রহমান বয়াতীর ১৬ কোটি টাকা দিচ্ছে না মোবাইল কোম্পানিগুলো
কী করুণ দিনযাপন করেছেন শেষ বয়সে। চিকিৎসার অভাব, ভালো আবাসন ব্যবস্থার অভাব- অনেক ভুগিয়েছে দেশের কিংবদন্তি বাউল আব্দুর রহমান বয়াতীকে। ব্যক্তি জীবনে একুশে পদক পেলেও আর্থিক টানাপোড়েন ছিল নিত্য সঙ্গী।
সেই রহমান বয়াতী কোটিপতি ছিলেন শুনতে কেমন লাগবে? সত্যি তাই। এ গানপুরুষের পরিবারের দাবি, বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির কাছে প্রায় ১৬ কোটি টাকা পান আব্দুর রহমান বয়াতী। বিনা অনুমতিতে এ বাউলের অসংখ্য গান দীর্ঘদিন ধরে বাণিজ্যিক ব্যবহারের কারণেই এ টাকার অঙ্ক উঠে এসেছে। সেই টাকা পরিশোধ করছে না কোম্পানিগুলো। এমনটাই জানালেন বাউল পরিবারের সদস্যরা।
আজ রোববার (৪ মার্চ) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ পাওনা টাকা দ্রুত নিষ্পত্তির আহ্বান জানানো হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন আব্দুর রহমান বয়াতীর বড় ছেলে মো. মহিউদ্দিন, মেজো ছেলে মো. আলম বয়াতী, ছোট ছেলে মো. আজিম হোসেন এবং ফাউন্ডেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী আশরাফ আখন্দ।
সম্মেলনে বয়াতীর ছেলেরা জানান, সম্প্রতি কণ্ঠশিল্পী ফরিদা পারভীন রহমান বয়াতীর পাওনা টাকা পরিশোধ করে দিতে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন।
রহমান বয়াতীর মেজো ছেলে মো. আলম বয়াতী জানান, ২০১৫ সালের ১৮ অক্টোবর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে কণ্ঠশিল্পী ফরিদা পারভীন জানান- শুধু মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো থেকে আব্দুর রহমান বয়াতী ১৬ কোটি টাকা পাওনা আছেন। এ ব্যাপারে কণ্ঠশিল্পী সুজিত মোস্তফাও এর সত্যতা স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে সকল মোবাইল কোম্পানি, এফএম রেডিও এবং সিডি-ভিসিডি বাজারজাতকরণ কোম্পানির প্রতি আবেদন জানাচ্ছি- আব্দুর রহমান বয়াতীর গান যাতে করে আর পাইরেসি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির কাছ থেকে পাওনা ১৬ কোটি টাকা দ্রুত প্রদানের দাবি জানাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে আলম বয়াতী আরও জানান, এখন থেকে আব্দুর রহমান বয়াতী বাউল ফাউন্ডেশন কিংবা তার পরিবারের সম্মতি ছাড়া তার গান ডাউনলোড, আপলোড কিংবা রিমিক্স করা যাবে না। শুধু তাই নয় এফএম রেডিও, টিভি চ্যানেলে প্রচার করতে কিংবা সিডি-ভিসিডি করে বাজারজাত করতে ফাউন্ডেশনের অনুমতি নিতে হবে। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পাশাপাশি তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমার বাবাকে একুশে পদকে ভূষিত করার জন্য এবং তার চিকিৎসা ব্যয়ে ঋণ নেওয়া ৪ লাখ টাকা পরিশোধ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা আশা করছি তিনি (প্রধানমন্ত্রী) আমাদের জন্য এবার একটি মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দেবেন।’
আব্দুর রহমান বয়াতী ২০১৩ সালের ১৯ আগস্ট রাজধানীর ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডের জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
এলএ/জেআইএম