শুধু শাওনের অনুমতিতে হুমায়ূনের সৃষ্টি নিয়ে কাজ করা বেআইনি : নুহাশ
‘আমাদের চার ভাই-বোনের অনুমতি ছাড়া, শুধুমাত্র শাওনের অনুমতি নিয়ে, হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্টি নিয়ে কাজ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।’ প্রয়াৎ কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্টির মেধাস্বত্ব প্রসঙ্গে তার ছেলে নুহাশ হুমায়ূন বলেছেন এই কথা। মঙ্গলবার নিজের ফেইসবুক স্ট্যাটাসে নুহাশ বলেন, ‘শাওন আমার বাবার ‘ইনটেলেকচুয়াল প্রপার্টির’ (গল্প, উপন্যাস, তার সৃষ্ট যেকোনো কিছুর) একমাত্র উত্তরাধিকার না।
শুধুমাত্র হুমায়ূন আহমেদের দ্বিতীয় স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওনের অনুমতি নিয়ে সরকারি অনুদানে নির্মিত ‘দেবী’ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ হয়েছিল। বিয়টি নিয়ে এর আগে আপত্তি জানিয়েছিলেন হুমায়ূন কন্যা শিলা আহমেদে।
গত ২ এপ্রিল ফেইসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসে শীলা আহমেদ প্রশ্ন তোলেন, ‘কে দেবী’ বানানোর অনুমতি দিয়েছে? আমরা চার ভাই-বোন দিইনি। আমাদের চার ভাই-বোনের অনুমতি ছাড়া কীভাবে এই সিনেমা সরকারি অনুদান পেল? কীভাবে এটি বানানো হয়ে গেল? কীভাবে এটা মুক্তি পাচ্ছে?’
এমন আপত্তির পর চলচ্চিত্রটির প্রযোজক জয়া আহসান হুমায়ূনের প্রথম স্ত্রী গুলতেকিনের সন্তান নুহাশ হুমায়ূনসহ বিপাশা আহমেদ, নোভা আহমেদ ও শিলা আহমেদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করে দুঃখ প্রকাশ করে অনুমতি গ্রহণ করেছেন বলে জানিয়েছেন নুহাশ হুমায়ূন।
তারই প্রেক্ষিতে হুমায়ূন আহমেদের মেধাস্বত্বে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেন তিনি। নুহাশ লিখেছেন, ‘হুমায়ূন আহমেদের সমস্ত সৃষ্টি এখন তার উত্তরাধিকারদের স্বত্ত্বাধিকারে। আমাদের চার ভাই-বোনের অনুমতি ছাড়া এই সিনেমাটি যে মুক্তি দেয়ার কাজ চলছিল, সেটা সম্পূর্ণ আইন বহির্ভুত ছিল। যখন এই সিনেমার প্রযোজক জয়া আহসান এই বিষয়ে জানলেন, তিনি সঙ্গে সঙ্গেই আমার পরিবারে যোগাযোগ করেন এবং আমাদের চারজনের অনুমতি নেয়ার জন্য আইনগত সব ব্যবস্থা নিলেন।’
নুহাশ জানান, আইনগত অনুমতি নেয়ার আগ পর্যন্ত ‘দেবী’ চলচ্চিত্রের প্রচারণার কাজ বন্ধ রেখেছিলেন জয়া। চলচ্চিত্র ‘দেবী’ নিয়ে উত্তরাধিকারদের অসন্তোষ এখন আর নেই জানিয়ে নুহাশ লেখেন, ‘জয়া আহসান আমাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেন এবং আমাদেরকে তার দিকের ব্যাখ্যা দিলেন, তখন আমাদের মনে হয়েছে -এটা তার দিক থেকে একটা অনিচ্ছাকৃত ভুল ছিল।
আর তিনি যে এটা সংশোধন করতে চাইছেন এটা একটা দায়িত্বশীল আচরণের বহিঃপ্রকাশ।’
নুহাশে বলেন, ‘বেশিরভাগ নির্মাতারা (যারা আমার বাবার সৃষ্টি নিয়ে কাজ করেছেন/করতে যাচ্ছেন) এতটা দায়িত্বশীল আচরণের পরিচয় দেননি অথবা দিচ্ছেন না, তাই আমি কিছু জিনিস স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে চাই- যেন এই জাতীয় ভুল বারবার না হয়। আশা করছি অন্য নির্মাতারাও এটাকে সঠিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখবেন, কীভাবে সবার জন্য সম্মানজনকভাবে আমার বাবার ইনটেলেকচুয়াল প্রপার্টি নিয়ে কাজ করা যায়। এটা কিন্তু কোনো আর্জি না বা অনুরোধ না- ভালোভাবে ‘ইনটেলেকচুয়াল প্রপার্টি’ আইন পড়ে দেখলেই বিষয়টি বোঝা যাবে।’
হুমায়ূনের সৃষ্টি থেকে নির্মাণের মান বজায় রাখতেই তাদের এ উদ্যোগ বলে জানান সদ্য নির্মাতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা নুহাশ হুমায়ূন।
এমএবি/এমএস