শিল্পী বান্ধব ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি গড়তে চাই : জায়েদ খান
ঢাকাই ছবির চিত্রনায়ক জায়েদ খান। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির আসন্ন দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনে তিনি সাধারণ সম্পাদক পদে লড়বেন। সে আঁটসাঁট বেঁধেই নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছেন এই নায়ক। এই নির্বাচনে জায়েদ খান তার জয় নিয়ে শতভাগ আশাবাদী। নির্বাচনী ভাবনা নিয়ে তিনি কথা বললেন জাগো নিউজের সঙ্গে...
জাগো নিউজ: হুট করে নির্বাচনে আসলেন কেন?
জায়েদ খান : হুট করে আসিনি। আজ থেকে আরো ছয় মাস আগে থেকেই শিল্পী সমিতির নির্বাচনে লড়াই করার পরিকল্পনা করি। চলচ্চিত্রে যারা সিনিয়র শিল্পীরা আছেন, তাদের সঙ্গে ব্যাপারটা আলোচনা করি। তারা সবাই আমাকে উৎসাহ দেন। আর একটা ব্যাপার হচ্ছে, অনেক দিন ধরে দেখছি বর্তমান শিল্পী সমিতির সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারটা কাঁদছিল। তারা তাদের দায়িত্বে সচেতন ছিলে না। সচেতন ছিল তাদের ব্যক্তিগত জীবন এবং ক্যারিয়ার নিয়ে। তাই একজন শিল্পী হিসেবে এই নেতৃত্ব নিয়ে আর পাঁচটা শিল্পীর পাশে দাঁড়ানোর জন্য নির্বাচন করছি।
জাগো নিউজ : নেতৃত্ব দেয়ার অভিজ্ঞতা আছে?
জায়েদ খান : হ্যাঁ, টুকটাক নেতৃত্ব দেয়ার অভ্যাস আমার আছে। আমি স্নাতক-স্নাতত্তোর করেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। স্টুডেন্ট লাইফে ক্যাম্পাসের অনেক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছিলাম, সেখানে নেতৃত্ব দিয়েছিলাম। আর এই অভিজ্ঞতাটা এখানে কাজে লাগাতে চাই। সঙ্গে চলচ্চিত্রের সিনিয়র-জুনিয়র সবাইকে নিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে চাই।
জাগো নিউজ : আপনার প্যানেলে মিশা সওদাগর সভাপতি। তার সঙ্গে কীভাবে যুক্ত হলেন?
জায়েদ খান : নির্বাচন করবো এই সিদ্ধান্ত নেয়া। মিশা ভাইয়ের সঙ্গে এক প্যানেলে যুক্ত হবো এটা ভাবিনি। আর তিনি নির্বাচন করবেন কিনা তখনও আমি জানতাম না। পরে জানতে পারি তিনি নির্বাচন করবেন। আর তার সঙ্গে আমার বোঝাপোড়া খুব ভালো। সে কারণেই বলে বেড়াচ্ছি, নীতিগতভাবে আমরা এক। তিনি হচ্ছেন হাজি মানুষ। খুবই ভালো মনের একজন মানুষ।
জাগো নিউজ : নির্বাচনে জয়ী হলে সবার আগে কোন কোন সমস্যার সমাধান করবেন?
জায়েদ খান : শিল্পীদের মধ্যে অনিয়ম নিয়ে আগে কাজ করবো। যেমন ধরুন শুটিংয়ে দেরি করা আসা, শিডিউল ফাঁসানো, দুস্থ শিল্পীদের জন্য ফান্ড চাঙ্গা করবো। আর একটা দিকে করা নজর দেব সেটা হচ্ছে, এখন যে যৌথ প্রযোজনায় ছবি নির্মাণ হচ্ছে তা নিয়ে তো অভিযোগের শেষ নেই। আমি চাইবো কোনো অভিযোগ থাকবে না। নিয়মনীতি মেনেই ছবি নির্মিত হবে। এছাড়া সিনেমা হল সংরক্ষণে যতদূর কাজ করা যায় করবো। সর্বোপরি চলচ্চিত্র শিল্পকে ঢেলে সাজাবো।
জাগো নিউজ : সিনিয়ররা আপনাকে নিয়ে কি বলছেন খোঁজ নিয়েছেন?
জায়েদ খান : নায়ক রাজ রাজ্জাক, সোহেল রানা, রোজিনা থেকে মোস্ট অধিকাংশ সিনিয়ররা আমাকে সমর্থন দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, আমি তাদের সমর্থন কাগজে স্বাক্ষর করে নিয়েছি। আর ডিপজল ভাই তো আমাদের প্যানেলটা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। বাকিরা প্রতিনিয়ত খোঁজখবর নিচ্ছেন। এছাড়া আমরা সবার সঙ্গে যোগাযোগ করছি।
জাগো নিউজ : বর্তমান কমিটির কাজকে একজন শিল্পী হিসেবে কীভাবে মূল্যায়ন করেন?
জায়েদ খান : শিল্পী সমিতির বর্তমান কমিটি সুপার ফ্লপ। তারা নির্বাচনের আগে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তার সিকিও পূরণ করেননি। নিজেদের আখের তারা গুছিয়েছেন। গত নির্বাচনে শাকিব ভাইয়ের জন্য আমি নিজেই দাঁড়িয়ে ভোট চেয়েছি। কিন্তু তিনি ভালো কোনো কাজ করলেন না। সেক্রেটারিও কোনো জটিল ইস্যুর মীমাংসা করতে পারেননি।
জাগো নিউজ : জয় নিয়ে আপনি কতটা আশাবাদী?
জায়েদ খান : নির্বাচনে জয় নিয়ে আমি শতভাগ আশাবাদী। কারণ প্রায় ১০ বছর ধরে এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছি। শিল্পীদের সুখে-দুঃখে, বিপদে আপদে পাশে দাঁড়িয়েছি। পাইরেসি থেকে চলচ্চিত্রের অসম বিনিময় সবখানেই আমি ন্যায়ের ব্যাপারে সোচ্চার ছিলাম। এখন যাদের বিপদে পাশে দাঁড়িয়েছি আমি বিশ্বাস করি তারা আমাকে নির্বাচনে জয়ী করবেন। জয় নিয়ে আমি শতভাগ আশাবাদী।
জাগো নিউজ : বর্তমানে কয়টি ছবিতে কাজ করছেন?
জায়েদ খান : মালেক আফসারির অন্তর জ্বালা ছবির কাজ শেষ। মিশন সিক্স, হৃদয় ছোঁয়া ভালোবাসা, তোমার প্রেমে পড়েছি, আগুনের চোখে প্রেম ছাড়াও কিছু ছবিতে কাজ করছি।
এনই/এলএ/পিআর