দাম্পত্য জীবনের রজত জয়ন্তীতে আসিফ আকবর
বাংলা গানের যুবরাজ বলা হয় কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরকে। মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি এক নন্দিত নাম। মিউজিক ক্যারিয়ারের প্রথম অ্যালবাম ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ দিয়েই তিনি বাজিমাৎ করেন। এরপর রেকর্ড পরিমাণ ব্যবসা সফল অ্যালবামে কণ্ঠ দিয়েছেন আসিফ।
একক ও মিশ্র মিলিয়ে প্রায় দেড় শতাধিক অ্যালবাম প্রকাশ পেয়েছে তার গাওয়া গান নিয়ে। শুধু অ্যালবাম নয়, চলচ্চিত্রের গানেও সফল আসিফ আকবর। সংগীতাঙ্গনে আসিফ যেমন এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, তেমনি বাস্তব জীবনে দারুণ সাংসারিক আর কর্তব্যপরায়ণ একজন মানুষ। আজ তার সংসার জীবনের ২৫ বছর (রজত জয়ন্তী) পূর্ণ হলো। তার স্ত্রী বেগম সালমা আসিফ (মিতু)।
তিন বছরের প্রেম শেষে ১৯৯২ সালের ১০ জুলাই মিতুকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করেন আসিফ। দাম্পত্য জীবনের প্রথমে নানা চড়াই-উৎরাই পার করেছেন তারা। কিন্তু ভালোবাসার অপার্থিব শক্তিতে বলীয়ান এ দম্পতি থেকেছেন অবিচল। সব বাঁধাবিপত্তি অতিক্রম করে আজ তারা আদর্শ দম্পতি।
ঘর আলো করে রেখেছে তাদের দুই পুত্র রণ ও রুদ্র। আজকাল তাদের নিয়েই এই দম্পতির সবকিছু আবর্তিত হয়। স্বপ্ন দেখেন ছেলেরা মানুষের মতো মানুষ হবে। উজ্জ্বল করবে দেশ ও দশের মুখ- জাগো নিউজকে এভাবেই আজকের অনুভূতি জানালেন আসিফ আকবর।
বললেন, দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনে আসিফ-মিতু দুজনেই তাদের ভালোবাসার সংসার টিকিয়ে রাখতে সতর্ক থেকেছেন। চেষ্টা করেছেন কোন অশুভ শক্তি যেন তাদের আলাদা করতে না পারে। নিজেদের প্রতি আস্থা আর ভালোবাসায় আজ তারা ২৫ বছরের সোনালি অধ্যায়ের যাত্রী।
আসিফের সহধর্মিণী মিতু বলেন, ‘আমরা একে অপরকে ভালোবেসে বিয়ে করেছি। শুরুর দিনগুলো আজকের মতো এতো সুন্দর আর মোলায়েম ছিলো না। প্রেমের নৌকায় তবুও সুখের বন্দরে পৌঁছাবো বলে পাল তুলেছিলাম। আমরা মহান আল্লাহর প্রতি আস্থা রেখে নিজেদের বিশ্বাসের প্রতি অবিচল ছিলাম। দুজনই অনেক কষ্ট করেছি। আজ মহান আল্লাহর অসীম রহমত আর আমাদের বাবা-মায়ের দোয়া, শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভালোবাসা এবং দুই সন্তানের নিষ্পাপ মুখ আমাদের সুখী করেছে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমরা দুজন দুজনের পাশে থাকবো এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।’
গান করার পাশাপাশি একজন রাজনীতি সচেতন মানুষ হিসেবেও আসিফ আকবরের জনপ্রিয়তা আছে। তাকে দেখা যায় শিল্পের নানা অঙ্গনের মানুষদের বিপদের দিনে এগিয়ে যেতে। একজন সংগঠক হিসেবেও তিনি বেশ জনপ্রিয়। গানের ভুবনে সিনিয়র ও জুনিয়র সবার সঙ্গেই তার সখ্যতা। সংগীতশিল্পীদের স্বাধীনতা, অধিকার আদায় নিয়ে বরাবরই সোচ্চার স্পষ্টভাষী এই গায়ক।
একজন ক্রিকেট পাগল মানুষও আসিফ আকবর। কৈশোর ও যৌবনে ব্যাট ও বল হাতে একজন অলরাউন্ডার ক্রিকেটার হিসেবে অনেক সম্ভাবনাই জন্ম দিয়েছিলেন তিনি। জীবনের বৈরী আচরণের শিকার না হলে দেশ হয়তো একজন তারকা ক্রিকেটার আসিফ আকবরকেই পেতো। ক্রিকেটের প্রতি ভালো লাগা থেকেই ‘বেশ বেশ বেশ-সাবাশ বাংলাদেশ’ শিরোনামের একটি গানও গেয়েছেন তিনি ক্রিকেট নিয়ে। সেই গানটি এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি ক্রিকেটপ্রেমীদের সেরা পছন্দের গান।
সরাসরি না খেললেও ক্রিকেট নিয়ে মাতামাতি করতে ভুলেন না। দলকে সমর্থন দিতে ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করেন দেশ-বিদেশের মাঠে। বাংলাদেশে খেলে এমন সিরিজ বা টুর্নামেন্ট চলাকালীন সময়ে গেল বছর থেকে নিয়মিত লিখছেন ক্রিকেট নিয়ে অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগো নিউজে।
ভালোবাসার মুগ্ধতা নিয়ে এভাবেই কেটে যাক এই দম্পতির জীবনে আরও অনেক বসন্ত। হৈ চৈ করে আনন্দের মহামঞ্চে দাম্পত্যের হাফসেঞ্চুরি করবেন, ছাড়িয়ে যাবেন আরও অনেক মাইলফলক ক্রিকেট পাগল গানের মানুষ আসিফ আকবর; সেই প্রত্যাশা রইলো। জাগো নিউজের পক্ষে থেকে আসিফ-মিতু দম্পতিকে অভিনন্দন।
এনই/এলএ