ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিনোদন

প্রিমিয়ারে প্রশংসিত তৌকীর আহমেদের অজ্ঞাতনামা

প্রকাশিত: ১০:৪৪ এএম, ১৬ আগস্ট ২০১৬

নন্দিত অভিনেতা ও নির্মাতা তৌকীর আহমেদ পরিচালিত ‘অজ্ঞাতনামা’ ছবিটি আগামী ১৯ আগস্ট মুক্তি পাবে। পরিচালনার পাশাপাশি সিনেমাটির গল্প, চিত্রনাট্য ও সংলাপ রচনাও করেছেন তৌকীর আহমেদ। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ইমপ্রেস টেলিফিল্মের এই ছবিটির প্রিমিয়ার অনুষ্ঠিত হলো আজ মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট)।

রাজধানীর বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ‘অজ্ঞাতনামা’র পরিচালক তৌকীর আহমেদ, ইমপ্রেস টেলিফিল্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, ছবিটির অভিনয়শিল্পী ফজলুর রহমান বাবু ও নিপুণ। এছাড়াও অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নির্মাতা আফজাল হোসেন ও তার স্ত্রী তাজিন হালিম, অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা ও নির্মাতা বদরুল আনাম সৌদ দম্পতি। আরো ছিলেন বিপাশা হায়াত, নাতাশা হায়াত, শাহেদ শরীফ খান, শহীদুল আলম সাচ্চু, আনন্দ আলো ম্যাগাজিনের সম্পাদক রেজানুর রহমান প্রমুখ।

Toukir

আজ বেলা সাড়ে ১১টায় ছবিটির প্রিমিয়ার শুরু হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা ব্যাপ্তির ছবিটির গল্প ছুঁয়ে গেছে দর্শকদের মন। এখানে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় অবৈধভাবে বিদেশ গিয়ে মৃত্যুবরণ করা এক শ্রমিক আসিরউদ্দিন প্রামাণিকের গল্প বলা হয়েছে। যার বাড়িতে আছে যুবতী স্ত্রী শেফালী, ৪-৫ বছরের ছেলে সবুজ। আছে বৃদ্ধ বাবা ও মা। আসিরউদ্দিন তারই গ্রামের যুবক শেখ আব্দুল ওয়াহাবের পাসপোর্ট জাল করে আরব দেশ আজমানে পাড়ি দেয়। এক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে তার লাশ আসে দেশে। পরিবারের পক্ষ থেকে সেই লাশ গ্রহণ করতে গিয়ে ঘটে নানা ঘটনা। যার সমাপ্তি হয় হৃদয়বিদারক। আসিরউদ্দিনের বাবা কেফায়েতউদ্দিন প্রামাণিকের চরিত্রে ফজলুর রহমান বাবুর মুখে- ‘নামটাই যদি না থাকল তবে থাকল কী আর মানুষটার’ সংলাপ প্রতিটি অন্তরেই বেদনা জাগাবে। মনুষত্বকে নাড়া দেবে তার, ‘সব মানুষেরই সৎকারের অধিকার থাকে।’ ছবির প্রদর্শনী শেষে হাততালিতে ব্যস্ত প্রতিটি দর্শকের চোখে মুখেই ছিলো এমনই ভাবনার ছাপ।

Toukir

তার আগে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফরিদুর রেজা সাগর। তিনি বলেন, ‘তৌকীর আহমেদ এই দেশের অভিনয় জগতের উজ্জ্বল এক তারকা। তার কতো নাটক আমাদের মুগ্ধ করেছে তা আঙুল গুণে বলা মুশকিল। আশির দশকের শেষদিকে এই নক্ষত্রের আবির্ভাব। আর বিগত কয়েক বছর ধরে আমরা পরিচালক তৌকীরে মুগ্ধ হচ্ছি। সেই ধারাবাহিকতায় ‘অজ্ঞাতনামা’ তার চতুর্থ ছবি। এটি এরই মধ্যে কান চলচ্চিত্র উৎসবে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রদর্শিত হয়েছে। এছাড়াও দেশের বাইরে বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়ে প্রশংসা পেয়েছে। আশা করছি আপনাদেরও ভালো লাগবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘নানা কারণেই এই ছবিটি আমাদের কাছে বিশেষ। তার অন্যতম ছবিটি তৌকীর আহমেদ পরিচালিত। তৌকীর মানেই দারুণ কিছু সেটা আমরা সবাই জানি। পরিচালক হিসেবে একদিকে এটি তার চতুর্থ ছবি। আর একক প্রযোজনায় ‘অজ্ঞাতনামা’ ইমপ্রেসের এটি ৯৯তম চলচ্চিত্র। অর্থাৎ নার্ভাস নাইনটিতে আছি আমরা। আমি সবাইকে ‘অজ্ঞাতনামা’ ছবির প্রিমিয়ারে স্বাগত জানাচ্ছি।’

