ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিনোদন

ওরা ১১ জন চলচ্চিত্রের শিল্পী ও কুশলীরা সম্মাননা নিলেন

প্রকাশিত: ১০:৩১ এএম, ২৫ মে ২০১৭

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধের ছবি ‘ওরা ১১ জন’। ছবিটির শিল্পী ও কুশলীদের সম্মাননা দিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ) বেলা ১টায় এফডিসির জহির রায়হান কালার ল্যাবে এ সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে সম্মাননাপ্রাপ্তরা হলেন- ছবির অভিনয়শিল্পী খসরু, সৈয়দ হাসান ইমাম, মিরানা জামান, নায়ক রাজ রাজ্জাক, সংলাপ লেখক ও অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান,  নূতন, কাজী ফিরোজ রশীদ, ছবির পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার, প্রযোজক সোহেল রানা, চিত্রনাট্যকার কাজী আজিজ, পরিবেশক ইফখারুল আলম, প্রধান সহকারী পরিচালক শামসুল আলম।

এদের মধ্যে নায়ক রাজ রাজ্জাক, খসরু ও এটিএম শামসুজ্জামান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। তাদের সম্মাননা ক্রেস্ট ও উত্তরীয় বাসায় পৌঁছে দেবে পরিচালক সমিতি। আর প্রয়াত পরিচালক চাষী নজরুল ইসলামের হয়ে সম্মাননা গ্রহণ করেন তার স্ত্রী জোৎস্না কাজী।

11 jon 1

পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, বিশেষ অতিথি ছিলেন এফডিসির এমডি তপন কুমার ঘোষ ও মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ড. তৌফিক রহমান চেীধুরী।

নির্মাতা মোহাম্মদ হোসেন জেমীর উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা সওদাগর, পরিচালক সমিতির মহাসচিব বদিউল আলম খোকন, যুগ্ম মহাসচিব শাহীন সুমন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক শাহীন কবির টুটুল, কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য অপূর্ব রানা, নৃত্য পরিচালক সমিতির সভাপতি মাসুম বাবুল প্রমুখ।

আলোচনা পর্বে বক্তব্যে  ‘ওরা ১১ জন’র প্রযোজক মাসুদ পারভেজ তথা নায়ক সোহেল রানা বলেন, ‌‌‘মাছ বিক্রি করেও এই দেশে সিআইপি হয় অনেকে কিন্তু চলচ্চিত্র নির্মাণ করে কেউ হয় না। দেশ মুক্তির পর আমাদের স্বীকৃতি দেয়া হয়নি অথচ আমরা ঠিকই যুদ্ধ করেছি, জীবন বাজি রেখে তখন চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছি। ‘ওরা ১১ জন’ ছবিতে যারা কাজ করেছেন তার মধ্যে ৯৮ ভাগ লোক বিনা টাকায় কাজ করেছেন। আজকের এই মঞ্চে সে সময়কার এমন দু-একজন উপস্থিতও আছেন। এমনও দিন ছিল, তখন প্রযোজক হিসেবে আমি তাদের ভাত পর্যন্ত খাওয়াতে পারিনি। অথচ আমরা সেই যুদ্ধের স্বীকৃতিটটুকুও পাইনি। তবুও ভালো লাগছে এতদিন পর কেউ তো আমাদের সম্মান দেখাল।’

11 jon 2

সৈয়দ হাসান ইমাম বলেন, ‘পরিচালক সমিতিকে ধন্যবাদ তারা দেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করা একটি ছবিকে সম্মান জানাল। আমি খুবই আনন্দিত বোধ করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘যুদ্ধের পরপর বাণিজ্যিক ছবি না বানিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ছবি বানালেন চাষী। এ ছবির একজন আমি এখন ইতিহাসের সাক্ষী। অনেক স্মৃতি মনে পড়ছে। প্রায়ই মনে পড়ে। চোখ ভিজে যায় তখন।’

অভিনেত্রী নূতন বলেন, ‘এটা অনেক ভালো হতো যদি ‘ওরা ১১ জন’ ছবির সবাই জীবিত থাকতে এই সম্মাননা জানানো হতো। মৃত্যুর পর সম্মান দিয়ে কী হবে। আমি সৌভাগ্যবান যে বেঁচে থাকতেই সম্মান পেলাম। আমি এ ছবির সঙ্গে জড়িত সকল মানুষকে শ্রদ্ধা জানাই। যারা আজ আমাদের মাঝে নেই তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি।’

11 jon 3

চাষী নজরুল ইসলামের পক্ষে তার স্ত্রী জোৎস্না কাজী বলেন, ‘যুদ্ধের পর হঠাৎ করে একদল ছেলে মেয়েকে বাসায় এনে ছবি বানানোর যজ্ঞ শুরু হলো। শেষে ছবিটি যা দাঁড়াল তা দেখে চোখে পানি এসে গিয়েছিল। চাষীকে জড়িয়ে ধরেছিলাম।’

মিশা সওদাগর বলেন, ‘শ্রদ্ধা জানাই এ ছবির শিল্পী ও কলাকুশলীদের। তাদের দেখানো পথে আমরা চলতে চাই। সোনালি দিন ফিরিয়ে আনতে কাজ করতে চাই।’

নিজের বক্তব্য দিতে এসে চমৎকার এই আয়োজনের জন্য প্রধান অতিথি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ছবির কলাকুশলীদের আমার হাতে সম্মাননা জানাতে পারছি এজন্য গর্বিত আমি। যে সময়ের ছবি এটা সেসময়ের সাক্ষী আমি। স্বাধীনতা পরবর্তী অগোছালো সময়টায় এছবি নির্মাণ করেছিলেন পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম। তিনি আপাদমস্তক সাহসী মানুষ। তার প্রতি আমার শ্রদ্ধা।’

11 jon 4

মুশফিকুর রহমান গুলজার সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, ‘এ অনুষ্ঠানটি করার কথা ছিল মার্চে। কিন্তু নানা কারণে আমাদের দেরি হয়েছে। এজন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা এ ছবির দুই অভিনেতা খসরু সাহেব ও নায়ক রাজকে আমন্ত্রণ করেছিলাম। তাদের বাসায়ও গিয়েছি। তারা দুজনই অসুস্থ। তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আসতে পারেননি বলে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের চলচ্চিত্রের সঙ্গে জড়িত সোনার মানুষদের সম্মানিত করতে চাই। নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা দিতে চাই। তারা দেখুক একটা সময় আমরা কত শক্তিশালী আর মেধাবী মানুষদের চলচ্চিত্রাঙ্গনে কাজ করি।’

এলএ

আরও পড়ুন