ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিনোদন

প্রেমে পড়ার মতো এখনও কাউকে পাইনি : ববি

বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশিত: ১১:২৭ এএম, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

ঢালিউডের মোস্ট গ্ল্যামারাস চিত্রনায়িকা ইয়ামিন হক ববি। সবাই তাকে ববি নামেই চেনেন ও ভালোবাসেন। ২০১০ সালের ১৬ এপ্রিল মুক্তি পায় ‘খোজ - দ্য সার্চ’ চলচ্চিত্র। এতে অভিনয় করেই রুপালি পর্দায় পা রাখেন মায়াবী চোখের এই নায়িকা। এরপর মুক্তি পায় ববির ‘দেহরক্ষী’ ছবিটি। এখানে নাচ ও অভিনয় দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করেন তিনি। আর পেছনে তাকাতে হয়নি তাকে। একের পর সুপারহিট ও আলোচিত সব ছবির নায়িকা হয়ে দর্শক মাতিয়ে চলেছেন তিনি। সাফল্যের ঝুলিতে ভরেছেন ‘হিরো- দ্য সুপারস্টার’, ‘রাজত্ব’, ‘ফুল এন্ড ফাইনাল’, ‘রাজা বাবু’র মতো বিগ বাজেটের ছবি।
বর্তমানে তিনি কাজ করছেন ‘বিজলী’ তে। এই ছবির মাধ্যমে প্রযোজক ববিরও অভিষেক ঘটবে চলতি বছর। বিগ বাজেট আর শক্তিমান তারকাদের নিয়ে ‘বিজলী’ ছবিটি নির্মাণ করছেন ইফতেখার চৌধুরী। ভালোবাসা দিবসকে সামনে রেখে জাগো নিউজের সঙ্গে আড্ডায় মেতেছিলেন ববি। লিখেছেন লিমন আহমেদ

জাগো নিউজ : সেই ২০১০ সালে যাত্রা শুরু। অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে আজকের ‘বিজলী’ ছবি পর্যন্ত। ক্যারিয়ারের এই জার্নিটা কেমন, তার সম্পর্কে কিছু জানতে চাই-
ববি : যেকোনো জার্নিই আনন্দের এবং চ্যালেঞ্জের। আমাকেও এতোটা পথ পাড়ি দিতে গিয়ে অনেক আনন্দ ও এবং চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে। আমার পরিবার কখনোই চায়নি আমি শোবিজে কাজ করি। আর চলচ্চিত্রের নায়িকা হওয়ার কথা তো ভাবাই যায় না। কিন্তু নিজের ইচ্ছা শক্তিটা ছিল বলেই বাবা-মাকে বুঝাতে পেরেছিলাম। শুরুটা ছিল বিজ্ঞাপন দিয়ে। সবাই প্রশংসা করলো। হুট করেই চলচ্চিত্রে কাজ করা। বাবা-মাকে বুঝালাম যে আমি এই জায়গাটিতে কাজ করতে চাই। তারা যদি আমাকে সাপোর্ট করে তবে আমি নায়িকা হিসেবে সফল হতে পারব। এরপর শাকিব খানের সঙ্গে ‘ফুল এন্ড ফাইনাল’ ছবিটি করার পর বাবা-মা আমাকে অভিনয় করতে স্বাধীনতা দিলেন।

জাগো নিউজ : পরিবারের বাইরে একজন নায়িকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে গিয়ে কেমন প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছেন?
ববি : সবখানেই প্রতিবন্ধকতা থাকে। চাকরি হোক, ব্যবসা হোক; যে কোনো কিছু। তেমনি নায়িকা হতে গেলেও নানারকম প্রতিবন্ধকতা ফেস করতে হয়। এসব জয় করে এগিয়ে যাওয়াই সফলদের বৈশিষ্ট্য। আমি মনে করি একজন নায়িকার উচিত অনেক বেশি কাজের প্রতি নজর না দিয়ে মানসম্পন্ন কাজের প্রতি মনোযোগ দেয়া।

জাগো নিউজ : শাকিব খানের সঙ্গে আপনি অভিনয় করে সাফল্য পেয়েছেন। অনেক নায়িকার ভিড়ে এ সাফল্যটি কিন্তু বেশ আলোচিত। আপনি কীভাবে দেখেন?
ববি : শাকিব খান দেশের শীর্ষ নায়ক। তার সঙ্গে কাজ করার স্বপ্ন দেখে নায়িকারা। সে জায়গা থেকে শাকিবের সঙ্গে চারটি ছবি করে চারটিতে সাফল্য পাওয়া অবশ্যই উল্লেখ করার মতো বিষয়।

