প্রচারণায় ব্যস্ত পরিচয়হীন ‘ভাইজান এলো রে’
শোনা গিয়েছিলো কলকাতার ছবি হিসেবেই নির্মিত হচ্ছে শাকিব খান-শ্রাবন্তী জুটির ‘ভাইজান এলো রে’ ছবিটি। এই ছবিটিতে চুক্তিবদ্ধ হবার পর দিনে দিনে কলকাতার বাজারে শাকিবের কাটতি বাড়ছে বলে অনেক আলোচনা ভেসে বেড়িয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে কলকাতার সিনেমার বাজার বাংলাদেশে বাড়াতে শাকিবকে ট্রাম কার্ড হিসেবে ব্যবহার করছে কিছু প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। যার মধ্যে এগিয়ে রয়েছে এসকে মুভিজ।
যে ‘ভাইজান এলো রে’ সম্পূর্ণ কলকাতার ছবি হিসেবে শুটিং শুরু করেছিলো সেটি এখন বাংলাদেশের ছবি হিসেবে আসছে রোজা ঈদে মুক্তি দেয়ার চেষ্টা চলছে। ভারতীয় পরিচালক জয়দীপ মুখার্জির পরিচালনায় কলকাতা ও লন্ডনে ইতোমধ্যেই ‘ভাইজান এলো রে’ ছবির শুটিং শেষ হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছিলো, এটি সাফটা চুক্তির আওতায় বাংলাদেশের সিনেমা হলে মুক্তি পাবে।
কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশের ছবি হিসেবে আসছে ঈদে এটিকে মুক্তি দিতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সমিতিতে অতিথি সদস্য হিসেবে আবেদন করেন নির্মাতা জয়দীপ মুখার্জি। এর পরই ভারতীয় প্রযোজনা সংস্থা এসকে মুভিজের ‘প্রতারণা’র বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। ছবি শেষ হওয়ার পর জয়দীপ মুখার্জি কেমন করে অতিথি পরিচালক হওয়ার আবেদন করেন- এই প্রশ্নই ভেসে বেড়াচ্ছে ঢাকাই সিনেমার আঙিনায়।
বিষয়টিকে ঢাকার ইন্ডাস্ট্রির জন্য হতাশার বলে মনে করছেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা। এটি প্রকাশ্যে প্রতারণা বলেই মানছেন তারা। এই প্রতারণা বন্ধ করতে তথ্য মন্ত্রণালয়ের শক্তিশালী ভূমিকাও প্রত্যাশা করছেন তারা। স্বভাবই এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না, শাকিব-শ্রাবন্তীর ‘ভাইজান এলো রে’ ছবিটির পরিচয় কী হবে। এটি যৌথ প্রযোজনার ছবি হিসেবে মুক্তি পাবে নাকি সাফটা চুক্তিতে? যদি সাফটায় আসে তবে ঈদে এর মুক্তি একেবারেই অনিশ্চিত।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব বদিউল আলম খোকন এ ব্যাপারে বলেন, ‘নিয়ম হলো দেশীয় কোনো চলচ্চিত্র ঈদে মুক্তি পেলে ওই সপ্তাহে সাফটায় ভিনদেশি কোনো ছবি আসতে পারবে না। সেদিক থেকে সাফটা চুক্তিতে রোজা ঈদে ‘ভাইজান এলো রে’ ছবির মুক্তি কীভাবে সম্ভব? যৌথ প্রযোজনা হিসেবে যদি ছবিটি তথ্য মন্ত্রণালয়ে কোনো ঝামেলার মুখে না পড়ে এবং সেন্সরে অনুমতি পায় তবে আসতে পারবে।’
তিনি এও জানান, কলকাতার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসকে মুভিজ অতিথি প্রযোজক হিসেবেও ছবিটি মুক্তির আবেদন করতে পারে। সেক্ষত্রে বিবেচ্য হবে আবেদনটি কখন করা হয়েছে।
‘ভাইজান এলো রে’ ছবিটি কোনো সুনির্দিষ্ট পরিচয় এখনো পায়নি। তার আগেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে প্রচারণায়। এসকে মুভিজ আগামী ঈদে বাংলাদেশে ছবিটি মুক্তির লক্ষ্যে ধারাবাহিকভাবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ বুধবার সকালে এসকে মুভিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ এবং শাকিব খানের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়েছে ‘ভাইজান এলো রে’ ছবির ফার্স্ট লুক।
এখন দেখার পালা এই ছবিটি আসছে ঈদে মুক্তি পায় কী না। আর পেলেও সেটি কোন পরিচয়ে। ‘ভাইজান এলো রে’ ছবিতে শাকিব-শ্রাবন্তী ছাড়াও অভিনয় করছেন দীপা খন্দকার, মনিরা মিঠু, পায়েল সরকার, রজতাভ দত্ত, বিশ্বনাথ, শান্তিলাল মুখার্জিসহ আরও অনেক তারকা।
প্রসঙ্গত, একইভাবে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে ভারতের সুরিন্দর ফিল্মস, জিৎ ফিল্মওয়ার্কস এবং বাংলাদেশের জাজ মাল্টিমিডিয়া প্রযোজিত ছবি ‘সুলতান- দ্য সেভিয়র’ বিরুদ্ধেও। বাংলাদেশ থেকে যৌথ প্রযোজনার ছবি হিসেবে নির্মাণের অনুমতি পাওয়ার আগেই শেষ হয়ে গেছে এর শুটিং। যা প্রতারণা। এটিও রয়েছে আসছে ঈদে মুক্তির মিছিলে। অভিযোগ এড়িয়ে জিৎ-মিম জুটির ছবিটি ঈদের বাজারে সুলতানি করতে পারে কী না সেটাই দেখার অপেক্ষা।
এছাড়াও ঈদে মুক্তির মিছিলে রয়েছে ‘পোড়ামন-২’, ‘সুপারহিরো’, ‘আমার প্রেম আমার প্রিয়া’, ‘‘চিটাগাংইয়া পোয়া নোয়াখাইল্লা মাইয়া’ ছবিগুলো।
এলএ/এমএস