‘দোস্তজী’ সিনেমার ট্রেলার ও নির্মাতার প্রশংসায় অমিতাভ-ফারুকী
ভারতের নতুন প্রজন্মের নির্মাতা প্রসূন চট্টোপাধ্যায়ায়ের ‘দোস্তজী’র সিনেমার ট্রেলার প্রকাশিত হয়েছে। ট্রেলার দেখে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন বলিউড শাহেন শাহ অমিতাভ বচ্চন ও বাংলাদেশের খ্যাতিমান নির্মাতা মোস্তাফা সরয়ার ফারুকী।
সম্প্রতি টুইট করে অমিতাভ পরিচালককে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। প্রসূনের উদ্দেশ্যে অমিতাভ টুইটে লেখেন, তরুণ বাঙালি পরিচালক প্রসূন চট্টোপাধ্যায়ের একটি অনন্য প্রয়াস ‘দোস্তজী’। বিদেশে খ্যাতি অর্জন করেছে। ছবির সমস্ত কলাকুশলী, অভিনেতাদের জন্য শুভ কামনা।’ একই সঙ্গে তিনি ছবির একটি শর্ট ভিডিও-ও শেয়ার করেছেন তিনি।
T 4454 - a unique film DOSTOJEE , by a young Bengali director Prasun Chatterjee, gaining laurels all over ..
— Amitabh Bachchan (@SrBachchan) October 30, 2022
all good wishes ..
Film Clip https://t.co/uLCdqHfrff
অমিতাভের এমন প্রশংসায় আপ্লুত প্রসূন। তিনি জানিয়েছেন, প্রথম ছবিতেই বিদেশ থেকে এত সম্মান, নিজের দেশের সিনে দুনিয়ার রথী-মহারথীদের আশীর্বাদ পাবেন ভাবতেই পারেননি। আনন্দে তিনি যেন হাওয়ায় ভাসছেন।
জানা গেছে ‘দোস্তজী’ সিনেমাটি আসছে ১১ নভেম্বর মুক্তি পাবে।
নির্মাতা- প্রসূন চট্টোপাধ্যায়
এদিকে প্রসূন চট্টোপাধ্যায়াকে নিয়ে বাংলাদেশের জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তাফা সরয়ার ফারুকী একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন তার ফেসবুকে। পাশাপাশি তিনি স্ট্যাটাস ও দিয়েছেন। স্ট্যাটাসে ফারুকী লিখেছেন, প্রসূনকে আমি জানি অনেক দিন থেকে। তার সঙ্গে সামনাসামনি দেখা হওয়ার আগে ইনবক্সেই কথা বার্তা। কিন্তু যেদিন সামনাসামনি আমাদের দেখা হয় সেদিন আমার মনে হয়েছে ওকে আমি আগেও দেখেছি। চিন্তা করার চেষ্টা করলাম কোথায় দেখেছি। কিন্তু মনে আসলো না। আমি ফ্লাইট থেকে নেমে তাড়ায় ছিলাম সেই জন্য বললাম, ‘আবার দেখা হবে, প্রসূন’!
ফারুকী আরও বলেন, তারপর যেতে যেতে আরেক দফা ভাবলাম কেনো ওকে চেনা চেনা মনে হলো। ওর মাঝে আমার অতীতকে দেখে কি চেনা মনে হলো? বাইরে নরম-সরম কিন্তু ভেতরে ভীষণ জেদি, স্থিরপ্রতিজ্ঞ যেটাকে বলে। চোখগুলা স্বপ্নের ঘোরে ঘোরগ্রস্ত। আমার মনে পড়লো প্রথম সিনেমা বানানোর আগে আমি অনেকের সঙ্গে দেখা করে বলতাম, সামনে ছবি বানাচ্ছি। ছবি বানাচ্ছো ফাইন্যান্স জোগাড় হয়েছে? না। কথা হচ্ছে? না। তাহলে? জানিনা, তবে ছবি বানাচ্ছি। প্রসূনও সেই মাল। আজকে বললে মনে হতে পারে বানিয়ে বলছি কিনা! কিন্তু আমি জানতাম, ও ছবিটা বানাবেই, নিজের মতো করেই বানাবে। ও তাড়াতাড়ি বিদায় বলতে আসে নাই।
স্ট্যাটাসের শেষের দিকে ফারুকী লেখেন, তারপর তো ছবিটা বানালো, লন্ডনে প্রিমিয়ার হলো। সামনে ক্যামেরাইমেজে যাচ্ছে যেখানে ও নমিনেটেড! সাথে নমিনেটেড ওর সিনেমাটোগ্রাফার বন্ধু যে আসলে প্রাইমারি ইশকুলের টিচার। জ্বি, ঠিকই শুনেছেন। ওর সেই বন্ধুও নমিনেটেড ক্যামেরাইমেজে সিনেমাটোগ্রাফার হিসেবে। আচ্ছা, যদি এই স্বীকৃতিগুলা ও বা ওর ছবি না পেতো? তাহলেও প্রসূন তরুণ ফিল্মমেকারদের জন্য একটা উদাহরণ হয়েই থাকতো! লাভ ইউ, প্রসূন। আমাদের স্বপ্ন যেনো আমাদের ঘুমাতে না দেয়।
মোস্তাফা সরয়ার ফারুকীর স্ট্যাটাস শেয়ার দিয়ে বেশ আপ্লুত হয়ে প্রসূনও তার ফেসবুকে লেখেন, গুরুর কথা, গুরুর ভালোবাসা! কলেজ জীবনে যার সিনেমা দেখে মুগ্ধতা, বিস্ময় নিয়ে ঘোরের মধ্যে থেকেছি, যার সিনেমা বারবার দেখেছি, শেখার চেষ্টা করেছি, যার সিনেমা দেখে হিংসে করেছি, যদি এমন বানাতে পারতাম!! তার কাছ থেকে এমন উপহার পাওয়া, আমার মতন নাম-গোত্র-কৌলিন্যহীন এক নতুনের জন্য যে কী সুখের, সে কথা লিখে বোঝাই কীভাবে!! শ্রদ্ধা, ভালবাসা রইল, ফারুকী দা!
এদিকে ভাইফোঁটার পরেই প্রসেনজিৎ নিজের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ছবির তিন খুদে অভিনেতা, সিনেমাটোগ্রাফার তুহিন বিশ্বাস এবং পরিচালককে। সেখানেই সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, ‘দোস্তজী’ বাংলা ছবির গর্ব। তিনি তাই ছবিটি নিবেদন করছেন। তার কথায়, ‘পরিচালক থেকে অভিনেতা— প্রত্যেকের প্রথম ছবি। আর প্রথম ছবিতেই বাজিমাত! সর্বোচ্চ সম্মান ‘গোল্ডেন শিখা’ পুরস্কার। বাংলা ছবির গর্ব করার মতো দিন।’ ‘তার দুপাশে জড়সড় হয়ে দাঁড়িয়ে ছবির তিন মুখ্য অভিনেতা। তাদের বুকে জড়িয়ে নিতে নিতে স্নেহ আর গর্বমিশ্রিত অনুযোগ বুম্বাদার, ‘আমি ৩৫০টিরও বেশি ছবি করে ফেললাম! তবু এই সম্মান এখনও অধরা। তোরা তো পয়লা ছবিতেই নজির গড়লি!’
এমএমএফ/জেআইএম