যৌথ প্রযোজনায় নির্মাণাধীন ছবিগুলোর ভবিষ্যৎ কী?
তথ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চলচ্চিত্র পরিবারের একটি জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় গেল ৯ জুলাই। সেই বৈঠক শেষে তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, নতুন নীতিমালা না হওয়া পর্যন্ত যৌথ প্রযোজনায় চলচ্চিত্র নির্মাণ-সম্পর্কিত কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। নতুন নীতিমালা নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক হারুন-অর-রশীদের নেতৃত্বে একটি কমিটি বানানো হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের পর অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে, তাহলে যৌথ প্রযোজনায় এরই মধ্যে যেসব সিনেমার শুটিং শেষ হয়েছে ও নির্মাণাধীন ছবিগুলোর ভবিষ্যৎ কী?
বিষয়টি নিয়ে সব ভাবনা স্পষ্ট করলেন বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহা পরিচালক হারুন-অর-রশীদ। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘যেসব সিনেমার অনুমতি দেওয়া আছে সেগুলোর শুটিং চলবে। আর যেগুলোর শুটিং শেষ হয়েছে সেগুলো যথানিয়মেই মুক্তি পাবে। এসব নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’
যৌথ প্রযোজনার নামে যৌথ প্রতারণা হচ্ছে- এমন দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবার। চলচ্চিত্রশিল্পী, পরিচালক, প্রযোজক ও কলাকুশলীদের একটি প্রতিনিধিদল গত রোববার দেখা করে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে। সেখানে দ্রুত কয়েকটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই দিনই আলোচনার ভিত্তিতে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
হারুন অর রশিদ বলেন, ‘পরবর্তী সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত যৌথ প্রযোজনা-সম্পর্কিত বর্তমান যে প্রিভিউ কমিটি তার সব কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। আশা করছি, মাসখানেকের মধ্যে আমরা কমিটি পুনর্গঠন করে নতুন নীতিমালা চূড়ান্ত করতে পারবো। বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক হারুন-অর-রশীদ আরও জানান, ‘আপাতত যৌথ প্রযোজনার নতুন কোনো ছবি নির্মাণের জন্য আবেদন করা যাবে না।’
যৌথ প্রযোজনায় এরই মধ্যে বেশ কটি সিনেমার নির্মাণ শেষ হয়েছে। এ তালিকায় আছে শাকিব খানের ‘রংবাজ’। এখানে তার নায়িকা বুবলী। আরও আছে মোস্তফা সরোয়ার ফারুকীর ‘ডুব’। তবে এই ছবিটিকে তথ্য মন্ত্রণালায় সবরকম মুক্তিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এদিকে শুটিং চলছে নাম ঠিক না হওয়া রাজিব বিশ্বাস পরিচালিত একটি ছবির। এখানে শাকিবের কলকাতার দুই নায়িকা নুসরাত জাহান ও সায়ন্তিকা। আরও আছে জাজের প্রযোজনায় ‘ইয়েতি অভিযান’, ‘ওলট পালট’, ‘নূর জাহান’ এবং অনন্য মামুনের পরিচালনায় যৌথ প্রযোজনার আরেক ছবি শাকিব-শুভশ্রী জুটির ‘চালবাজ’।
এই ছবিগুলোর মুক্তির অনুমতি থাকার ব্যাপারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে চলচ্চিত্র পাড়ায়। অনেকেই বলছেন, অনিয়ম করে এতগুলো ছবি যদি মুক্তিই পেয়ে যায় তবে আর আন্দোলন বা তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মিটিং করে কী লাভ হলো। যারা অন্যায় করেছে তাদেরকে এখানে থামানো প্রয়োজন। তারা দিনের পর দিন অবৈধভাবে মুনাফা করেছে। তার মাশুল হিসেবে কিছুটা আর্থিক ক্ষতি তাদের প্রাপ্য। নির্মাণাধীন ছবিগুলোর অনুমতি বা মুক্তির ব্যাপারটি কী চলচ্চিত্র পরিবার ওই বৈঠকে মেনে নিয়েছেন? এই প্রশ্নের জবাবে বিটিভর মহাপরিচালক হারুন অর রশিদ বলেন, ‘ওই সময়টাতে আমি বৈঠকে ছিলাম না। তবে আমি শুনেছি এই বিষয় নিয়ে কথা উঠেছে এবং চলচ্চিত্র পরিবার তথ্য মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন।’
এনই/এলএ/এমএস