প্রধানমন্ত্রীর কাছে চলচ্চিত্রের নবীন শিল্পীদের প্রত্যাশা
যৌথ প্রযোজনার নাম করে যৌথ প্রতারণার আধিপত্য শুরু হয়েছে। কৌশলে বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশ করনো হচ্ছে কলকাতার ছবি। এই অভিযোগ নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতিসহ ১৭ সংগঠনের ঐক্যজোটের চলচ্চিত্র পরিবার।
ঈদের আগে যৌথ প্রযোজনার নিয়ম না মেনে নির্মাণ হওয়া জাজের ব্যানারে ‘বস ২’ ও ‘নবাব’ ছবি দু’টোর সেন্সর না দিতে দাবি করে আন্দোলনকারীরা। কিন্তু সেই দাবিকে উপেক্ষা করেই ছবি দুটো ঈদে মুক্তি পেয়েছে।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর বিশেষ বিবেচনাতেই ছবিগুলো মুক্তি পেয়েছে। এরপর কিছু টেলিভিশনের অনুষ্ঠানেও মন্ত্রী ছবিগুলো যৌথ প্রযোজনার নিয়ম মেনেই নির্মিত হয়েছে বলে দাবি করেন। এতে করে যৌথ প্রতারণা নিয়ে মন্ত্রীর অবস্থান ও মন্তব্যের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন চলচ্চিত্র পরিবারের নেতাকর্মীরা।
বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছে আন্দোলনকারীরা। তারা এরইমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাতের অনুমতি চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সেই আবেদন জমা পড়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। দেশনেত্রীর কাছে নিজেদের দাবি উপস্থাপনের পাশাপাশি চলচ্চিত্রের স্বার্থে যার যার চাওয়া তুলে ধরেছেন ঢাকাই ছবির কয়েকজন তারকা।
এ নিয়ে চিত্রনায়ক বাপ্পী চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, ‘চলচ্চিত্র পরিবারের সঙ্গে স্বশরীরে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে চাই। কথা বলতে চাই। কারণ আমি একজন শিল্পী। চলচ্চিত্র না বাঁচলে শিল্পীরাও বাঁচবে না। আমাদের চলচ্চিত্র যেসব সমস্যায় জর্জরিত, প্রধানমন্ত্রী একবার সুনজর দিলেই সব পরিস্কার হয়তে যাবে। সাফটা চুক্তি, যৌথ প্রযোজনা সবকিছুতেই সমস্যা আছে। এইসব সমস্যা দূর করতে প্রধানমন্ত্রীর তদারকি চাই।’
চিত্রনায়ক নিরব বলেন, ‘একজন চলচ্চিত্রের শিল্পী হিসেবে আমি চাই প্রধানমন্ত্রী এই সেক্টরে নজর দেবেন। তিনি চাইলে সবকিছু সম্ভব। দেশনেত্রীর কাছে আমার চাওয়া তিনি হল সংস্কারে নজর দেবেন। নতুন শপিংমলে সিনেপ্লেক্স নির্মাণ নিশ্চিত করবেন। দর্শকরা এখন যুগোপযুগী চিন্তাধারা বহন করেন। আমাদের এখানে দর্শকদের রুচি-চাহিদার কথা বিচার করে নির্মাতাদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দেবেন। এছাড়া এফডিসির শুটিং কিংবা অন্যন্য খরচ কমানোর জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছি।’
চিত্রনায়িকা তানহা তাসনিয়া বলেন, ‘চলচ্চিত্রে আমি নবীন। তারপরও যা বুঝেছি আমাদের ফিল্মে অনেক সমস্যা আছে। যৌথ প্রযোজনার ছবি নির্মাণে দেখা যায় ছবি পোস্টারে এক দেশ অন্য দেশকে গুরুত্ব দেয় না। কেন এটা হবে? যৌথ প্রযোজনার কোন ছবি ভারতে মুক্তি দেয়া হলে সেখানে বাংলাদেশের শিল্পীর ছবি খুজে পাওয়া যায় না। অনিয়ম করে নয়, নিয়ম মাফিক যৌথ প্রযোজনায় ছবি নির্মিত হোক। তাছাড়া কলকাতার ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা খুবই খারাপ। তালিম আর হিন্দি ছবির দাফটে তারা কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। সেজন্য কলকাতার ওরা বাংলাদেশের বাজার ধরতে চাচ্ছে। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই, আপনি এদিকে সুদৃষ্টি দেবেন।’
নবীন চলচ্চিত্র অভিনেতা শান আরাফ বলেন, ‘যৌথ প্রযোজনার নামে প্রতারণা এবং সিনেমা হলের প্রজেক্টর সমস্যা সমাধানের সাথে সাথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করে আমাদের চলচ্চিত্রের জন্য সেন্ট্রাল সার্ভার, সিনেমা হলে ই-টিকেটিং সিস্টেম চালু, প্রত্যেক থানায় থানায় নতুন সিনেপ্লেক্স নির্মাণ এবং বিএফডিসির আধুনিকায়নের জন্য যা যা করা লাগে তার সবকিছু ব্যবস্থা করতে। আমার অনুরোধ রইলো চলচ্চিত্র পরিবারের সংশ্লিষ্ট শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিদের সবার কাছে যারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে যাবেন।’
এনই/এলএ/এমএস