জাগো নিউজ : এবার আপনার নতুন ছবির কথা বলুন। ঢালিউডের বহুল আলোচিত ছবি ‘বিজলী’তে নাম ভূমিকায় অভিনয় করছেন আপনি। এ ছবি সম্পর্কে বলুন-
ববি : এ ছবিটি আমার জন্য বলতে পারেন ড্রিম প্রজেক্ট। প্রথমত এই ছবি দিয়ে প্রযোজক হিসেবে আমার যাত্রা শুরু হচ্ছে। দ্বিতীয়ত এ ছবিটিই হতে যাচ্ছে ঢাকাই ছবির ইন্ডাস্ট্রিতে প্রথম সুপারহিরো ছবি। এখানে দর্শক আমাকে সুপারম্যান, স্পাইডারম্যান, কৃষদের মতো বিশেষ শক্তি ও যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষ হিসেবে দেখবে। অনেক চ্যালেঞ্জ আর ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছি।

bobi 1
জাগো নিউজ : এ ছবিটিতে আপনি শক্তিমান অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন ও কলকাতার শতাব্দী রায়ের সঙ্গে অভিনয় করছেন। তাদের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা বলুন-

ববি : খুবই ভালো। আমি আসলে সৌভাগ্যবান দুই বাংলার এমন দুই গুণী শিল্পীর সঙ্গে অভিনয় করতে পেরে। ‘বিজলী’তে শতাব্দী রায়কে দর্শক নেতিবাচক চরিত্রে দেখবেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে উনি খুব সুইট একজন অভিনেত্রী। নিজেকে ভিলেন হিসেবে প্রমাণ করতে বেশ কিছু এক্সপ্রেশন তিনি দিয়েছেন, যা যেকোনো অভিনেত্রীকেই উৎসাহ দেবে নিজের অভিনয়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে। খুব চমৎকার করে কথা বলেন তিনি। ব্যবহারে মুগ্ধ হয়েছি। অনেক কিছু শিখেছি তার কাছ থেকে। নায়িকা হলেও নিজে তিনি প্রযোজনা করেছেন। তাই আমাকে নানাভাবে হেল্প করেছেন। আর ইলিয়াস কাঞ্চন আমাদের ইন্ডাস্ট্রির গর্ব। তার অভিনয় বা জনপ্রিয়তা নিয়ে কথা বলার দুঃসাহস আমার নেই। সত্যিকারের একজন অভিনেতা তিনি। সবকিছুতেই তার হিরোইজম। ইমপ্রেসড হই বারবার। এই ছবিতে তার চরিত্রটিও দর্শকদের জন্য চমক নিয়ে আসবে।

জাগো নিউজ : ‘বিজলী’ ছাড়া নতুন কোনো ছবির কথা আছে?

ববি : না। আপাতত আমি ‘বিজলী’ নিয়েই ভাবতে চাই। ছবিটির দৃশ্যধারনের কাজ শেষ। কিছু গানের দৃশ্যায়ন বাকি আছে। অনেক ভিএফক্সের কাজ করতে হবে। সেগুলো শেষ হলে চলতি বছরই ছবিটি মুক্তি দিতে চাই।

জাগো নিউজ : এদিকে একটি বিষয় ইন্ডাস্ট্রিতে বেশ আলোচিত হচ্ছে। সম্প্রতি কলকাতার নায়িকাদের আনাগোনা বাড়ছে ঢাকাই ইন্ডাস্ট্রিতে। এতে করে দেশীয় নায়িকাদের ক্যারিয়ার কী হুমকিতে পড়বে বলে আপনার মনে হয়?
ববি : একদমই না। বরং কম্পিটিশন বাড়বে। প্রতিযোগিতা থাকলে কাজের মান ভালো হয়। তবে বিদেশি শিল্পীদে বাংলাদেশে কাজ করার যে নিয়ম-কানুন আছে তা যেন ঠিক মতো মেইনটেইন করা হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। দেশীয় নায়িকাদের প্রাধান্যটা যেন কমে না যায় সেটিও ভাবতে হবে।

জাগো নিউজ : এমন কোনো চরিত্র আছে কী যেটিতে অভিনয় করতে খুব ইচ্ছা করে?
ববি : প্রচুর ছবি দেখেই এমনটি মনে হয়। ‘দ্য ফাদার’ ছবিতে ববিতা ম্যাডামের চরিত্রটি আমার খুব ভালো লাগে। যদি এ চরিত্রে অভিনয় করতে পারতাম নিজেকে ধন্য মনে করতাম।

bobi 2
জাগো নিউজ : এবার একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে যাই। আজ তো ভ্যালেন্টাইন ডে। বিশেষ কোনো পরিকল্পনা আছে কী দিনটি নিয়ে?

ববি : এটিকে নিয়ে বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই। কারণ আমি সিঙ্গেল মানুষ। ভ্যালেন্টাইন নিয়ে কী করে বিশেষ প্ল্যান করি বলুন! ভালোবাসা দিবসের পরিকল্পনায় দুজন লাগে। হা হা হা....

