বিতর্ক চাই না। আর বাপ্পার বিয়ের ব্যাপারে আমি নিশ্চিত কিছু কোথাও শুনিওনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবাই জানেন আমি কেমন মেয়ে। আমার নামে কোনো বাজে রিউমার ছিল না কোথাও। আপনমনে নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। একটি মানুষ, একটি বিয়ে আমার জীবনটাকে ঝড়ের মুখে ফেলে দিলো। আজ যার খুশি সেই চাঁদনীকে নিয়ে আজেবাজে কথা ছড়ানোর সাহস পায়। তবুও আমি শান্ত থাকতে চাই। আমি সবকিছুর ফায়সালার মালিক আল্লাহর ওপর ভরসা করতে চাই। তিনি সব দেখেন ও জানেন। নিশ্চয়ই তিনি সব বিচার করবেন, আমাদের সবাইকে সম্মান নিয়ে বাঁচিয়ে রাখবেন।’
নিজেকে সম্মানের কাঙ্গাল দাবি করে চাঁদনী বলেন, ‘আমি সবসময়ই মানুষকে সম্মান করার চেষ্টা করি। সতর্ক থাকি কেউ যেন আমার দ্বারা অসম্মানিত না হয়। আমি আজও বাপ্পাকে স্বামী হিসেবে মানি ও সম্মান করি। তার বাবাকে আমি দেখিনি। কিন্তু তার মায়ের আদর আমি পেয়েছি। তাকে আমি আজও সম্মান করি। আমি নিজের পরিবারের সম্মানের প্রতিও দায়বদ্ধ। আমার বাবা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সম্মান নিয়ে বেঁচে ছিলেন। আমি তাকে ছোট করতে চাইনি। সেজন্য বিয়ে-বিচ্ছেদ নিয়ে সব খবর এড়িয়ে গেছি। আমার বাবা চলে গেছেন ৪১ দিন হলো আজ। এখন মা আমার একমাত্র ভরসা। তাকে আমি এসব ঘটনায় ছোট করতে চাই না। কথা বলতে গেলে কথা বাড়ে। আমি তাই চুপ করে রয়েছি। মায়ের মানসিক অবস্থা খুব খারাপ। তার মাঝখানে মেয়ের সংসার নিয়ে কোনো খবরে তিনি আরও ভেঙে পড়ুন তা আমি চাই না। মারাও তো যেতে পারেন। সবার কাছে দোয়া চাই, যেন নিজেকে শান্ত রাখতে পারি।’
জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী চাঁদনী জানালেন, গেল ৯ এপ্রিল ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ঢাকায় নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন তার বাবা সালাহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি ছিলেন আর্ট কলেজের শিক্ষার্থী। আর্ট কলেজের পাঠ্য ‘চারু শিল্প’ বইটি তিনিই লিখেছিলেন। টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যাপক হিসেবেও কাজ করেছেন। সেইসঙ্গে বিটিভির তালিকাভুক্ত শিল্পীও ছিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ২১ মার্চ ধানমন্ডির ২৭ সিয়ার্স রেস্টুরেন্টে আনুষ্ঠানিকভাবে বাপ্পা মজুমদার ও চাঁদনীর বাগদান হয়। বাপ্পা ও চাঁদনী ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের হলেও বাগদানের আগেই বাপ্পা ধর্মান্তরিত হয়ে আহমেদ বাপ্পা মজুমদার হন। দুই পরিবারের সম্মতিতেই এই বাগদান সম্পন্ন হয়। পরে তাদের দুই পরিবার একসঙ্গে হয়ে ঘরোয়াভাবে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেন।
এলএ/জেআইএম