চলচ্চিত্রের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি : তৌসিফ
বর্তমানে টিভি নাটকে নতুন প্রজন্মের অনেকেই কাজ করছেন। তাদের মধ্যে তৌসিফ মাহবুব একটু এগিয়ে। ইদানীং তিনি ভীষণ ব্যস্ত। তার জনপ্রিয়তাও অন্যদের চেয়ে বেশি। পর্দার বাইরে তৌসিফের চমৎকার বন্ধুসুলভ আচরণ মুগ্ধ করার দাবি রাখে।
একাধিক এক ঘণ্টা আর ধারাবাহিক নাটকে কাজ করছেন তৌসিফ। সম্প্রতি থাইল্যান্ড থেকে একটি ধারাবাহিকের শুটিং শেষ করে দেশে ফিরেছেন। সেই নাটকসহ অভিনয় ভাবনার কথা জানিয়ে তৌসিফ মুখোমুখি হন জাগো নিউজের বিনোদন বিভাগে ...
জাগো নিউজ : থাইল্যান্ডে কোন নাটকের শুটিং করলেন?
তৌসিফ : ‘হিং টিং ছট’ নামের নতুন একটি ধারাবাহিকের শুটিং করেছি। নাটকটি পরিচালনা করেছেন রাজিবুল ইসলাম রাজিব। আমরা চলতি মাসের ১৩ তারিখ থাইল্যান্ড যাই, দেশে ফিরি ২৮ তারিখ। টানা ১৬ দিন শুটিং করেছি। নাটকে আমি ছাড়াও অভিনয় করেছেন তারিক আনাম খান, আবুল কালাম আজাদ, সাজু খাদেম, আরফান আহমেদ, সিয়াম, মিশু সাব্বির, তানিয়া আহমেদ, ফারহানা মিলি, শবনম ফারিয়া, আশা, শাহতাজ মুনিরা হাশেম, নীলা প্রমুখ।
জাগো নিউজ : এই নাটকে আপনার চরিত্রটি কেমন?
তৌসিফ : চরিত্রটি বামপন্থী চেতনায় বিশ্বাসী এক তরুণের। যে কথায় কথায় সামজ্যবাদী, বর্জুয়া এসব টেনে তোলে। কথায় কথায় দেশ, রাজনীতি ও চার পাশের মানুষের দোষ ধরে বেড়ায়। সে সবকিছুতেই ষড়যন্ত্র খোঁজে। দেখা যাবে যদি একটা মশাও কামড় দেয়, তবে সেটাও দেশ-রাজনীতির সমস্যা হিসেবে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে সে। এছাড়া নাটকের আরো ১১টা চরিত্রে যারা অভিনয় করেছেন তারা প্রত্যেকেই আমার কাজে বিরক্ত থাকবে। এই চরিত্র দিয়ে নতুনভাবে আমি হাজির হবো দর্শকদের সামনে।
জাগো নিউজ : এটা কী কোনো পরিবারের গল্প?
তৌসিফ : না না। ১২টা চরিত্র নিয়ে নাটকটির গল্প। এই ১২ জন বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে একত্রে মিলিত হয়। ধরেন ১২ রকমের ১২টি প্রাণী যদি একটা খাঁচায় বন্দি রাখা হয়, তাহলে কেমন হবে? ঠিক তেমনটাই দেখতে পাবেন দর্শক।
জাগো নিউজ : আপনি তো আরো নাটকে কাজ করছেন। সেগুলোর আপডেট কী?
তৌসিফ : আমার অভিনীত কয়েকটা ধারাবাহিক নাটক প্রচারে আছে। এর মধ্যে রয়েছে এনটিভিতে ‘তরুণ তুর্কি’, এশিয়ান টিভিতে ‘থার্ড জেনারেশন’, বাংলাভিশনে ‘থ্রি সিসটার্স’, ‘ছন্নছাড়া’ ইত্যাদি। এর মধ্যে ‘তরুণ তুর্কি’ বাদে বাকি প্রতিটি সিরিয়ালের কাজ আগে থেকেই কিছুটা করা আছে। আগামী ১-১০ তারিখ পর্যন্ত কয়েকটা এক ঘণ্টার কাজ করবো। সম্প্রতি আমি একটা টেলিফিল্মে কাজ করলাম। যেটি পুরোটাই তামিল অ্যাকশন ধাঁচের, বলা যায় ফিল্মি স্টাইলের। ওটার নাম ‘সুপার বয়ফ্রেন্ড’। নির্মাণ করেছেন আহমেদ নিয়াজ।
জাগো নিউজ : এতো নাটকে অভিনয় করছেন, নিজের কাজ দেখার সুযোগ পান কিংবা মূল্যয়ন করতে পারছেন কেমন হচ্ছে কাজগুলো?
