ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিনোদন

প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চান নাট্য নির্মাতা মতিউর রহমান গাজীপুরী

জেলা প্রতিনিধি | গাজীপুর | প্রকাশিত: ১১:২৯ এএম, ১৯ অক্টোবর ২০১৭

গাজীপুরের খ্যাতিমান নাট্যকার ও নির্মাতা মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান গাজীপুরী গুরুতর অসুস্থ। অর্থ সংকটে চিকিৎসা করাতে না পেরে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের পোড়াবাড়ির নিজ বাড়িতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি।

তার পরিবার জানায়, ওপেন হার্ট সার্জারি করা এ নাট্যনির্মিতার দেহের দুটি কিডনিই প্রায় অকেজো। সেই সাথে বাসা বেঁধেছে ডায়াবেটিকস।

চিকিৎসার অভাবে গাজীপুরী দিন দিন শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছেন। চিকিৎসক তাকে জানিয়েছেন, ভারতে তার উন্নত চিকিৎসা রয়েছে। এ জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, তা তার নেই। তাই অচিরেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে চান তিনি। সুস্থ হয়ে আবারও রচনা ও পরিচালনা করতে চান নতুন নতুন নাটক।

মতিউর রহমান গাজীপুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনায় মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করে ১৯৮০ সালে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন গাজীপুর শহরের কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে। নাটকের টানে বেশিদিন অধ্যাপনায় থাকতে পারেননি। প্রখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্ব আবদুল্লাহ-আল-মামুনের মাধ্যমে নাটক লেখা ও নির্মাণের প্রশিক্ষণের সুযোগ পান বিটিভির সাবেক প্রযোজক আবু জাফর সিদ্দিকীর কাছে। তার লেখা প্রথম নাটক ‘জীবন যেমন’ ব্যাপক দর্শকপ্রিয়তা পায়।

ওই নাটকে অভিনয় করেন জাহিদ হাসান, ডা. এজাজ আহমেদ, লুনা, ডলি জহুর, জহুর চৌধুরী, লাকী ইনাম, কাজী আসাদ, সালেহ আহমেদ প্রমুখ। এ নাটকের মাধ্যমেই প্রথম টিভি নাটকে অভিনয় করেন জাহিদ হাসান। প্রথম নাটকের সফলতার পর বিটিভিতে প্রচার হয় তার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক নাটক ‘শ্রাবণে বসন্তে’। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

গাজীপুরী জানান, দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। গাজীপুর সমরাস্ত্র কারখানা থেকে একটি চাইনিজ রাইফেল ও ২০০ রাউন্ড গুলি নিয়ে জুলাই মাসের শুরুতে যুদ্ধে যোগ দেন। গাজীপুরের পিরুজালী এলাকার মতিউর রহমানের মাধ্যমে যান ১১ নং সেক্টরের ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক মেজর আবদুল হাকিমের কাছে। তখন ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অবস্থান ছিল কালিয়াকৈরের ফুলবাড়িয়ায়।

সব শুনে মেজর বলেছিলেন, ‘তোমার ভারত যাওয়া দরকার নেই। শর্ট ট্রেনিং নিয়ে আমাকে টুআইসি’র (শত্রুর খবরাখবর সংগ্রহ) কাজ করে দাও।’ কঠিন হলেও নিষ্ঠার সাথে তিনি ওই কাজ করেছেন। দেশ স্বাধীন হলে গাজীপুর সদরের কমান্ডার মো. নোয়াব আলীর কাছে রাইফেল জমা দেন। তিনি বহুবার মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন করতে বলেছিলেন। তিনি করেননি। এটি ছিল জীবনের আরেক ভুল।

বহু সফল নাটকের রচয়িতা ও নিমার্তা গাজীপুরী ২০০৮ সালে প্রথম হৃদরোগে আক্রান্ত হন। ২০১২ সালের শেষ দিকে হঠাৎ ডায়াবেটিস বেড়ে যায়। এরপর ধরা পরে কিডনি রোগ। স্ত্রীও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। অসুখের সাথে একের পর এক লড়াই করে এখন প্রায় অনেকটাই নিস্ব গাজীপুরী।

দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে কলেজ শিক্ষক। ছোট ছেলে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ’এর ছাত্র। চিকিৎসা, ছোট ছেলের লেখাপড়া ও সংসার খরচ সব কিছুই বড় ছেলের একার আয়ে চলে। চিকিৎসার অভাবে ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছেন তিনি। অথচ তার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা করা গেলে আগের মতোই সুস্থ হয়ে কাজে ফিরতে পারবে।

তিনি প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চান নিজের চিকিৎসার জন্য। তার বিশ্বাস, সংস্কৃতিমনা এ সরকারপ্রধান নিশ্চয়ই তার মতো অসহায় শিল্পীর পাশে দাঁড়াবেন।

মো. আমিনুল ইসলাম/এলএ

আরও পড়ুন