অপূর্বকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছেন তৃষা!
গল্পে আছে অপূর্ব ভীষণ সৎ ছেলে। তার প্রেমিকার নাম তৃষা। সে কলেজের শিক্ষার্থী। ক্লাস সিক্সে পড়ার সময় থেকেই তৃষা পছন্দ করেন অপূর্বকে। ভীষণ ভালোবাসেন। একদিন হঠাৎ ক্লাস ফাঁকি দিয়ে অপূর্বর সঙ্গে দেখা করতে লেক পাড়ে দেখা করতে এসেছেন তৃষা। মন খারাপ করে অপূর্বকে জানান, তার বিয়ে হতে যাচ্ছে শিগগিরই। অপূর্ব শুনে প্রথমে বিস্মিত হন। কারণ তিনি মনে করেছিলেন, তৃষার বিয়েটা তার সঙ্গেই হবে।
কাঁদতে কাঁদতে তৃষা জানান, তারা বাবা বিয়ে ঠিক করেছে বিদেশ থাকে এক ছেলের সঙ্গে। অপূর্ব একথা শোনার পরও পাত্তা দেননি। কারণ তিনি জানেন, তৃষা নাবালিকা। বিয়ের বয়স তার হয়নি। অল্প বয়সে বিয়ে হলে তার বাবা আইনি ঝামেলায় পড়বেন। এরপর তৃষা তাকে চোখ মোটা করে বলেন, তার বাবা মামলার ভয় পায় না।
এই অবস্থায় অপূর্বকে বিয়ে জন্য চাপ দিতে থাকে! ওইসময়ই কাজী অফিসে নিয়ে বিয়ে করতে চায় অপূর্বকে। কিন্তু অপূর্ব ভীষণ ভিতু। বিয়ের পর কোনো ঝামেলা পড়তে হয় কিনা সেই ভয় তার মধ্যে কাজ করে। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, বিয়ে করা তার পক্ষে সম্ভব নয়।
জানান, তৃষার সঙ্গে প্রেম করে একটা ‘রামধরা’ খেয়েছেন তিনি! একথা শোনার পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। তৃষার চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়তে থাকে।
কিন্ত চোখে পানি নিয়েই তৃষা হেসে উঠলেন। হাসলেন অপূর্বও। খানিক দূরে ই কুটিকুটি! পাশ থেকে নির্মাতা মাবরুর রশিদ বান্নাহও হো হো করে হেসে উঠলেন! শট ভালোই চলছিল। বিপত্তি বাঁধে অপূর্বর সংলাপ শেষে দুজনার হাসাহাসিতে। এরপর অপূর্ব চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে নিজেকে আবার প্রস্তুত করে নিলেন। তৃষাকে মনোযোগ দিতে বলে নির্মাতা মুখ গুজলেন মনিটরে।
রাস্তার দুপাশ থেকে ও পাশে বাড়িগুলো থেকে উঁকি দিয়ে আছে লোকজন। গতকাল সোমবার বিকেলে উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের লেকভিউ হাসপাতালের কোল ঘেঁষে যাওয়া লেকপাড়ের রাস্তায় সবাই আগ্রহ নিয়েই নাটকের শুটিং দেখছেন। নাটকের নাম ‘লোকটি সৎ ছিলো।’
নির্মাতা বান্নাহর জাগো নিউজকে তিনি বললেন, ‘আজই (গতকাল) শুটিং শেষ হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘অপূর্ব ভাইয়ের সঙ্গে খুব বেশি কাজ করেছি তা নয়। অল্পকিছু কাজ করলেও চেষ্টা করেছি ভ্যারিয়েশন রাখার। সম্প্রতি অপূর্ব ভাই অনেক আলোচিত কিছু কাজ করেছেন। সেই জায়গা থেকে তাকে নতুনভাবে হাজির করার চেষ্টা করেছি।’
এই গল্পটা ‘মধ্যবিত্তের না’ বলে উল্লেখ করলেন নির্মাতা বান্নাহ। তিনি বলতে চাইলেন এটা ‘সৎ’ মানুষের গল্প। তার মতে, এত বছর ধরে যেসব নাটক নির্মাণ করে আসছি এসবই মধ্যবিত্তের নাটক। টেলিভিশন রিপ্রেজেন্টই করে মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে। এই মধ্যবিত্তকে নাটকের মাধ্যমে জয় করেছিলেন প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদ স্যার।
তিনি এই কালচারটা শুরু করেছিলেন। তার এইসব দিনরাত্রি, আজ রবিবার, বহুব্রীহি ইত্যাদি কাজগুলো ছিল মাইলফলক। এরপর সিক্সটি নাইন, হাউজফুল, এফএনএফ, বন্ধন ইত্যাদি কাজগুলো মধ্যবিত্তের বড় উদাহরণ। তাই আমি মনে করি আমার এবারের গল্পটা হচ্ছে সৎ এবং অসতের দ্বন্দ্ব নিয়ে। এখানে ফ্যামিলি রিলেশন রয়েছে। এছাড়া এই সময়ে একটা মানুষের সৎ থাকাটা কতটা কষ্টের বিষয় সেটাই এই গল্পে দেখানো হয়েছে।’
নাটকটি নিয়ে অপূর্ব জাগো নিউজকে বলেন, ‘নিজের আত্মতৃপ্তির জায়গা থেকে বলছি খুব ভালো একটি কাজ হতে যাচ্ছে ‘লোকটি সৎ ছিল’ নাটকটি। আমি আমার দিক থেকে সেরা কাজ দেয়ার চেষ্টা করছি। আশা করছি প্রচার হলে ভালো সাড়া মিলবে। তাছাড়া নির্মাতা বান্নাহ সবসময় নতুন কনসেপ্ট নিয়ে আসে। এবারও তাই হয়েছে।’
এই নাটকের মাধ্যমে প্রথমবার অপূর্বের সঙ্গে জুটিও বেঁধে অভিনয় করছেন তৃষা, যার পুরো নাম ইফফাত তৃষা। তিনি বললেন, ‘অপূর্ব ভাইয়ের সঙ্গে প্রথমবার কাজ করলাম। উনি খুব সহযোগিতা করছেন।’
‘লোকটি সৎ ছিল’ নাটকের মূল গল্প মাহতাব হোসেনের। এর চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করেছেন মাবরুর রশিদ বান্নাহ। অন্যান্য চরিত্রে আরো অভিনয় করেছেন সিয়াম নাসির, প্রনীল, শোয়েব মুনির, রিকি খান প্রমুখ।
নির্মাতা জানালেন, শিগগির নাটকটি একটি বেসরকারি চ্যানেলে প্রচার হবে।
এনই/এলএ/এমএস