অমিতাভকে ‘স্যার’ না বলায় বাদ পড়েছিলেন কাদের খান!
কখনও তিনি অভিনেতা। কখনও আবার তার কলম থেকেই উঠে এসেছে সেরার সেরা সব সংলাপ। সেই কাদের খানের মৃত্যুর পর তাকে ঘিরে এখন একের পর এক অজানা তথ্য সামনে আসছে।
গত ৩১ ডিসেম্বর কানাডার সময় অনুযায়ী সন্ধ্যা ছয়টায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন বলিউডের বরেণ্য অভিনেতা কাদের খান। দীর্ঘ দিন বার্ধক্যজনিত নানা অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। ১৭ দিন ধরে কানাডার একটি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। মৃত্যুর আগে কোমায় চলে যান এই অভিনেতা।
সম্প্রতি সামনে আসা একটি ভিডিও তার সম্পর্কে অবাক তথ্য দিয়েছে। দীর্ঘদিনের বন্ধু অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে ‘মিষ্টি’ সম্পর্ক কীভাবে ‘তিতকুটে’ হয়ে গিয়েছিল, ভিডিওতে সে কথাই বলতে শোনা গেছে প্রয়াত এ অভিনেতার।
অমিতাভ বচ্চন তখনও বলিউডের শাহেনশা হয়ে ওঠেননি। সেইসময় থেকেই কাদের খানের সঙ্গে তার ‘দোস্তি’। বরাবর মিস্টার বচ্চনকে ‘অমিত’ বলেই ডাকতেন কাদের। আর এই ‘অমিত’ ডাকের জন্যই এক প্রযোজকের কাছে কথাও শুনতে হয়েছিল তাকে।
ভিডিওতে কাদের খানকে বলতে শোনা যায়, ‘এক প্রযোজক আমাকে বলেন, ‘স্যার জি’র সঙ্গে আপনার দেখা হয়েছে? আমি তখন বলি, কে স্যার জি? উনি বলেন, ওই যে লম্বা মতো লোকটা। গোটা ইন্ডাস্ট্রি তাকে স্যার জি বলেই ডাকে। আপনি ডাকেন না?’ কাদের খান কিছুটা অবাক হয়েই প্রযোজককে বলেন, ‘এতো আমাদের অমিত। ও স্যার জি কবে থেকে হয়ে গেল?’
আর তারপরেই সেই দক্ষিণী প্রযোজককে কাদের খান বলেন, ‘যাকে এতদিন ধরে অমিত বলে আসছি, তাকে স্যার জি বলাটা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।’ আর ‘বন্ধু’ অমিতাভ বচ্চনকে ‘স্যার জি’ বলতে পারেননি বলেই তাকে বেশকিছু কাজ থেকে বাদ দেয়া হয়েছিল। একটু বিষাদের সুরেই কাদের খানকে কথাগুলো বলতে শোনা যায় ভিডিওতে।
তার মৃত্যুর খবর শোনার পর মিস্টার বচ্চন টুইট করেন, ‘কাদের খান চলে গেলেন। খুবই দুঃখের খবর। তুখড় মঞ্চ অভিনেতা এবং ফিল্মি দুনিয়ার সব থেকে প্রতিভাবান অভিনেতা। আমার বহু সফল ছবির লেখকও বটে। সঙ্গে এক জন ম্যাথমেটিশিয়ানও।’
কাদের খান সম্পর্কে আরও জানা যায়, মৃত্যুর আগে খাওয়া-দাওয়া একদম ছেড়ে দিয়েছিলেন হিন্দি চলচ্চিত্রের এই জনপ্রিয় অভিনেতা। মৃত্যুর আগে পাঁচদিন কিছুই মুখে তোলেননি ৮১ বছরের তিনি। এমনকি একফোঁটা পানিও না। বাড়ির খাবার ছাড়া কাদের খানের মুখে কিছু রোচে না। মৃত্যুর পাঁচদিন আগে পর্যন্ত বাড়ির খাবার খেয়েছেন তিনি। কাদের খানের ছেলে সরফরাজের স্ত্রী সাহিস্তা নিজের হাতে রান্না করে শ্বশুরকে খাওয়াতেন। কিন্তু ডাক্তার পরে বাইরের খাবারের অনুমতি দেননি। কাদের খানকে হাসপাতালের খাবার খেতে বলা হয়। তখনই বেঁকে বসেন তিনি। হাসপাতালের খাবার খেতে একদম রাজি হননি।
সাহিস্তার অনুরোধও রাখেননি। সাহিস্তা তাকে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, এই সময় খাবার খাওয়া তার জন্য কতটা জরুরি।
কাদের খানের এক বন্ধু জানান, ‘মৃত্যুর আগের পাঁচদিন শুধু খাবার নয়, এক ফোঁটা পানিও খাননি তিনি। তা সত্ত্বেও ১২০ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়েছেন। এমনটা সবার পক্ষে সম্ভব না।’
বাক্শক্তি না থাকায় কাদের খান চোখ দিয়ে সব প্রশ্নের জবাব দিতেন। চোখের অভিব্যক্তি দিয়ে দিয়ে বুঝিয়ে দেন, হাসপাতালের খাবার মোটেও মুখে তুলবেন না।
এসআর/পিআর