ভিডিও EN
  1. Home/
  2. একুশে বইমেলা

এখনো বিক্রির তুঙ্গে জনপ্রিয় লেখকদের বই

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০১:৩৯ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

চলছে অমর একুশে বইমেলা। মেলার যতই দিন গড়াচ্ছে, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বই বিক্রি। তবে প্রাণের মেলায় এখনো পাঠকদের পছন্দের শীর্ষে রয়ে গেছেন কালজয়ী লেখকরা। জীবিত না থাকলেও তারা আজও রয়েছেন পাঠকদের হৃদয়ে। তাইতো তাদের অনবদ্য সৃষ্টি গল্প, উপন্যাস, কবিতা, প্রবন্ধ বইপ্রেমীদের পছন্দের শীর্ষে। এবার জনপ্রিয় লেখকদের বই বেশি বিক্রি হওয়ার তথ্য দিচ্ছে প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরা।

বইমেলা ঘুরে বিক্রয়কর্মী ও প্রকাশকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অন্যান্য বছরের মত এবারও নজরুল-রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে হুমায়ুন আহমেদ, আহমদ ছফা, বিভূতি-ভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৈয়দ মুজতবা আলী, সমরেশ মজুমদার, হুমায়ুন আজাদ, শাহাদুজ্জামান ও আল মাহমুদের সহ জনপ্রিয় সাহিত্যিকদের বই বেশি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও আনিসুল হক, জাফর ইকবাল, সলিমুল্লাহ খানের বই পাঠকদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে।

ঐতিহ্য প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী নুর সোলায়মান জাগো নিউজকে বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনা সমগ্র অনেক বিক্রি হয়েছে। আল মাহমুদের রচনাবলি ও শাহাদুজ্জামানের বইয়ের চাহিদাও বেশি। আমাদের নতুন অনেক বই এসেছে। তবে পুরনো এসব বই প্রতিদিনই বিক্রি হচ্ছে।

অন্বেষা প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী কাদির বলেন, নতুন লেখকরা আগের জনপ্রিয় লেখকদের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছেন না। তরুণদের আগ্রহে এখনো হুমায়ুন আহমেদ। তার উপন্যাসের চাহিদা অনেক বেশি। মিসির আলীর ভুবন, তোমার জন্য ভালোবাসা, হিমু সমগ্র বেশি চাচ্ছেন পাঠকরা।

মাওলা ব্রাদার্সের বিক্রয়কর্মী মালিহা বলেন, আহমদ ছফার উপন্যাস যদ্যপি আমার গুরু, গাভী বৃত্তান্ত ও রচনা সমগ্র, কাজী নজরুলের রচনা ও শাহাদুজ্জামানেরব ক্রাচের কর্ণেল বই অনেক বিক্রি হয়েছে।

আগামী প্রকাশনীতে গিয়ে দেখা গেছে কালজয়ী লেখকদের মত হালের জনপ্রিয় লেখকদের বইও বিক্রি হচ্ছে। বিক্রয়কর্মী সজিব জানান, হুমায়ুন আজাদের বই ভালো চলছে। তার লেখা নারী, তৃতীয় লিঙ্গ, পাক সার জমিন সাদ বাদ বই গুলো পাঠকরা চাচ্ছেন। এছাড়াও সলিমুল্লাহ খানের প্রার্থনা, উহারা বাতাসে, ফরহাদ মাজহারের বই ও বিক্রি হচ্ছে।

অন্যপ্রকাশের স্টলের তৌহিদ প্রান্ত জাগো নিউজকে বলেন, হুমায়ুন আহমেদের প্রায় সব বই বিক্রি হচ্ছে। একা একা, চলে যায় বসন্তের দিন, দেয়াল, শঙখনীল কারাগার সহ বিভিন্ন বই বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও সমসাময়িকদের মধ্যে সাদাত হোসাইনের আগুন ডানা মেয়ে বইটি ভালো বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়াও মেলা ঘুরে দেখা গেছে, বইপ্রেমীরা কালজয়ী সাহিত্যিকদের বই সংগ্রহ করছে। পাঠকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখনো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষের কবিতা, গল্প-কবিতা সমগ্র, শওকত আলীর প্রদোষে প্রাকৃতজন, জহির রায়হানের হাজার বছর ধরে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রথম আলো, সেই সময় , আনিসুল হকের কিশোর গোয়েন্দা, মা, শহীদুল্লাহ কায়সারের সারেং বৌ, সংশপ্তক, জাহানারা ইমামের একাত্তরের দিনগুলি, জাফর ইকবালের সাইন্স ফিকশন বই তারা পছন্দের শীর্ষে রেখেছেন।

এছাড়াও প্রথমা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত আকবর আলি খানের অর্থনীতি সংশ্লিষ্ট বই, মহিউদ্দিন আহমেদের একাত্তর ও পঁচাত্তর, এক-এগার বাংলাদেশ, আনিসুল হকের কখনো আমার মাকে বইগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিক্রয়কর্মী রাশেদুল ইসলাম।

মেলা প্রাঙ্গণে কথা হয় ঢাকা কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মামুন হোসেনের সঙ্গে। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, বইমেলায় আমি মূলত সৃজনশীল বই আর সাহিত্যি বেশি পছন্দ করি। হুমায়ুন আহমদের দুইটি উপন্যাস নিয়েছি। এ যাবৎকালে তার উপন্যাস গুলোর মত সাম্প্রতিক সময়ে আর কেউ লিখতে পারেনি। উনার বই গুলো নিতে গেলে এখনো ভিড়ের মধ্যে পড়তে হয়। শুধু হুমায়ুন আহমেদ নয়, বইমেলায় এখনো উনিশ শতকের কবিদের বই পছন্দের শীর্ষে। এখন সমসাময়িক লেখকরা পাঠকদের আকর্ষিত করতে পারেনি, বিষয়ভিত্তিক বই লিখলেও সাহিত্যের জগতে আধিপত্যশীল লেখক তৈরি হয়নি।

অন্বেষা প্রকাশনীর প্রকাশক শাহাদাত হোসাইন জাগো নিউজকে বলেন, প্রথিতযশা লেখকদের চাহিদা সবসময়ই থাকে। তাদের বইয়ের জন্য এখনো ভিড় হয়। তবে তরুন বা যারা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে তাদের বিষয়ভিত্তিক বইয়ে পাঠকদের চাহিদা রয়েছে। বেশ ভালো বিক্রি ও হচ্ছে। তরুন এসব লেখকদের সময় দিতে হবে, ধীরে ধীরে তারাও জনপ্রিয় হয়ে উঠবেন।

আরএএস/এসআইটি/এমএস