ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিনোদন

কী হতে চেয়েছিলেন নায়ক আলমগীর

বিনোদন প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৫:৫৬ পিএম, ০৩ এপ্রিল ২০২৫

সিনেমায় অভিনয় করে দেশসেরা নায়ক হয়েছেন আলমগীর। চলচ্চিত্রের ক্যারিয়ারে অনেক ব্যবসাসফল ও জনপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি। তবে জীবনের শুরুতে তিনি পাইলট হতে চেয়েছিলেন। আর বাবার ইচ্ছে ছিল ছেলে ডাক্তার হবে। মা চেয়েছিলেন ছেলে হবে উকিল!

নিয়তি আলমগীরকে করেছে রুপালি দুনিয়ার বাসিন্দা। ‘মানুষ ভাবে এক, হয় আরেক’ বহুল প্রচলিত এ কথা নায়ক আলমগীরের বেলায় যেন অক্ষরে অক্ষরে সত্যি হয়েছে। বাংলা সিনেমার এই জনপ্রিয় নায়কের আজ (৩ এপ্রিল) জন্মদিন। ৭৫ বছরে পা রাখলেন আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

নায়ক আলমগীরের বাবা ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম সবাক চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’-এর অন্যতম প্রযোজক। মা ছিলেন গৃহিণী। ১৯৭২ সালে ‘আমার জন্মভূমি’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে নাম লেখান আলমগীর। সেই থেকে ৫০ বছরেরও বেশি সময় তিনি পার করে দিয়েছেন চলচ্চিত্র অঙ্গনে। যদিও বাবা-মা চাননি ছেলে সিনেমায় আসুক।

কী হতে চেয়েছিলেন নায়ক আলমগীরআলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

চলচ্চিত্রে যুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে আলমগীর বলেছিলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছিলাম। অন্য কোনো পেশায় গেলে হয়তো ভালো ক্যারিয়ারও হতো। কিন্তু শৈশব থেকে মাথায় ঢুকে গিয়েছিল সিনেমার পোকা। এই অঙ্গনে কাজ করতে গেলে একটু পাগলামি থাকতে হয়। উত্তমকুমার, দিলীপ কুমার, রাজ্জাক ভাইদের দেখে দেখে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবতাম, ইশ্, আমি যদি তাদের মতো হতে পারতাম।’

বাবা ছাড়া আলমগীরের পরিবারের আর কেউ সিনেমায় সম্পৃক্ত ছিলেন না। সিনেমার প্রতি গভীর অনুরাগ তাকে টেনে আসে, বেঁধে রাখে চলচ্চিত্রে। জীবনের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি নিয়ে আলমগীর একবার বলেছিলেন, ‘বাবা ভেবেছিলেন, তার বড় ছেলে ডাক্তার হবে। মা ভেবেছিলেন, বড় উকিল হতে পারব। আমি নাকি খুব গুছিয়ে কথা বলতে পারি। আর আমি চেয়েছিলাম পাইলট হতে। বাস্তবে কোনোটাই হতে পারিনি, আবার পেরেছিও। তবে সেটা সিনেমার পর্দায়। আমার মা খুব ঠান্ডা মানুষ ছিলেন। তাকে জীবনে কোনোদিন নামাজ কাজা করতে দেখিনি। দুইবেলা কোরান শরিফ পড়তেন। মায়ের একটা শখ ছিল আমাদের রান্না করে খাওয়ানো। তিনি ছিলেন পুরোদস্তুর গৃহিণী। যখন বাবা মারা গেলেন, তার এক-দেড় মাস পরই তো ফিল্মে এলাম।’

