অসুস্থ খালেদা আক্তার কল্পনা : প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য কামনা
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী খালেদা আক্তার কল্পনা পাঁচ শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। বর্ণিল ক্যারিয়ারে শতাধিক নাটকেও অভিনয় করেছেন। জীবন সায়াহ্নে এসে গুণী এই অভিনেত্রী এখন বেকার! তার হাতে কোনো কাজ নেই। শুধু তাই নয়, অসুস্থ হয়ে বাসায় দিন পার করছেন।
খালেদা আক্তার কল্পনার ডান চোখে গ্লুকোমা, রেটিনায় রক্তপাত আর কর্নিয়ার আলসার থেকে ইনফেকশন হয়ে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। শুধু বাম চোখ দিয়ে দেখছেন। ঢাকায় চিকিৎসা নেয়ার পর চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য চেন্নাই থেকে ছানি অপারেশনও করিয়েছেন তিনবার। এরপর কলকাতার শঙ্কর নেত্রালয়ে প্রতি চার মাস পর চিকিৎসা করালেও ডায়াবেটিস থাকায় এই চিকিৎসা দীর্ঘস্থায়ী ও ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে। যেটি ব্যয়ভার তিনি বহন করতে পারছেন না।
অসুস্থতা সম্পর্কে খালেদা আক্তার কল্পনা জাগো নিউজকে বলেন, ‘আগামী ২৩ অক্টোবর আবার চিকিৎসা নিতে কলকাতা যাব। প্রতিবার যাওয়া-আসা, চিকিৎসা এবং ওষুধ বাবদ অনেক টাকা খরচ হয়। যেটা আমার পক্ষে বহন করা এখন কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।’
খালেদা আক্তার বলেন, ‘পুরো সংসারটা আমার কাঁধে। আমার ছোট ভাইকে সন্ত্রাসীরা গুলি করায় তার হাত কেটে ফেলতে হয়েছে, আরেক ভাই কিডনির সমস্যা মারা গেছে। ওদের চিকিৎসার সব খরচ আমি চালিয়েছি। এখন আর এই ভার টানতে পারছি না। তাছাড়া আমার মাও অসুস্থ। ওনার জন্য অনেক টাকা ব্যয় হচ্ছে। একজন লোক রাখা হয়েছে তাকে দেখভালের জন্য। সমস্যা হতো না যদি অামার হাতে কাজ থাকত। অসুস্থতার জন্য কোনো কাজই করতে পারি না। এতো অর্থ পাব কোথায়?’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার আর্থিক অবস্থা এতো খারাপ ছিল না। আমি একটা চলচ্চিত্রও প্রযোজনা করেছিলাম। কিন্তু লগ্নিকৃত অর্থ ফেরত পাইনি। সেখানে একটা বড় অ্যামাউন্ট লস করি। এরপর সংসারের এতগুলো মানুষ আমার দিকে চেয়ে থাকে। ওদের সব দায়িত্ব আমি নিয়েছি। এরপর হঠাৎ আমি অসুস্থ হয়ে পড়ায় কাজ কমে যায়। তারপর থেকেই আমি আর্থিক সঙ্কটে পড়ি।’
এই অভিনেত্রী বলেন, ‘সুস্থ হলে আমি আবারো কাজে ফিরতে পারব। সেই মনোবল আমার আছে। কিন্তু চোখের অসুবিধায় কাজ করতে পারছি না। উন্নত চিকিৎসা না নিলে চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু এতো টাকা আমার কাছে নেই।’
তিনি বলেন, ‘অনেকে মনে করবেন ৫০০ ছবিতে কাজ করেও অর্থ সংকট হয় কীভাবে? কিন্তু আমার পরিবারের হাল ধরতে গিয়ে সব শেষ হয়ে গেছে। আর হাতে কোনো কাজ নেই। সেজন্য আমার আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘আমার প্রধানমন্ত্রী হলেন শিল্পীবান্ধব প্রধানমন্ত্রী। তিনি অসহায় শিল্পীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সবসময়। আমি উপায় না পেয়ে এখন তার সহায়তা কামনা করছি। তিনি আর্থিকভাবে সহায়তা করলে হয়তো আমি সুস্থ হয়ে কাজে ফিরতে পারব। আশাকরি তিনি আমাকে এই দুঃসহ অবস্থা থেকে ফিরতে সহায়তা করবেন। আমি তার কাছে এভাবে সাহায্য চাইব- কখনো ভাবতে পারিনি।’
এনই/এসইউ/পিআর