ক্যারিয়ারের জন্য বাচ্চার ইমোশনকেও বিক্রি করছে শাকিব : অপু
শারীরিকভাবে সুস্থ নন শাকিব খান। তারপরও শুটিংয়ের জন্য গত সোমবার দিবাগত রাতে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন তিনি। এর আগে রোববার সন্ধ্যায় কলকাতা থেকে ঢাকায় এসেছিলেন এ নায়ক।
তবে ঢাকা যাওয়ার আগে কিছু গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি আফসোস করেছেন একমাত্র সন্তানের দেখা না পেয়ে। তার দাবি, বারবার ছেলেকে দেখতে চেয়ে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু অপু বিশ্বাস ছেলেকে দেখতে দেননি। এ খবরে শাকিব ভক্তরা বেশ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অপুর নামে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
এদিকে অপু বিশ্বাস জানালেন, ছেলেকে দেখতে চেয়ে তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগই করেননি শাকিব। তিনি জাগো নিউজকে বুধবার সকালে বলেন, ‘আমার ফোন সর্বক্ষণ আমার সঙ্গেই ছিল। শাকিবের কোনো কল এতে আসেনি। তার কোনো লোকও আমাকে কল দেয়নি। তবে কেন তিনি মিথ্যে কথা বলছেন যে আমি তাকে একবারের জন্যও বাচ্চার মুখ দেখতে দেইনি। আর যারা শাকিবের এসব যুক্তিহীন বক্তব্য ছাপছেন তারা কী একবারও মনে করেননি আমার সঙ্গে কথা বলে এ বক্তব্যের সত্যতা যাছাইয়ের প্রয়োজন ছিল। আমি তো দেশেই রয়েছে, আমার নাম্বারটিও তাদের কাছে আছে।’
অপু আফসোস প্রকাশ করে বলেন, ‘বাবা হিসেবে শাকিব চমৎকার। ছেলের জন্য আর সব বাবার মতোই তারও টান রয়েছে, নিয়মিত কাছে থাকতে না পারার কষ্টও হয়তো আছে। ব্যস্ততার কারণে সে কাছে থাকতে পারে না। কিন্তু যখন সে দেশে আসে সেই সময়টাতে তো ওর উচিত ছেলের কাছে থাকা। ও কখন দেশে আসে কখন যায় কিছুই জানি না আমি। ছেলের সঙ্গেও দেখা করার চেষ্টা করে না। লোকে মন্দ বলবে সেই ভেবে ও নিজের দোষ বারবার আমার ওপর চাপাতে চায়। সেখানে সে বাচ্চার ইমোশন নিয়ে আসে। দেশের মানুষকে কী এতো বোকা মনে করে সে? ছেলেকে দেখতে চাইলে কে তাকে আটকে রেখেছিল? নাকি নিউজ করিয়ে আমাকে খারাপ স্ত্রী প্রমাণ করাই মূল উদ্দেশ্য? এতদিন পর এসে ছেলের পাশে একটু সময়ের জন্যও বসতে পারলো না, বাবা হিসেবে লজ্জা হওয়া উচিত ছিল তার। যে বয়সের বাচ্চা বাবা-মায়ের আদরে বড় হয় সে বয়সী জয়ের বাবাকে কাছে না পাওয়ার দুঃখ কী বোঝে শাকিব? উল্টো আমার নামে অভিযোগ করছে।’
ছেলেকে নিয়ে যাবার জন্য শাকিব খানের কাছের মানুষজন আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। আপনি নাকি না করেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে অপু বলেন, ‘প্রশ্নই আসে না। কেউ যোগাযোগ করেনি আমার সঙ্গে। শাকিব যদি কাউকে দায়িত্ব দিয়েও থাকে সে হয়তো যোগাযোগ না করেই আমার নামে দোষ দিয়েছে। আগেও এমন অনেকবার হয়েছে। ওর কানে আমার নামে নামা কটুকথা ছড়িয়েছে তার চারপাশের মানুষেরা। যারা চায় না শাকিব-অপু সুখে থাকুক। শাকিব হয়তো এসব টের পায় না। আর পেলেও ওদের কথাই বিশ্বাস করে নেয় ভালো মন্দ না ভেবে। আচ্ছা বলুন তো, বাবা আসবে তার ছেলেকে দেখতে, ছেলের জন্য নানা জিনিস নিয়ে তার জন্য প্রতিবারই এতো নাটকীয়তার কী আছে? বাসায় এসে ছেলেকে দেখতে পারে, সঙ্গে নিয়েও যেতে পারে। তবে ও কেন লোক দিয়ে যোগাযোগের প্রশ্ন আসবে? ছেলেকে দেখার ইচ্ছে থাকলে বাসায় আসতে পারতো। কেউ তাকে বের করে দিতো না। সেটা ভাবার অবকাশও নেই। এর আগেও কিন্তু ও আমার বাসায় এসে ছেলেকে দেখে গেছে। বারবার মনে হচ্ছে, ছেলেকে দেখতে চাওয়ার চেয়ে আমার নামে মিথ্যে অভিযোগ করাটাই মুখ্য।’
অপু আরও যোগ করেন, ‘শাকিব এবারে এসেছে কবে সেটা আমি জানি না। কিছু নিউজ দেখে বুঝলাম ও চলেও গেছে। আমার এ বাসার ভাড়াটা সেই দেয়। এবারে তাও দিয়ে যায়নি। ওর এসবে কোনো টান নেই, সংসার নিয়ে হয়তো ভাবনাও নেই। ওর ক্যারিয়ার দরকার। ক্যারিয়ারের জন্য ও প্রেম, ভালোবাসা, সংসার, পরিবার সবই জলে ভাসিয়েছে। কিন্তু তাই বলে ক্যারিয়ারের জন্য বাচ্চার ইমোশনকে ব্যবহার করবে! কোনো বাবা এমনটি করে? ক্যারিয়ারই সব নাকি? জীবন কতো বড়ো, দিনশেষে সবাইকেই পরিবারের কাছে আসতে হয়। সন্তানের আদরে বাঁচতে হয়। ওসব কী শাকিব ভাবে কখনো?
বারবার স্ত্রী হিসেবে আমি খারাপ এটা প্রমাণ করতে ও আমার নামে মিথ্যে তথ্য ছড়ায়। যেসব তথ্যের কোনো ভিত্তিই থাকে না। সত্যটা প্রকাশ হলে নিজেই ছোট হয়। তবে কী দরকার এমন করে? ছেলেকে নিয়ে নোংরা কাদা ছোঁড়াছুড়ি করে? শাকিবের ক্যারিয়ার আরও রঙিন হোক, স্ত্রী হিসেবে সেই প্রত্যাশা করি। কিন্তু আমাদের সম্পর্কের জটিলতায় আমি কোনোকিছুতেই ছেলেকে দেখতে চাই না।’
এলএ