ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিনোদন

পরিচালক সমিতি নিষিদ্ধ করলেও আমাদের যায় আসে না : সম্রাট

প্রকাশিত: ০৮:৫৪ এএম, ১৭ মে ২০১৭

‘শিল্পী সমিতির নির্বাচনের দিন (৫ মে) সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে আমি ও ভাইয়া (বাপ্পারাজ) ভোট দেয়ার জন্য এফডিসিতে যাই। কিন্তু মূল ফটকেই আমাদের গাড়ি আটকে দেয়া হয়। সেখানে দায়িত্বরত এক পুলিশ কনস্টেবল আমাদের চেনে না। সে বলে, গাড়ি নিয়ে ভেতরে যাওয়া যাবে না। যেতে হলে ওসি সাহেবের সঙ্গে কথা বলতে হবে, অনুমতি নিতে হবে। ঘণ্টা খানেক বাইরে গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করি। পরে অনেক কষ্ট করে আমরা ভিতরে যাই।’

জাগো নিউজকে অনেকটা ‘আক্ষেপ’ নিয়ে জানাচ্ছিলেন কিংবদন্তি অভিনেতা নায়ক রাজ রাজ্জাকের কনিষ্ঠপুত্র চিত্রনায়ক সম্রাট। তিনি বলেন, ‘যে এফডিসির জন্য আমার বাবা (রাজ রাজ্জাক) জীবনের অর্ধেকের বেশি সময় ব্যয় করেছেন, যে চলচ্চিত্রের জন্য আমরা দুই ভাই জীবনের ২০ থেকে ২৫টি বছর বাবাকে ঠিকমত কাছে পাইনি; সেই এফডিসিতে ভোট দিতে ঢুকতে যাওয়ার সময় বাঁধা দেয়া হলো আমাদের। এর চেয়ে বড় ‘অপমান’ আর কি হতে পারে? এত কড়াকড়ির পরও ভিতরে যে এত মানুষ ছিল তারা কারা? সবাই কি শিল্পী-ভোটার?’

গেল মাসে চিত্রনায়ক শাকিব খান একটি জাতীয় দৈনিকের সাক্ষাৎকারে পরিচালকদের ‘বেকার’ বলেছিলেন। এরপর শাকিব খানকে সাময়িক নিষিদ্ধ করা হলেও দু’দিন পর পরিচালক সমিতির সঙ্গে মিটমাট হয়ে যায়। এরপর শাকিব খানের পক্ষ নিয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেয়ায় বাপ্পারাজকে তার বক্তব্যে ভুল স্বীকার ও দুঃখ প্রকাশ করার জন্য নোটিশ পাঠায় পরিচালক সমিতি। পাল্টা বাপ্পারাজ বলেন, ‌পরিচালক সমিতির সদস্যপদ না পেলেও ভালো ছবি বানানো যায়। এবং তিনি তার বক্তব্যে অনড়।

চিত্রপুরিতে শাকিব-পরিচালক সমিতির ইস্যুটি চুকে গেলেও বাপ্পারাজের ইস্যুটি বেশ আলোচনায় এসেছে। আর এসময় বাপ্পারাজের ছোটভাই চিত্রনায়ক সম্রাট তার ভাইয়ের বক্তব্যকে ‘সঠিক’ বলে মনে করছেন। সম্রাট বলেন, ‘ভাইয়া (বাপ্পারাজ) পরিচালক সমিতিকে ‘হাইলাইট’ করেছে। তিনি তার বক্তব্যে পরিচালকদের রিকোয়েস্ট করেছেন যে আপনারা ছবির প্রমোট করেন। ভাইয়া সমিতিকে বলেছে, আপনারা ইন্ডাস্ট্রির জন্য কিছু করেন, বসে থাকবেন না। এটাকে নেগেটিভভাবে নেয়ার তো কিছু নেই।’

সম্রাট আরও বলেন, ‘ভালোভাবে না বুঝে পরিচালক সমিতি উল্টো ভাইয়ার বিরুদ্ধে নোটিশ পাঠালো। জবাব চাইলো, কেন আমার ভাইয়া এমন কথা বললেন!’ তিনি বলেন, ‘পরিচালক হয়তো আমার কথা শুনে আমাকেও নিষিদ্ধ করার হুমকি দেবে। তাদের হুমকি আমলে না নিলে আমাকে ‘ব্যান’ করবে। করুক! এতে আমাদের দুই ভাইয়ের কিচ্ছু যায় আসে না। আর আমার বড় ভাইকে যদি পরিচালক সমিতি থেকে ব্যান করা হয় তাহলে সেখানে আমরা কেউ কাজ করবো না।’

