শাকিবকে বাদ দিয়েই হবিগঞ্জের মামলার প্রতিবেদন দাখিল
হবিগঞ্জে অটোরিকশা চালক ইজাজুল মিয়ার দায়ের করা মামলা থেকে নায়ক শাকিব খানকে অব্যাহতি দিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির ওসি শাহ আলম বুধবার জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সম্পা জাহানের আদালতে এ অভিযোগপত্র জমা দেন। এতে রাজনীতি সিনেমার পরিচালক বুলবুল বিশ্বাস ও প্রযোজক আশফাক আহমেদকে অভিযুক্ত করা হয়। এর আগে ৪ বার মামলার প্রতিবেদন দেয়ার জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন আদালত।
মামলার বাদি বানিয়াচংয়ের ইজাজুল মিয়া বলেন, ‘মামলার ১ নম্বর আসামী শাকিব খানকেই নাকি বাদ দিয়ে মামলার প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। আমি শাকিব খানকেই চিনি। অন্য কাউকে চিনিনা। কে তাকে নাম্বার দিয়েছে, আর তিনি বলেছেন তা আমার জানার দরকার নেই। আমি চাই শাকিব খানকে আসামী করা হোক। এখন আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করে এর বিরুদ্ধে নারাজি দেব। আগামী ১০ মে মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।’
মামলার বাদিপক্ষের আইনজীবী এমএ মজিদ জানান, ‘নায়ক শাকিব খান এক নম্বর আসামী। তার মুখ থেকেই মোবাইল নাম্বারটি উচ্চারিত হয়েছে। তাকে বাদ দিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা সমিচিন হয়নি। আমরা প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দেয়া হবে। সে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।’
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ‘নায়ক শাকিব খানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মানহানী ও প্রতারণার মামলায় বুধবার প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। প্রতিবেদনে নায়ক শাকিব খানকে বাদ দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে ৩ আসামীর মধ্যে রাজনীতি সিনেমার পরিচালক বুলবুল বিশ্বাস ও প্রযোজক আশফাক আহমেদকে প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
বুধবার মামলার শুনানীর সময় বাদিপক্ষ থেকে নারাজী দেয়া হবে বলে আদালতকে জানানো হয়। শুনানীর সময় আদালত জানতে চান, এ ঘটনায় নায়ক শাকিব খানের কি সম্পৃক্ত রয়েছে। তিনি তো পরিচালক ও প্রযোজকের নির্দেশনায় শুধু শব্দ উচ্চারণ করেছেন মাত্র।
এ সময় বাদিপক্ষের আইনজীবী জানান, পরিচালক প্রযোজক যা বলবেন তাই নায়ক নায়িকা উচ্চারণ করবেন তা হতে পারে না। এক্ষেত্রে নায়ক নায়িকারও সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে। সিনেমায় পূর্ণ ডিজিটের একটি মোবাইল নাম্বার উচ্চারনের ক্ষেত্রেও এমন সচেতনতার প্রয়োজন ছিল।
মামলার বিবরণে জানা যায়, রাজনীতি সিনেমায় নায়ক শাকিব খান নায়িকা অপু বিশ্বাসকে উদ্দেশ্য করে একটি মোবাইল নাম্বার বলেন। সে মোবাইল নাম্বারের মালিক হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের ইজাজুল মিয়া। ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর থেকে নায়ক শাকিব খান ভেবে অনবরত ফোন আসতে থাকে ইজাজুল মিয়ার নাম্বারে। অতিষ্ট ইজাজুল মিয়া থানায় জিডি করেন।
ইতিমধ্যে তিনি মোবাইল ফোন ব্যস্ত থাকার কারণে সিএনজি অটোরিকশা চালকের চাকরি হারান। সংসার ভাঙ্গার উপক্রম হয়। এক পর্যায়ে গত ২৯ অক্টোবর নায়ক শাকিব খান, রাজনীতি সিনেমার পরিচালক বুলবুল বিশ্বাস, প্রযোজক আশফাক আহমেদের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও মানহানির অভিযোগে মামলা দায়ের করেন ইজাজুল মিয়া।
জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সম্পা জাহান হবিগঞ্জের ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। এরপর গত ১৮ ডিসেম্বর, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২৫ ফেব্রুয়ারী ও ৬ মার্চ মামলার প্রতিবেদন দেয়ার জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাকে সময় দিয়ে নির্দেশ দেন।
এমএবি/এলএ/জেআইএম