তৌসিফ : সময় হলেই নাটক দেখার চেষ্টা করি। আমি মনে করি নিজের কাজের মূল্যায়ন নিজেকেই করতে হয়। আর মূল্যয়ের ব্যাপার মাথায় রাখছি বলেই একটা কাজের সঙ্গে আরেকটা কাজের কোনো মিল রাখছিনা। মানে যে চরিত্রে অভিনয় করছি সেটা আর করবো না। তবে এই ভিন্নতার ধারাটা ধরে রাখা খুব কঠিন। কারণ এটা তো সিনেমা না যে বছরে ২-৩টা সিনেমা করলাম; সেখানে চরিত্র প্রত্যেকটা আলাদা। আমাকে বছরে ৫০টা নাটক করতে হয়, তাই ভিন্নতা ধরে রাখাটা খুবই মুশকিল। আর এই জন্য অনেক কাজ ছেড়েও দিতে হয়।
জাগো নিউজ : এখনকার টিভি নাটক নিয়ে আপনার মূল্যায়ণ জানতে চাই...
তৌসিফ : আগের চেয়ে কোনো অংশে খারাপ নাটক নির্মাণ হচ্ছে না। আর টিভি নাটকদের দর্শক যদি হারাতে থাকে তবে এর দায় চ্যানেল কর্তৃপক্ষের, নাট্য-নির্মাতা ও প্রযোজকদের। আমরা যারা আর্টিস্ট, আমাদের কাজ হচ্ছে অভিনয় করা। আমরা প্রত্যেকেই চাই দর্শকরা আমাদের নাটকগুলো দেখুক। আর দর্শকরা চ্যানেল বিমুখ হলেও কাজের রেসপন্স পাওয়া যাচ্ছে ইউটিউবে। এখানেও কিন্তু হিউজ দর্শক আছেন। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রি তো আর ইউটিউব দিয়ে চলবে না। তাই যেসব সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছি আমরা সেগুলোর সমাধান করে এগুতে হবে।
জাগো নিউজ : বর্তমানে দেশীয় চ্যানেলে বিদেশি সিরিয়াল প্রচারের দৌরাত্ম চোখে পড়ছে। এই বিষয়টি আপনার কিছু বলার আছে?
তৌসিফ : আসলে ব্যবসা করতে গিয়ে সবারই চিন্তা থাকে কিভাবে বেশি লাভ করা যায়। আর বড় সমস্যা হচ্ছে, সিনেমার মত আমাদের নাটকের কোন সেন্সর ব্যবস্থা নেই। যারা ঠিক করবেন এই জিনিসগুলো প্রচার করা যাবে কিংবা যাবে না। এটাই হচ্ছে বড় সমস্যা। তবে আমি বলতে চাই- আমাদের নিজেদের নাটক ফেলে অন্যদের কিছু চালানো উচিত নয়। দিনশেষে দেখা যাবে আমরাই শুভঙ্করের ফাঁকিতে পড়বো!
জাগো নিউজ : চলচ্চিত্র নিয়ে কিছু ভাবেন?
তৌসিফ : অবশ্যই। প্রত্যেক শিল্পীই চলচ্চিত্রে কাজ করতে চান। আমিও চাই। চলচ্চিত্রে কাজের জন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছি। আমি চলচ্চিত্রে কাজ করলে কোনো ঘরানা বেছে কাজ করবো না। আমি আগে গল্প-নির্মাতা-প্রযোজক এই তিনটা জিনিস প্রাধান্য দিয়ে কাজ করবো। এখন অনেক নির্মাতারা আছেন যাদের কাজ আমার ভালো লাগে। তাদের সঙ্গেই কাজ করবো। শিগগিরই হয়তো বড় পর্দায় দেখা মিলবে। বাকীটা চমক হিসেবে রইলো।
এনই/এলএ/পিআর