মন্দিরার নাচে মুগ্ধ সজল
গ্রামের চঞ্চলা কিশোরী মন্দিরা। দু চোখ ভরা তার স্বপ্ন আকাশ ছোঁয়ার। মানুষে মানুষে স্বপ্নের অনেক ভিন্নতা। মন্দিরা স্বপ্ন দেখে নাচ নিয়ে। ঘুঙুর পায়ে সে নাচবে, মাতিয়ে দেবে সব। টিভিতে নাচের অনুষ্ঠান দেখে দেখে সেও চেষ্টা করে। বাবা-মাকে সে নাচ শেখার ইচ্ছের কথা জানায়।
সেখানেই বাঁধে যতো বিপত্তি। বাবা কিছুতেই তাকে নাচতে দেবে না। তার মেয়ে নেচে নেচে মানুষের মনোরঞ্জন করবে, সেটা একদমই পছন্দ নয় তার। মন খারাপি নিয়ে দিন কাটে মন্দিরার। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে অনেক মন্দিরাকেই থেমে যেতে হয় প্রতিভা বিকাশের প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়ে।
তবে মন্দিরা চেষ্টা করতে থাকে নিজে নিজে। লুকিয়ে লুকিয়ে নাচে সে, সুযোগ পেলেই। কখনো এ বাড়ি থেকে ও বাড়ি যাবার পথে। কখনো স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে। রোজকার নিয়মে একদিন এক বাগানে নাচের তালে মেতে উঠেছিলো মন্দিরা। দূর থেকে সেই নাচ চোখে পড় গ্রামেরই যুবক সজলের। সে কাছে এসে মগ্ন হয়ে থাকে। সজলের চোখে চোখ পড়তেই আতংক আর লজ্জায় গুটিয়ে যায় শাসনের বেড়াজালে অভ্যস্ত মন্দিরা।
এগিয়ে আসেন সজল, অভয় দেন। প্রশংসা করেন নাচের। নিজেকে দাবি করেন মন্দিরার একমাত্র দর্শক হিসেবে। শুরু হয় কিশোরী মন্দিরার নতুন অনুভূতির দিনযাপন। একটা সময় সবকিছুই মলিন হয়ে আসে। গল্পের শেষে দর্শকের মন হু হু করে উঠবে বিষাদ-বেদনায়। যেখানে মার খেয়ে যায় ভালোবাসা, রক্তাক্ত হয় নারীর স্বপ্নরা।
এমনই এক চমৎকোর বোধ ও অনুভবের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে এক ঘণ্টার নাটক ‘ঘুঙুর’। শাহজাদা মামুনের রচনা ও পরিচালনায় নাটকটিতে জুটি হয়ে অভিনয় করেছেন ছোট পর্দার সুপারস্টার সজল ও চ্যানেল আইয়ের সেরা নাচিয়ের ২০১২ সালের দ্বিতীয় রানার আপ মন্দিরা চক্রবর্তী।
সম্প্রতি নাটকটির শুটিং হয়েছে গাজীপুরের কালিগঞ্জ উপজেলার উলুখলার মনোরম লোকেশনে। টানা দুইদিন শুটিংয়ে শেষ হয়েছে প্রায় আশি ভাগ নাটকের কাজ। নির্মাতা জানালেন, শিগগিরই আর একদিনের দৃশ্যায়ণের জন্য উলুখলায় পাড়ি জমাবেন।
নাটকের নির্মাণ ভাবনা নিয়ে শাহজাদা মামুন বলেন, ‘সমাজে নারীরা পারিবারিকভাবেই নানা রকম প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়। যার ফলে অনেক স্বপ্নই মরে যায় অকালে। পাশাপাশি একটি মেয়ে তার বাবার বাড়িতে যে স্বাধীনতা নিয়ে থাকতে পারে, স্বামীর বাড়িতে গেলে তাকে অনেক শাসনের গণ্ডির মধ্যে থাকতে হয়। এতে স্বাভাবিক জীবন যাপন ব্যাহত হয়। নারীর প্রতি শক্ত সমর্থনের ভাবনায় আমি নাটকটি নির্মাণ করেছি। আশা করছি বিনোদনের পাশাপাশি এতে চমৎকার বার্তা পাবেন দর্শক।’
তিনি আরও বলেন, ‘সজল আমাদের দেশে এক ঘণ্টা নাটকের সুপারস্টার। তিনি ধারাবাহিকে অভিনয় করেন না। তাকে নিয়ে কাজ করতে সবসময়ই আনন্দ পাই। এই নাটকেও তার চরিত্রটি উপভোগ্য হবে।’
অভিনেতা সজল বলেন, ‘চমৎকার একটি গল্প নিয়ে নাটকটি নির্মিত হয়েছে। ভিন্ন ভাবনার নাটক, ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে চেনা গণ্ডিকে তালাশ করার নাটক। কাজ করে খুব তৃপ্তি পেয়েছি। আরও কিছু কাজ বাকী আছে। শিগগিরিই শেষ করে নাটকটি প্রচারে আসবে। দর্শকদের জন্য নতুন বছরে বিশেষ উপহার হিসেবে ‘ঘুঙুর’-কে রাখলাম।’
মন্দিরা বলেন, ‘আমার জন্য দারুণ একটি সুযোগ বলবো এই নাটকটিকে। নিজের মতো একটি চরিত্র পেয়েছি। আমি নৃত্যশিল্পী। নাটকেও নাচের প্রতি আমার ভালো লাগার চিত্রায়ণ। পাশাপাশি নাটকের বার্তাগুলোও সুন্দর। সবমিলিয়ে নাটকটি দর্শকের মনে দাগ কাটবে বলে আমি আশাবাদী।’
নির্মাতা শাহজাদা মামুন জানালেন, শিগগিরই নাটকটি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচার হবে।
এলএ/পিআর