মারা গেছেন ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’র রঞ্জন ঘোষাল
কবে শেষ হবে ২০২০ সাল? এ বছরে শোবিজে যেন মৃত্যু থামতেই চাইছে না। বিশ্বজুড়েই একের পর এক তারকাদের মৃত্যুর সংবাদ! ৬ জুলাই চলে গেলেন বাংলাদেশের গানের কিংবদন্তি মানুষ এন্ড্রু কিশোর। আজ ৯ জুলাই ওপার বাংলা থেকে খবর এলো বাংলা রক ব্যান্ড ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রঞ্জন ঘোষাল আর নেই।
বুধবার রাতে ঘুমাতে গিয়েছিলেন স্বাভাবিকভাবেই। সেই ঘুম আর ভাঙেনি তার। চলে গেলেন না ফেরার দেশে। থেমে গেলো মহীনের ঘোড়াগুলির এক অন্যতম ঘোড়ার যাত্রা। বৃহস্পতিবার ভোরে বেঙ্গালুরুর বাসায় ঘুমের মধ্যে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছে তার পরিবার।
জানা গেছে মৃত্যুকালে রঞ্জন ঘোষালের বয়স হয়েছিলো ৬৫ বছর বয়স। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি উচ্চ রক্তচাপের জটিলতায় ভুগছিলেন।
এ শিল্পীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পশ্চিমবঙ্গের শোবিজে।
প্রসঙ্গত, ১৯৫৫ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে মেমোরিতে জন্মগ্রহণ করেন রঞ্জন ঘোষাল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে স্নাতক উত্তীর্ণ হতেই সাংস্কৃতিক জগতে জড়িয়ে পড়েন রঞ্জন। গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম ব্যান্ড সপ্তর্ষিতে অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। সালটা ১৯৭৫। সদ্যই জনপ্রিয় বাংলা ব্যান্ড মহীনের ঘোড়াগুলি যখন প্রতিষ্ঠা হচ্ছে সেই শুরুর দিন থেকেই উপস্থাপক হিসেবে ছিলেন রঞ্জন।
মহীনের প্রথম অ্যালবাম, সংবিগ্ন পাখিকূল এর ভেসে আসে কলকাতা রঞ্জনেরই লেখা। শুধু তাই নয়, সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলা, আর্টওয়ার্ক গুলি রেকর্ড রাখা, অ্যালবামের কভার ডিজাইন এবং প্রচারের সমস্ত দায়িত্বেই ছিলেন তিনি।
আশির দশকের শুরুর দিকে ব্যান্ডের সদস্যরা অনিয়মিত হয়ে পড়লে দীর্ঘ বিরতির পর ১৯৯৫ সালে ‘আবার বছর কুড়ি পরে’ অ্যালবাম নিয়ে ফিরে আসে মহীনের ঘোড়াগুলি। সেই অ্যালবাম তুমুল জনপ্রিয়তা পায় নতুন প্রজন্মের শ্রোতাদের কাছে।
গানের পাশাপাশি চলচ্চিত্র ও মঞ্চ নাটকের চিত্রনাট্য ও গল্প-কবিতা লিখতেন রঞ্জন। বেঙ্গালুরুতে দীর্ঘদিন থিয়েটারও করেছেন। স্ত্রী সঙ্গীতা ঘোষালের সঙ্গে যৌথভাবে গিরিশ কর্নাডের হয়বদন, অরুণ মুখোপাধ্যায়ের মারীচ দ্যা লেজেন্ড-এর মতো নাটক মঞ্চস্থ করেছেন।
গেল কয়েক বছর ধরে স্ত্রী সঙ্গীতা ঘোষাল ও দুই পুত্রের সঙ্গে বেঙ্গালুরুতে স্থায়ীভাবে বাস করছিলেন। সেখানেই আজ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
এলএ/পিআর