আপন জুয়েলার্সকে বয়কট করার আহ্বান সুবর্ণা মুস্তাফার
গোটা দেশ নাড়িয়ে দিয়েছে বনানীর এক রেস্টুরেন্টে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা। ঘৃণা আর ক্ষোভে ফুঁসছে সারা দেশের মানুষ। সবাই প্রতিবাদ করছেন সেই ঘটনায় জড়িত তিন অভিযুক্ত সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ ও সাদমান সাকিফের বিরুদ্ধে। তাদের শাস্তি চেয়ে আন্দোলনও করছেন অনেকে।
তিন আসামির অন্যতম একজন আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ। অভিযোগ উঠেছে, প্রতিষ্ঠানটির মালিক তার পুত্রকে আইনের শাস্তির হাত থেকে রক্ষা করতে মামলাকে নানাভাবে প্রভাবিত করছেন। গণমাধ্যমে আসা এমন নানা খবরে দেশজুড়েই চলছে সমালোচনা। অনেকেই আপন জুয়েলার্সকে বয়কট করার ঘোষণা দিচ্ছেন।
সেই তালিকায় এবার যোগ দিলেন নন্দিত অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা। টিভি ও চলচ্চিত্রের গুণী এই অভিনেত্রী আপন জুয়েলার্স ছেলে ও তার বন্ধুরা মিলে দুজন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। পাশাপাশি গত মঙ্গলবার (৯ মে) সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে নিজের একাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি আপন জুয়েলার্সের গয়না বয়কট করার আহ্বান জানান।
এই অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘ইউনাইটেড এয়ারলাইনস যখন টেনে হিঁচড়ে এক যাত্রীকে প্লেন থেকে বের করে দিল, তখন কিন্তু তাদের সিইও জনসমক্ষে ক্ষমা চাননি। যখন জনগন ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইউনাইটেডকে বয়কট করল, যখন তাদের শেয়ারের মূল্যে ধস নামলো, যখন তারা কয়েক দিনের মাথায় ১ বিলিয়ন ডলারের মত সম্পদ হারালো, তখন সিইও জনসমক্ষে আসলেন। বললেন, খুব ভুল হয়ে গেছে, মাফ করে দিন।’
বয়কট আপন হ্যাশট্যাগ দিয়ে সুবর্ণা আরও লিখেছেন, ‘কাল থেকে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, বলছেন যেহেতু প্রভাবশালী পরিবারের ছেলে, কয়েকদিন মিডিয়া একটু হইচই করবে, তারপর ব্যাপারটাকে ধামাচাপা দেওয়া হবে। এটা হওয়ার সম্ভাবনা নেহায়েত কম নয়।
কিন্তু এবার আমাদের একটা পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ আছে। যারা গহনা কিনে থাকেন, তাদের জন্য আপন জুয়েলার্স অতি পরিচিত নাম। আমাদের উচিত আপন জুয়েলার্সকে সম্পূর্ণভাবে বয়কট করা। যতগুলো ঘরে ফেসবুক রয়েছে, সেসব পরিবার যদি দৃঢ় প্রতিজ্ঞা নেয়, আপন জুয়েলার্স থেকে আর কোন কেনাকাটা করা হবে না, বিশেষ মূল্যছাড় দিলেও না; তখন ওদের বিবেক ওদের কিছু বলুক আর না বলুক, এবার ঈদ ও বিয়ের মৌসুমে ওদের ব্যালেন্সশিট অন্তত ওদেরকে জানিয়ে দেবে, কাজটা ঠিক হয়নি।
বলতে পারেন, এরা ইতিমধ্যেই যত টাকা বানানোর বানিয়ে ফেলেছে, এসব করে কি আদৌ কোনো লাভ হবে? একই কথা কিন্তু ইউনাইটেডের মতো কোম্পানির ক্ষেত্রেও বলা যেত। কিন্তু মানুষ সত্যি ঐক্যবদ্ধ বলেই এক্ষেত্রে ইউনাইটেড তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে।
বয়কটের প্রভাব একেবারে নগণ্য নয়। এমনকি ইসরাইলের মতো শক্তিশালী রাষ্ট্র বিডিএস মুভমেন্ট দ্বারা এতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে তারা এখন অ্যান্টি-বিডিএস মুভমেন্টের পেছনে যথেষ্ট টাকা ব্যয় করছে।
এ ধরনের ঘটনায় আমরা সব সময় শুনে থাকি, আইন তার নিজ গতিতে চলবে। এবার আমাদের বলার পালা, ক্রেতারাও তার নিজ বিবেচনায় বেচা-কেনা করবে।’
এলএ