Toukir

নিজের বক্তব্যে তৌকীর আহমেদ তার ছবির কলাকুশলীসহ এর সঙ্গে জড়িত সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, ‘অনেক যত্ন নিয়ে ছবিটি নির্মাণ করেছি। প্রতিটি কাজেরই একটি উদ্দেশ্য থাকে। আমার এই ছবি নির্মাণেরও উদ্দেশ্য রয়েছে। সেটি হলো যারা বিদেশ গিয়ে ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটাতে চান তাদের সতর্ক করা। দালালের খপ্পরে পড়ে যেন কাউকে করুণ পরিণতির শিকার না হতে হয় সেই গল্পই এখানে বলার চেষ্টা করেছি। প্রতি বছর অবৈধ পথে অসংখ্য মানুষ বিদেশ যাচ্ছেন। দালালরা লোভ দেখিয়ে তাদের বিদেশে পাঠিয়েই খালাস। আবার বিদেশে গিয়ে মৃত্যুবরণ করা মানুষদের লাশ স্বজনদের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছে দেয়ার জন্য রাষ্ট্রের কিছু দায়িত্বের প্রতি আলোকপাত করেছি এখানে। ছবিটি দেখে যদি একজন মানুষও সচেতন হতে পারেন, যদি একটি প্রাণও বেঁচে যায়, যদি একটি পরিবারও রক্ষা পায় তবেই ‘অজ্ঞাতনামা’ সফল।’

তিনি আরো বলেন প্রাথমিকভাবে আমরা অল্প কিছু সিনেমা হলে ‘অজ্ঞাতনামা’ মুক্তি দিতে যাচ্ছি। তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলগুলো হচ্ছে- রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্স, ব্লকবাস্টার সিনেমাস ও শ্যামলী। পরবর্তীতে আরো বেশ কিছু হলে ছবিটি মুক্তি দেয়া হবে।

‘অজ্ঞাতনামা’ ছবিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, মোশাররফ করিম, নিপুণ, আবুল হায়াত, শতাব্দী ওয়াদুদ, শাহেদ আলী সুজন, শহীদুজ্জামান সেলিম, শাহেদ শরীফ খান প্রমুখ।

Toukir

প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালে ‘জয়যাত্রা’ ছবি দিয়ে চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তৌকীর আহমেদ। ছবিটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে বেশ কিছু স্বীকৃতি অর্জন করে নেয়। এরপর তিনি ‘রূপকথার গল্প’ ও ‘দারুচিনি দ্বীপ’ নামে আরো দুটি ছবি নির্মাণ করেন। প্রতিটি ছবিই দর্শক এবং সমালোচকদের মন জয় করতে সমর্থ হয়।

সর্বশেষ তিনি নির্মাণ করেছেন ‘অজ্ঞাতনামা’। এটি এরই মধ্যে ইতালির গাল্ফ অফ নেপলস ইন্ডিপেন্ডেন্ট ফিল্ম ফেস্টিভালে জুরি মেনশন অ্যাওয়ার্ডও অর্জন করেছে। প্রিমিয়ার দেখে অনেকেই আশা প্রকাশ করেছেন চলতি বছরের চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে এই ছবিটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রতিযোগিতায় অনেক সম্ভাবনা নিয়েই এগিয়ে থাকবে।

এলএ/এইচআর/পিআর

আরও পড়ুন