শ্রীদেবীর মৃত্যুর রাতে কী ঘটেছিল জানালেন তার স্বামী
বলিউডের প্রথম নারী সুপারস্টার শ্রীদেবী মারা গেছেন গেল ২৪ ফেব্রুয়ারি। তারপর কেটে গিয়েছে এক সপ্তাহ। গতকাল রামেশ্বরমে তার চিতাভস্ম ভাসিয়ে দিয়েছে পরিবারের সদস্যরা। আজ রোববার সন্ধেবেলা হায়দরাবাদের পার্ক হায়াত হোটেলে রয়েছে শ্রীদেবীর স্মরণে শোক সভা।
গত এক সপ্তাহ ঝড়ের মধ্যে দিয়ে কাটিয়েছে বলিউডের এ কাপুর পরিবার। শ্রীদেবীর মৃত্যু নিয়ে প্রচুর গুঞ্জনও হয়েছে, রয়েছে বহু প্রশ্নও। এ সবকিছুর জবাব দিতে শ্রী-র মৃত্যু নিয়ে প্রথম মুখ খুললেন তার স্বামী। সেদিন হোটেলের ঘরে শ্রীদেবী সর্বপ্রথম ভাসমান অবস্থায় বাথটবে দেখেন তার স্বামী প্রযোজক বনি কাপুর। কী ঘটেছিলো সেদিন তা বিস্তারিতভাবে তিরিশ বছরের পুরনো বন্ধু ট্রেড অ্যানালিস্ট কোমল নাহাতকে জানিয়েছেন বনি। তিনিই তার ব্লগে সেকথা শেয়ার করেন।
সেখানে তিনি বলেন, ‘গত শনিবার অর্থাৎ ২৪ ফেব্রুয়ারি শ্রীদেবীকে দুবাইয়ের জুমেইরা এমিরেটস টাওয়ার হোটেলের রুম নম্বর ২২০১-এ আচমকাই সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্যে পৌঁছে যান বনি। প্রসঙ্গত, তাদের এক আত্মীয়ের বিয়ে শেষ হওয়ার পর বনি তার ছোট মেয়ে খুশিকে নিয়ে মুম্বই ফিরে এলেও, দুবাইয়ে একলাই থেকে গিয়েছিলেন শ্রীদেবী। জানা যায়, মৃত্যুর আগের ৪৮ ঘণ্টা তিনি একবারও ঘরের বাইরে পা পর্যন্ত রাখেননি।’
বনি তার বন্ধুকে জানিয়েছেন, শ্রী তাকে শনিবার সকালে ম্যাসেজ করে বলেন, ‘পাপা (বনিকে এ নামেই ডাকতেন শ্রীদেবী) মিসিং ইউ’। এরপর স্ত্রীকে মিস করার কথাও জানান বনি, তবে তিনি যে বিকেলে সারপ্রাইজ দেবেন সেকথা একবারও বলেননি। তারপর বিকেলে হোটেলে পৌঁছে, স্ত্রীকে জড়িয়ে চুম্বনও করেন বনি। ১৫ মিনিট তাদের মধ্যে হাল্কা কথোপকথনও হয়। তারপরই স্ত্রীকে রোম্যান্টিক ডিনারে যাওয়ার আমন্ত্রণ করেন বনি।
বনি ফ্রেস হয়ে তাদের স্যুটের বেডরুমে বসে টিভিতে ক্রিকেট ম্যাচ দেখচ্ছিলেন। শ্রী ১৫ মিনিটের মধ্যে স্নান সেরে আসবেন বলেন। তখনও ঘড়িতে আটটা বাজতে কিছুক্ষণ বাকি ছিল, কিন্তু শ্রীদেবী বাথরুম থেকে বেরোলেন না। যেহেতু সেদিন ছিল শনিবার, এবং রাত আটটার পর দুবাইয়ের যে কোনো হোটেলে জায়গা পাওয়া মুশকিল, তাই শ্রীকে ‘জান’ ‘জান’ বলে ডাকতে থাকেন বনি। কোনো সাড়া না পাওয়ায়, বাথরুমের দরজায় টোকা মারেন। বনির কথা, বাথরুমের দরজা ভেতর থেকে খোলাই ছিল, ঢুকেই তিনি দেখেন, বাথটবের মধ্যে পড়ে রয়েছেন শ্রী। তবে আশ্চর্যজনকভাবে বাথটব থেকে একফোঁটা জলও মাটিতে পড়ে ছিল না। দুবাইয়ের সময় অনুযায়ী ঘড়িতে তখন বাজে আটটা। স্ত্রীকে সারপ্রাইজ দেওয়ার দু ঘণ্টার মধ্যে এমন ভয়াবহ ঝড় তার জীবনে আসতে চলেছে, সেটা বোধহয় ভাবতেও পারেননি বনি।’
তবে বনি এধরনের সারপ্রাইজ শ্রীদেবীকে আগেও একবার দিয়েছিলেন। সালটা ছিল ১৯৯৪, বেঙ্গালুরুতে। বাবার এবারের এই সারপ্রাইজ দেওয়ার আইডিয়াটা জাহ্নবীও জানতেন, এবং সমর্থনও করেছিলেন। কারণ, মা বিদেশ থেকে একলা ফিরতে গেলে, কিছু না কিছু হারিয়ে ফেলেন। জাহ্নবীর ভয় ছিল, মা হয়তো পার্সপোর্টই হারিয়ে ফেলবেন।
শ্রীদেবীর মেয়ে জাহ্নবীর বরাতে জানা গেল, তার মা কখনও একলা বিদেশে যাননি। মাত্র দুবার একলা গিয়েছিলেন, তাও সেবার তার সঙ্গে ছিলেন স্বামী বনির বন্ধুর স্ত্রী। সবসময়ই শ্রীদেবীর পাশে থেকেছেন স্বামী বা সন্তানরা। একলা থাকতে চাইতেন না। একলা থাকতে খুব ভয় পেতেন বলিউডের ‘চাঁদনি’। তবে সবাইকে ছেড়ে আজ তিনি একাই হেঁটেছেন শান্তিতে ঘুমোনোর পথ……..
এলএ/আরআইপি