‘আমার ভাইয়াকে উদ্দেশ্য করে কেউ বলতে পারবে না সে আজ পর্যন্ত কারও ক্ষতি করেছে। আর এই ভাই যদি ব্যান হয় তাহলে আর চলচ্চিত্রে চলচ্চিত্রে প্রযোজক সমিতি, শিল্পী সমিতির সদস্যপদ নিয়ে কি করবো? আরও বড় কথা, এত সমিতির সদস্যপদ থাকার পরও যদি এফডিসিতে ভালোভাবে ঢুকতে না পারা যায়, তবে এতসব সদস্য পদ রেখে লাভ কি?’

এই অভিনেতা বলেন, ‘শাকিব ভাইয়ের গায়ে হাত তোলা হলো ভোটের দিন রাতে। সে তো একজন শিল্পী। অথচ কোন সংগঠন কিছুই নোটিশ দিল না কাউকে। তারমত একজন সুপারস্টারকে যদি এভাবে হেনস্তা হতে হয়, তাহলে আমার কিংবা আমাদের মতো শিল্পীর গায়ে হাত তুলবে না, গাড়ি ভাঙবে না এর কি গ্যারান্টি আছে? আর এফডিসি হলো শিল্পী-কলাকুশলীদের স্থান। সেখানে এত পুলিশ থাকবে কেন? আমি সাড়ে তিন বছর বয়স থেকে এফডিসি যাই; কোনোদিন তো এত পুলিশ দেখিনি। তাহলে এখন এত পুলিশ কেন?’

চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সমালোচনা নয়, সম্মান জানিয়ে রাজ রাজ্জাকের কনিষ্ঠপুত্র সম্রাট বলেন, ‘পরিচালক সমিতি অনেক কিছুই করতে পারে। সিনেমার এই ক্রান্তিলগ্নে তাদের অনেক দায়িত্বই রয়েছে। প্রথমে তারা সিনেমা হলের মধ্যে মেশিন বসানোর স্থায়ী ব্যবস্থা করুক। হল মালিকদের কাছে চিঠি দেন; সেখানে জোর দেখিয়ে বলেন, স্থায়ীভাবে প্রজেকশন বসানোর জন্য। সমস্যার কথাগুলো চিঠিতে লেখেন। তারপর কাজ না হলে আন্দোলন করুন। প্রয়োজনে বাইরে এসে আন্দোলন করেন, অবশ্যই আমরা পাশে থাকবো।’

তিনি বলেন, ‘গতকাল শাকিব খান আজকে বাপ্পারাজ, পরশুদিন আরেকজন; এভাবে ব্যান করে কি কোনো লাভ হবে ইন্ডাস্ট্রির? আমরা হলাম শিল্পী। আমরা কাজ করবো ইন্ডাস্ট্রি বাঁচানোর জন্য। এফডিসির ভেতরে ক্ষমতা না দেখিয়ে, বাইরে এসে ইন্ডাস্ট্রির ভালোর জন্য ক্ষমতা দেখান।’

বাপ্পারাজকে পরিচালক সমিতি থেকে যে নোটিশা পাঠানো হয়েছে সেটা কী রাজ্জাক সাহেব জানেন? ‘বাবার এ ব্যাপারে কোনো মাথাব্যাথা নেই। তিনি অসুস্থ। আর তাকে আমরা সেভাবে বলিনি। আর বাবাকে জানাতেও চাচ্ছি না।’

বাপ্পারাজের এই নোটিশ প্রসঙ্গে শোনা যাচ্ছে আপনাদের পরিবারের সদস্যরা চলচ্চিত্র থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন। সত্যি কী তাই? জবাবে সম্রাট বলেন, ‘ভাইয়া সমিতির নোটিশের জবাব এরইমধ্যে পাঠিয়েছেন। দেখা যাক পরিচালক সমিতি এখন কী সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর দেখা যাবে কী ব্যবস্থার প্রয়োজন হয়। এখনই আগাম কিছু বলছি না। তবে আমরা চলচ্চিত্রের মাঝেই বড় হয়েছি। চলচ্চিত্রের সঙ্গেই মিলেমিশে থেকে যেতে চাই।’

এনই/এলএ

আরও পড়ুন