জাগো নিউজ : ইন্ডাস্ট্রির এমন জনপ্রিয় নায়িকার প্রেমিক নেই বিষয়টি অবাক করা-
ববি : অবাক হলেও কিছু করার নেই। সত্যি এমন কাউকে আজও খুঁজে পাইনি যার প্রেমে পড়া যায়। যাকে বিশ্বাস করে আই লাভ ইউ বলা যায়। সবকিছু থেকে ছুটি নিয়ে তার হাত ধরে ঘুরে বেড়ানো যায়।

জাগো নিউজ : কেমন রাজকুমার চাই আপনার?
ববি : অবশ্যই শিক্ষিত, রুচিশীল, স্মার্ট। তাকে হতে হবে আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু। আমার যা মন্দ সব শুধরে দেবে, যা কিছু ভালো সেগুলোকে উৎসাহিত করবে। এমন ছেলে খুঁজে পাওয়া কঠিন। তাই প্রেমে পড়া হচ্ছে না। তাছাড়া আজকাল মানুষে মানুষে ভুল বোঝাবুঝি অনেক বেশি। সম্পর্কগুলো ভেঙে যাচ্ছে টুনকো কারণে। তাই আবেগের রাজকুমার নয়, বিশ্বস্ত প্রেমিক চাই, সঙ্গী চাই।

জাগো নিউজ : কিন্তু একজন পরিচালকের সঙ্গে আপনার প্রেম বা বিশেষ সম্পর্ক আছে বলে শোনা যায়। এটি কী কেবলই গুজব?
ববি : দেখুন আমি বিশ্বাস করি তারকাদের প্রেম-বিয়ে নিয়ে গুজব থাকবেই। যদি কোনো স্ক্যান্ডাল বাজারে না থাকে তবে ধরে নিতে হবে সেই তারকার চাহিদা কমে গেছে। লোকে আমাকে নিয়ে ভাবছে, আমার প্রেম-সম্পর্ক নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে তার মানে আমাকে দিয়ে কিছু একটা করা সম্ভব। একটু মজা করেই জবাবটা দিলাম। এবার সিরিয়াস কথাটা বলি। আমি জানি পরিচালক ইফতেখার চৌধুরীর নামের সঙ্গে আমাকে জড়িয়ে অনেক কথাই প্রচার হয়। এগুলো শতভাগ মিথ্যা। এসব খবরে আমি লজ্জা পাই, উনিও বিব্রত হন। কেননা, তার হাত ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে প্রবেশ করেছিলাম বলে আমি তাকে গুরুর মতো মানি। আর ক্যারিয়ার অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু জীবনের জন্য প্রেম-বিয়ে আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এসব নিয়ে লুকোচুরিতে আমি বিশ্বাসী নই। আর প্রেম করার সময় বা বয়স নেই। হুট করেই বিয়েটা হয়তো করতে পারি।

জাগো নিউজ : তাই বলে এতগুলো বসন্ত পেরিয়ে গেল কোনোরকম প্রেম ছাড়াই! নিশ্চয়ই কারো না কারো ওপর ক্র্যাশ খেয়েছেন?
ববি : হ্যাঁ। শাহরুখ খান আমার ক্র্যাশ। কিন্তু তাকে তো পাওয়া যায় না। আর অভিনেতা আলমগীর স্যার আমার চিরদিনের প্রেমিক। তার মতো আর কেউ আমাকে মুগ্ধ করতে পারেনি। তিনি সত্যিকারের নায়ক। থাকে না অনেকেই খবু জনপ্রিয় হিরো কিন্তু সামনে থেকে দেখলে সেইরকম ভক্তি বা শ্রদ্ধাটা আসে না। কিন্তু আলমগীর সাহেব হলেন সেই নায়ক যার সবকিছুতেই হিরোইজম খুঁজে পাই আমি। যখন থেকে চলচ্চিত্র বুঝি তখন থেকেই তিনি আমার নায়ক।

Bobi 3
জাগো নিউজ : আপনার ওপর কেউ ক্র্যাশ খায়নি?

ববি : অনেকবার।

জাগো নিউজ : প্রথম ক্র্যাশ খাওয়ার গল্পটা যদি বলতেন...
ববি : ছেলেটির নাম মনে নেই। তখন আমি ফাইভ কি সিক্সে পড়ি। ভ্যালেন্টাইন ডে’তে একটি ছেলে কিছু ফুল আর কার্ড হাতে ধরিয়ে দিলো। আমি তো ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলাম। আজও মনে পড়ে সেই দিনটির কথা। ভয়ে আর লজ্জায় আমি বিষয়টি মাকে জানাইনি। ছেলেটিকেও কোনো উত্তর দেইনি।

জাগো নিউজ : অবসরে কী করেন?
ববি : প্রচুর গান শুনি। স্যাড সং শুনতে আমার খুব ভালো লাগে। মনে কোনো দুঃখ না থাকলেও স্যাড সং আমার প্রিয়। ছবিও দেখি অনেক।

জাগো নিউজ : অনেক ধন্যবাদ। ‘বিজলী’র জন্য শুভকামনা। সামনের দিনগুলো আরো সাফল্যের হোক-
ববি : আপনাকেও ধন্যবাদ। জাগো নিউজের পাঠক ও আমার ভক্তদের ভালোবাসা দিবসের শুভেচ্ছা রইলো। ভালোবাসাই সুন্দর। প্রতি মুহূর্তে প্রিয় মানুষটিকে ভালো বাসুন।

এলএ

আরও পড়ুন