চলচ্চিত্রে শিডিউল ফাঁসালেই তারকাদের জরিমানা
প্রায় সময়ই দেখা যায় চলচ্চিত্রের শিল্পীরা শিডিউল ফাঁসিয়ে থাকেন। বিশেষ করে বড় তারকারাই এই ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করেন। কখনো কারণে আবার কখনো খামখেয়ালিপনায় নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট স্থানে শুটিং করতে আসার কথা দিয়েও তারা হাজির হন না।
এতে ক্ষতির সম্মুখীন হন ছবির প্রযোজক ও পরিচালক। বহুবার অনেক নায়ক-নায়িকার বিরুদ্ধে শিডিউল ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। ওইসব অভিযোগ আলোচনায় মিটমাট হলেও প্রযোজকের ক্ষতির কোনো সুরাহা হতো না।
তবে আশা জাগানিয়া ব্যাপার হলো, নবনির্বাচিত বাংলাদেশে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে এর সমাধানে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে। তা হলো, যিনি শিডিউল ফাঁসাবেন তার পারিশ্রমিক থেকে ক্ষতির নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ কেটে রাখো হবে। জাগো নিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপে এ কথা জানান চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির নবনির্বাচিত মহাসচিব বদিউল আলম খোকন।
তিনি বলেন, ‘সবে তো মাত্র আমরা দায়িত্ব নিয়েছি। এরই মধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে হাজির হচ্ছি আমরা। তার মধ্যে অন্যতম একটি শিল্পীদের শিডিউল ফাঁসানো সংক্রান্ত বাতিক থেকে প্রযোজক ও পরিচালককে রক্ষা করা।’
মহাসচিব বলেন, ‘আগে একজন শিল্পীকে চুক্তির সময়ই তাকে মনগড়া সাইনিং মানি দেয়া হতো। কিছুদিনের মধ্যেই তার বাকি টাকা পরিশোধ করা হতো। কিন্তু নতুন নিয়ম অনুযায়ী একজন শিল্পীকে তার পারিশ্রমিকের হার অনুযায়ী সাইনিং মানি দেয়া হবে। পরবর্তীতে তার কাজের অগ্রগতি অনুযায়ী পারিশ্রমিক পরিশোধ করা হবে। কেননা, শিল্পী যদি শুরুতেই পুরো পারিশ্রমিক পেয়ে যায় তবে সে শিডিউল ফাঁসালে তার জরিমানা কোথা থেকে ধরবেন পরিচালক? তার কাছ থেকে অর্থ না চেয়ে বরং তার জন্য নির্ধারিত পারিশ্রমিক থেকে কেটে রাখাই সহজ এবং যৌক্তিক হবে। তাই তার পারিশ্রমিকও শোধ করা হবে কিস্তিতে।’
নির্মাতা বদিউল আলক খোকন মনে করেন, এ সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়ন হলে সামগ্রিকভাবে চলচ্চিত্রের জন্যই ফলপ্রসূ হবে। যদি কোনো শিল্পী অসুস্থ হন বা কোনো ঝামেলায় পড়েন তবে তার নির্দিষ্ট ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। কিন্তু আজকাল যেটা হচ্ছে, নায়ক-নায়িকারা নিজেদের ইচ্ছামতো শুটিং স্পটে আসছেন যাচ্ছেন। পুরনো তারকাদের দেখে নতুনরাও এ অভ্যাস অনুসরণ করলে বিপদ।
খোকন আরো জানান, ‘আমরা শুটিং শুরু ও শেষ করার সময়সূচি নিয়েও কাজ করছি। কখন কে আসবে, কখন কে যাবে এসব বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা হবে। যারা একটি চলচ্চিত্রের সঙ্গে জড়িত হয়েও অসহযোগিতা করবেন তারা অবশ্যই তিরস্কৃত হবেন। একজন পরিচালকও যদি স্পটে ঠিকমতো না আসেন তারও জবাবদিহির জায়গা তৈরি করা হবে। প্রযোজককেও সময়মতো ছবি শেষ করার তাগিদ রাখতে হবে।’
এছাড়া পরিচালক সমিতির সদস্য পদ প্রাপ্তির যোগ্যতা ও নিয়ম-কানুন নিয়ে বেশ কিছু রদবদল আনতে যাচ্ছে নবনির্বাচিত কমিটি। এফডিসিতে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। একইভাবে চলচ্চিত্রের মানুষদের মধ্যে দায়বোধ, সম্প্রীতি গড়ে তোলার লক্ষেও কাজ করবে পরিচালক সমিতি।
এলএ