চলচ্চিত্র শিল্পীদের জন্য চিকন আলীর প্রতিশ্রুতি
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০১৭-১৮ মেয়াদে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন চলচ্চিত্র অভিনেতা শামীম খান। তিনি অবশ্য সবার কাছে চিকন আলী নামেই পরিচিত। ড্যানি সিডাক- ইলিয়াস কোবরা প্যানেল থেকে দফতর ও প্রচার সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন এই কৌতুক অভিনেতা।
সম্প্রতি আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন চিকন আলী। সেখানে তিনি বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এই শিল্পীর ভাষাতেই দেয়া হলো তার প্রতিশ্রুতি-
‘শিল্পী সমিতির নির্বাচন একেবারেই সন্নিকটে। আল্লাহর উপর ভরসা রেখে সবার ভালোবাসা, সহমর্মিতা, স্নেহ নিয়ে টিকে আছি চলচ্চিত্রের বিশাল এই মাধ্যমে। এই মাধ্যমে কাজ করতে এসে শুরুতেই যেটি আমার চোখে পড়েছে সেটি হচ্ছে এখানে যারাই সভ্য, নম্র-ভদ্রতা বজায় রেখে চলতে পেরেছে তারাই সফল হয়েছেন। আমি এর ব্যতিক্রম নই।
চলচ্চিত্রে ক্যারিয়ার এর শুরুতেই কিছু মানুষের সাথে চলার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। এই মানুষগুলো আমাকে কখনও বামে আবার কখনও ডানে টানতেন। আমি শুরু থেকেই, সভ্য সংস্কৃতি ও সাংস্কৃতির ধারক ও বাহক ছিলাম। তাই শান্তি ও শৃঙ্খলার পথই বেছে নিতাম। সেটা ডানেই হোক আর বামেই হোক।
চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুবাদে এই প্রজন্মের কিছু পরিচালকের ছবিতে কাজ করার সুযোগ হয়েছে আমার। একবার এক পরিচালক সাহেব আমাকে ফোন করে বললেন, ‘আপনাদের শিল্পী সমিতির ওয়েবসাইটটা কি আর্টিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের নামে? আপনার পেজ কি চিকন আলী নামে? আমার প্রযোজক আপনাকে দেখতে চেয়েছে ওয়েবসাইট ও ওয়েব পেজটা দিন তো!’
আমি চুপ। ভদ্রলোক বারবার বলছিলেন কি ভাই চুপ যে। আমি ঠিক হয়ে বললাম, বস আমাদের অ্যাসোসিয়েশনের ওয়েবসাইট, ওয়েব পেজ কোনটাই নেই? ভদ্রলোক রীতিমত বিব্রত। বলেন, কি বলেন ভাই এত বড় অ্যাসোসিয়েশন তার ওয়েবসাইট ওয়েব পেজ নেই। তাই বাধ্য হয়েই মেইলে ছবি পাঠাতে হলো। ছবিটাতে কাজ করতে গিয়ে ভদ্রলোক আমাকে বার বার বলছিলেন বস পৃথিবী অনেক আপগ্রেড আপনাদেরও হওয়া উচিত।
সেই ছবির শুটিং করতে গিয়ে পরিচালক বার বার বলছিলেন ভাই, আমার কিছু শিল্পী লাগবে। সিনিয়র কিছু শিল্পী, নতুন নিলে হয় কিন্তু, তারা ওই অভিনয়টা দিতে পারবে না। আমি কয়েকজনের নাম্বার দিলাম। উনার একটাই কথা দেখাতে হবে। আমার পক্ষে সম্ভব নয়। শেষে নাটক থেকে কিছু লোক নিয়ে এলো কাজ করানোর জন্য।
তখন থেকেই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল শিল্পী সমিতির একটা ওয়েবসাইট, প্রতিটি শিল্পীর নামে একটি ওয়েব পেজ করব আমি। আলোচনা করলাম আমার পরিচিত এক আইটি এক্সপার্টের সাথে। তিনি বললেন, ভাই ৪০০-৫০০ লোকের ওয়েব পেজ করতে তো অনেক সময় লাগবে। আরও অনেকের সাথে কথা বললাম, তারাও বলল আপনি তো সেবামূলক কাজই করবেন নির্বাচন তো সামনে, নির্বাচন করেন। প্ল্যান তখন থেকেই, নির্বাচন করব।
আমাদের দেশের সব শিল্পীর জন্য এই কাজটা সবার আগে করব। প্ল্যান শুরু শাকিব ভাই, অমিত ভাই, সানি ভাই, ড্যানি ভাই সবাই আমাকে বললেন, তুই ইসিতে নির্বাচন কর। আমি চিন্তা করলাম ইসিতে এই কাজটা কঠিন হবে, আমি নির্বাচন করব দফতর ও প্রচার সম্পাদক হিসেবে। সব প্যানেলেই প্রার্থী চূড়ান্ত। পড়ে গেলাম বিপদে, নির্বাচন করতেই হবে।
তারপর কথাটা শেয়ার করলাম ইলিয়াস কোবরা ভাইয়ের সাথে। তিনি রাজি। আমি কথা দিচ্ছি, আল্লাহ যদি আমাকে নির্বাচনে জয়ী করে, আমি যদি পাস করি নির্বাচিত হয়েই একটি কম্পিউটার দেব শিল্পী সমিতিতে।
আর কাজ শুরু করব আর্টিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের নামে ওয়েবসাইট, প্রত্যেক শিল্পীর নামে ওয়েব পেজ নিয়ে। এ ওয়েব পেজে একজন শিল্পীর থাকবে সেশন ছবি, তিনি কত সালে চলচ্চিত্রে এসেছেন, কতগুলো চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন, তার জন্ম কোথায়, কবে, উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রসহ যাবতীয় তথ্য থাকবে সেখানে। যদি কোনো প্রযোজক, পরিচালক ওই শিল্পীকে তার ছবিতে নিতে চান, তাহলে ওই পেজে সার্চ দিলেই সব পেয়ে যাবেন।
আমি সেই চেষ্টায় ব্রত আছি। যারা ভোট দেবেন তাদের ওপর নির্ভর করে আমার ইচ্ছা পূরণের ভাগ্য।’
এনই/এলএ/জেআইএম