ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিনোদন

আজ ববিতার জন্মদিন

বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৭:০৮ এএম, ৩০ জুলাই ২০১৬

বাংলা চলচ্চিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তি অভিনেত্রী ববিতা। আজ বৃহস্পতিবার  আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই অভিনেত্রীর জন্মদিন। এবছরে তিনি ৬৩ বছরে পা রাখলেন।

শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকেই অনেকে সরাসরি দেখা করে ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ববিতাকে। ববিতাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তার বড় বোন কোহিনূর আক্তার সুচন্দা ও ছোট বোন চম্পাসহ তার অন্য ভাই ও আত্মীয়রাও। বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও রেডিও’র পক্ষ থেকেও শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে ববিতাকে।

ফেসবুকেও দেখা গেছে, ভিন্ন ভিন্ন প্রজন্মের তারকা-নির্মাতারা ববিতার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে ছবি ও স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। নানা প্রজন্মের ভক্তরাও দেশ-বিদেশ থেকে সামাজিক যোগাযোগের এই মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন নন্দিত অভিনেত্রী ববিতাকে। জাগো নিউজ পরিবারের পক্ষ থেকেও রইল ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা।

ববিতার পুরো নাম ফরিদা আক্তার পপি। ১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন তিনি। তার বাবা নিজামুদ্দীন আতাউব একজন সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন এবং মাতা বি. জে. আরা ছিলেন একজন চিকিৎসক।

বাবার চাকরি সূত্রে তারা তখন বাগেরহাটে থাকতেন। তবে তার পৈতৃক বাড়ি যশোর জেলায়। শৈশব এবং কৈশরের প্রথমার্ধ কেটেছে যশোর শহরের সার্কিট হাউজের সামনে রাবেয়া মঞ্জিলে।

তিন বোন ও তিন ভাইয়ের মধ্যে বড়বোন সুচন্দা চলচ্চিত্র অভিনেত্রী, বড়ভাই শহীদুল ইসলাম ইলেট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, মেজভাই ইকবাল ইসলাম বৈমানিক, ছোটবোন গুলশান আখতার চম্পা চলচ্চিত্র অভিনেত্রী এবং ছোটভাই ফেরদৌস ইসলাম বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা।

ববিতার একমাত্র ছেলে অনিক থাকেন কানাডার টরেন্টোতে। জীবনের এই বিশেষ দিনটিতে তাই তিনি খুব মিস করছেন ছেলেকে। উদযাপন করতে চান তিনি। অনিক ওয়াটার ল্যু ইউনিভার্সিটি থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ অনার্স শেষ করেছেন।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে দুই শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন ববিতা। চলচ্চিত্রে তার শুরুটা হয়েছিল গত শতকের ষাটের দশকের শেষ দিকে। ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী পপি (ববিতার ডাক নাম) ‘সংসার’ ছবিতে রাজ্জাক ও সুচন্দার মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবির নির্মাতা ছিলেন জহির রায়হান। ছবিটি মুক্তি পায়নি। জহির রায়হান ববিতাকে নিয়ে ‘জ্বলতে সুরুজ কা নিচে’ নামে একটি উর্দু ছবির কাজ শুরু করেন। মাঝপথে থেমে যায় এই ছবিটিরও কাজ। এরপর জহির রায়হান রাজ্জাক ও ববিতাকে নিয়ে তৈরি করেন চলচ্চিত্র ‘শেষ পর্যন্ত’। আর এটিই ছিল ববিতার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র। তারপর থেকেই ঢাকাই ছবিতে এই নক্ষত্রের উত্থান। আজও তিনি আলো ছড়িয়ে যাচ্ছেন অভিনয়ে।

ববিতা সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র অঙ্গনে প্রশংসিত হন। তিনি পরপর তিন বছর একটানা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতে নিয়ে রেকর্ড করেন। ‘অশনি সংকেত’ চলচ্চিত্রে ‘অনঙ্গ বউ’ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি বেঙ্গল ফ্লিম জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সর্বভারতীয় শ্রেষ্ঠ নায়িকার পুরস্কার পান।

এছাড়াও সরকারি এবং বেসরকারি অসংখ্য পুরস্কার তিনি লাভ করেছেন। এজন্য তাকে ‘পুরস্কার কন্যা’ বলা হতো। তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে সবচেয়ে বেশিবার আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

ববিতা অভিনীত চলচ্চিত্রের মধ্যে অশনি সংকেত, রামের সুমতি, নিশান, মন্টু আমার নাম, প্রতিজ্ঞা, বাগদাদের চোর, লাভ ইন সিঙ্গাপুর, চ্যালেঞ্জ, হাইজ্যাক, মায়ের জন্য পাগল, টাকা আনা পাই, স্বরলিপি, তিনকন্যা, লটারী, শ্বশুরবাড়ি, মিস লংকা, জীবন সংসার, লাইলি মজনু, বসুন্ধরা, গোলাপী এখন ট্রেনে, নয়নমনি, সুন্দরী, অনন্ত প্রেম, লাঠিয়াল, এক মুঠো ভাত, মা, ফকির মজনু শাহ, জন্ম থেকে জ্বলছি, বড় বাড়ির মেয়ে, পেনশন, দহন, চন্ডীদাস ও রজকিনী, দিপু নাম্বার টু ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

জন্মদিন নিয়ে পরিকল্পনার কথা বলতে গিয়ে ববিতা জাগো নিউজকে বলেন, ‘জন্মদিনে আমি সাধারনত ছেলের কাছেই চলে যাই। ওকে সঙ্গে নিয়ে কানাডাতে মজা করি। মা-ছেলে একান্তে সময় কাটাই। সেই হিসেবে বেশ কয়েকবছর পর এবারে আমি ঢাকায় জন্মদিন উদযাপন করছি। ভেবেছিলাম এবার একটু আয়োজন করে তা করবো। কিন্তু দেশের সার্বিক পরিস্থিতি এখন ভালো নয়। দেশে ঘটে যাওয়া নানা দুর্ঘটনার কারণে নিজের মনটাও ভালো নেই। এত ক্রন্দন, আতংকের মাঝে আনন্দ আসে না। তাই জন্মদিনে তেমন কিছুই করছি না।’

তিনি আরো বলেন, ‘হয়তো দেখা করতে আমার দুই বোন সুচন্দা বুজি আর চম্পা আসতেও পারে। দিনের কোনো একটি সময়ে ডিসিসিআইআই (ডিসট্রেস চিলড্রেন ইনফ্যান্ট ইন্টারন্যাশনাল) থেকে ছোট ছোট বাচ্চারা আসবে নাচতে, গাইতে। কারণ এর
গুডউইল অ্যাম্বাসেডর হিসেবে এখনও কাজ করছি আমি। ওদের সঙ্গেই জন্মদিনের বিশেষ মুহূর্ত কেটে যাবে আমার। বিশেষ এই দিনটিতে আমি সবার কাছে দোয়া চাই যেন সবসময় ভালো থাকি, সুস্থ থাকি। আর আমি দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য দোয়া করি যেন সবাই যার যার অবস্থানে ভালো থাকেন।’

আমরাও চাই আরো অনেকদিন আমাদের মাঝে বেঁচে থাকুন ববিতা। অভিজ্ঞতার ছায়া দিয়ে যান ঢাকাই চলচ্চিত্রে এই ক্রান্তিলগ্নের প্রতিটি মুহূর্তে। শুভ জন্মদিন নায়িকা!

এলএ/

আরও পড়ুন