বিজ্ঞাপন

কী হতে চেয়েছিলেন নায়ক আলমগীর‘ভাত দে’ সিনেমার একটি দৃশ্যে আলমগীর

ছেলের ভবিষ্যত নিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় ছিলেন আলমগীরের মা। অভিনেতা বলেন, ‘মা একবার শুধু জিজ্ঞেস করেছিলেন, “তুই পারবি?” বলেছিলাম, আম্মা, চেষ্টা করে দেখি না। তবে আমাকে উৎসাহ দিয়েছিলেন বড় বোন ও তার হাজব্যান্ড। বলেছিলেন, ‘ছবির নাম যেহেতু “আমার জন্মভূমি”, স্বাধীনতা নিয়ে, দেশের ছবি, ইতিহাস হয়ে থাকবে, করো। তবে একটাই করো। আর না।’

আলমগীর অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র আলমগীর কুমকুম পরিচালিত যুদ্ধভিত্তিক ‘আমার জন্মভূমি’ ১৯৭৩ সালে মুক্তি পায়। তার অভিনীত দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ছিল ‘দস্যুরাণী’। ১৯৭৫ সালে তিনি শাবানার বিপরীতে ‘চাষীর মেয়ে’ ও কবরীর বিপরীতে ‘লাভ ইন শিমলা’ সিনেমায় অভিনয় করেন। পরের বছর আলমগীর কুমকুম পরিচালিত ‘গুন্ডা’ সিনেমায় রাজ্জাক ও কবরীর সাথে একটি ছোট্ট চরিত্রে এবং তাহের চৌধুরী পরিচালিত ‘মাটির মায়া’ সিনেমায় ফারুক ও রোজিনার সাথে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন।

বিজ্ঞাপন

১৯৭৮ সালে দিলীপ বিশ্বাস নির্মিত ‘জিঞ্জীর’ সিনেমায় রাজ্জাক ও সোহেল রানার সাথে অভিনয় করেন আলগীর। ১৯৮২ সালে তিনি আসাদ চরিত্রে কামাল আহমেদ নির্মিত ‘রজনীগন্ধা’ সিনেমায় অভিনয় করেন। এতে তার সহশিল্পী ছিল রাজ্জাক, শাবানা ও অঞ্জনা। ১৯৮৪ সালে তিনি আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘ভাত দে’ ও ‘সখিনার যুদ্ধ’ চলচ্চিত্রে কাজ করেন। দুটি ছবিতে তার বিপরীতে অভিনয় করেন শাবানা এবং এর মধ্য দিয়ে শাবানার সাথে তার জুটি গড়ে ওঠে, যা পরবর্তী এক দশক বাংলা চলচ্চিত্রে রাজত্ব করে। ‘ভাত দে’ সিনেমায় তিনি একজন দরিদ্র বাউলের শিষ্য ‘গহর’ চরিত্রে অভিনয় করেন। এরপর থেকে আলমগীর একের পর সিনেমায় অভিনয় করে জনপ্রিয়তা লাভ করেন।

কী হতে চেয়েছিলেন নায়ক আলমগীরআলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

আলমগীরের ক্যারিয়ারে উল্লেখ্যযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘মা ও ছেলে’ , ‘ক্ষতিপূরণ’, ‘মরণের পরে’, ‘পিতা মাতা সন্তান’, ‘অন্ধ বিশ্বাস’, ‘রাঙা ভাবী’, ‘দোলনা’, ‘অচেনা’, ‘সান্ত্বনা’, ‘ক্ষমা’, ‘স্নেহ’, ‘দেশপ্রেমিক’, ‘কন্যাদান’, ‘পোকা মাকড়ের ঘরবসতি’, ‘জীবন মরণের সাথী’, ‘কে আপন কে পর’, ‘হৃদয় ভাঙ্গা ঢেউ’, ‘মাটির ঠিকানা’, ‘জজ ব্যারিস্টার’, ‘নিষ্পাপ’, ‘মায়ের দোয়া’, ‘অপেক্ষা’, ‘স্বামী স্ত্রী’, ‘পথে হলো দেখা’।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন:

অভিনয়ের জন্য আলমগীর একাধিকবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এছাড়া তিনি একুশে পদকেও ভূষিত হয়েছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি আলমগীর কয়েকটি সিনেমা পরিচালনা ও প্রযোজনাও করেছেন।

এমএমএফ/আরএমডি/এমএস

আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন