মাইলসের বিরুদ্ধে এবার গীতিকার রনিমের স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ
সমালোচনা যেন পিছু ছাড়ছে না এক সময়ের জনপ্রিয় ব্যান্ড দল মাইলসের। এবার দলটির বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ তুলেছেন ‘জাতীয় সংগীতের দ্বিতীয় লাইন’খ্যাত গীতিকার রনিম। এই গীতিকারের অভিযোগ, ডিস্ট্রিবিউটর কম্পানিরগুলোর সাথে মাইলসের রয়্যাল্টির চুক্তিপত্রে তার কোনো স্বাক্ষরই নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসও দিয়েছেন রনিম। ‘গীতিকার রনিমের স্বাক্ষরটি রয়্যাল্টির চুক্তিপত্রগুলোতে মাইলসের কোন সদস্য জালিয়াতি করে দিয়ে দিয়েছেন..!?!?’- রনিমের ভাষ্য এমনই।
বেশ কিছু স্ক্রিনশট ফেসবুকে শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, ‘আমি গীতিকার রনিম মাইলস ব্যান্ডদলের প্রতিধ্বনি অ্যালবামের জন্য চারটি গান লিখেছিলাম। যেমন ‘জাতীয় সংগীতের দ্বিতীয় লাইন’, ‘সাত দিনের তুমি’,‘কেঁপে ওঠে মন’ ও ‘মন চায়’। তন্মধ্যে একেবারেই ভিন্নধারার কথায় সাজানো ‘জাতীয় সংগীতের দ্বিতীয় লাইন’ গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। বস্তুত মাইলসের এযাতবকালের সকল গানের ইতিহাসের মধ্যে আমার লেখা এই গানটি সম্পূর্ণ নতুনত্বের দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করে।
কিন্তু খুবই দুঃখজনক ঘটনা হলো, আমার লেখা গানগুলো বিভিন্ন ডিস্ট্রিবিউটর কোম্পানির সাথে রয়্যাল্টিভিত্তিক চুক্তিপত্রে গীতিকার হিসেবে আমার স্বাক্ষর মাইলসের পক্ষ থেকে কখনোই নেয়া হয়নি। এমতোবস্থায় আমি হতবাক এই প্রশ্নটাই ভেবে যে, গীতিকার রনিমের স্বাক্ষরটি রয়্যাল্টির চুক্তিপত্রগুলোতে মাইলসের কোন সদস্য জালিয়াতি করে দিয়ে দিয়েছেন..?!?!
কারণ, বাংলাদেশে বলবৎ বর্তমান কপিরাইট আইনে মেধাস্বত্ব'র নীতিমালায় মাত্র একটি গানের জন্যেও যদি রয়্যাল্টি চুক্তি করতে হয়, তবুও একজন গীতিকার ও সুরকারের সেই চুক্তিপত্রে তাদের নিজ হস্তে স্বাক্ষর নেয়ার অবশ্যই আইনত বিধান রয়েছে। সেক্ষেত্রে এমন নীতি বহির্ভূত আচরন একজন গীতিকারের সাথে প্রতারণার সামিল এবং সেই সাথে বাংলাদেশের কপিরাইট আইন লংঘের একটি দৃষ্টান্তমূলক উদাহরন হিসেবেও স্পষ্ট প্রতীয়মান..! !’
আইনি সহায়তার নেয়ার ইঙ্গিত দিয়ে এই গীতিকার আরও লেখেন, ‘এধরনের বেআইনি ঘটনার বিরুদ্ধে এবার প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিয়ে ভাব্বার সময় এসে গেছে। একজন গীতিকারের জীবদ্দশায় তার'ই স্বাক্ষর জালিয়াতি করা মানেই আইনের চোখে অবশ্যই শাস্তিযোগ্য অপরাধ..!!
মূলকথা হলো, আমি গান লিখে শুধুমাত্র পারিশ্রমিক নিয়েছি, কিন্তু আমি আমার কোনো গানেরই মেধাস্বত্ব কারো কাছেই বিক্রি করিনি কোনোদিন। এবং কোনো ধরনেরই কাগজপত্রে কোনো স্বাক্ষরও দেইনি কোনোদিন। তাই সেই চিরসত্য সূত্রের পথ ধরেই প্রশ্নটা জেগে উঠেছে যে, মাইলসের রয়্যাল্টির চুক্তিপত্রগুলোতে আমার স্বাক্ষর জালিয়াতি করলো মাইলসের কোন্ সদস্য..?!
মাইলসের সিনিয়র একাধিক সদস্যদের সাথে এর আগেও স্বাক্ষর আর রয়্যাল্টির বিষয়ে কথা বলে কোনো সদুত্তর পাইনি। তাই ধৈর্যচ্যুতি ঘটায় আজ প্রকাশ্যেই প্রশ্নটি উত্থাপন করতে বাধ্য হলাম যে, মাইলসের কোন সদস্য গীতিকার রনিমের স্বাক্ষর জালিয়াতি করলো মাইলসের রয়্যাল্টি চুক্তিপত্রগুলোতে...!?!’
প্রসঙ্গত, রনিমের লেখা প্রথম গান ব্যান্ডশিল্পী শাফিনের কন্ঠে ১৯৯৯ সালের প্রথম দিকে প্রকাশ হলেও মূলত একই সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ব্যান্ডশিল্পী জেমসের জন্য ‘গান গাও’, ‘আমি এক দুঃখওয়ালা’, ‘আগামীকাল আমার শততম দুঃখবার্ষিকী’, ‘নায়ক আমি নায়িকা তুমি’, ‘ঘুমে ঘুমে পালকী চড়ে’সহ বেশকিছু তুমুল জনপ্রিয় গান লিখে শ্রোতাপ্রিয় গীতিকার হিসেবে ব্যাপকভাবেই পরিচিতি লাভ করেছেন তিনি।
পাশাপাশি ব্যান্ডশিল্পী হাসান ও বিপ্লবের জন্য রনিমের লেখা একাধিক গানও জনপ্রিয়তা পায় ওই সময়গুলোর মাঝেই। সেই সূত্র ধরে তিনি বলেন, ‘আমি গীতিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার অনেক পরেই ২০০৬ সালের দিকে মাইলসের জন্য গানগুলি লিখেছিলাম।’
এলএ/এমএস