অনুবাদের সংকট সাহিত্যের সামগ্রিক সংকটের সঙ্গেই যুক্ত
‘বাংলাদেশে অনুবাদের সংকট আমাদের শিক্ষা ও সাহিত্যের সামগ্রিক সংকটের সঙ্গেই যুক্ত। বাংলা একাডেমি দেশের সামগ্রিক অনুবাদ কার্যক্রমের কথা বিবেচনায় নিয়ে এ বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করলে এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবাই উপকৃত হবে।’
রোববার বিকেল ৪টায় অমর একুশে বইমেলার মূলমঞ্চে এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘বাংলা একাডেমির হীরকজয়ন্তী : অনুবাদ কার্যক্রম, অতীত থেকে বর্তমান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট অনুবাদক অধ্যাপক আবদুস সেলিম।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন ড. নিয়াজ জামান, অধ্যাপক কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়, ড. ফকরুল আলম এবং অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন। সভাপতিত্ব করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।
বক্তারা বলেন, ‘বাংলা একাডেমি বিভিন্ন বিষয়ে যে বিপুল অনুবাদ কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে তা সত্যি প্রশংসাযোগ্য। তবে অনুবাদ বই প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারে এইসব বইয়ের যথাযথ বিপণনের বিষয়েও একাডেমির মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন।’
ড. নিয়াজ জামান তার প্রাবন্ধে বলেন, বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠার পর গত ছয় দশক যাবৎ অনুবাদ কার্যক্রমে বিশেষ গুরত্ব দিয়ে আসছে। ইংরেজি, আরবি, ফারসিসহ বিভিন্ন ভাষার মৌলিক সাহিত্যকর্ম, ইতিহাস, পাঠ্য পুস্তকসহ জ্ঞানের বিভিন্ন শাখার স্মরণীয় কীর্তিসমূহ বাংলায় ভাষান্তর এবং বাংলা থেকে বাংলা সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য সৃষ্টিসম্ভার ইংরেজিতে অনুবাদের ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমির অবদান স্মরণযোগ্য।
তিনি বলেন, এখন প্রয়োজন একাডেমির অভিধান বিভাগের সঙ্গে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং ব্যক্তি পর্যায়ে বুদ্ধিজীবী ও অনুবাদকদের সংযোগ স্থাপন করে একটি সুনির্দিষ্ট অনুবাদ নির্দেশনা প্রণয়ন করে অনুবাদ কার্যক্রমকে গতিশীল এবং একই সঙ্গে মানসম্পন্ন করে তোলা।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, অনুবাদের বিষয়টি কেবল ভাষাগত নয়, একই সঙ্গে দার্শনিকও বটে। তাই বাংলা একাডেমিকে তার অনুবাদ কার্যক্রমের সংখ্যাগত দিকের পাশাপাশি এর অন্তর্বস্তুর দিকেও দৃষ্টি দিতে হবে।
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গোলাম কুদ্দুছের পরিচালায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বহ্নিশিখা’-এর শিল্পীবৃন্দ। সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী লিলি ইসলাম, ফাহিমা হোসেন চৌধুরী, সাজেদ আকবর, সালমা আকবর, অণিমা রায়, শরীফ মো. সজীব। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন বিশ্বজিৎ সরকার (তবলা), গাজী আবদুল হাকিম (বাঁশি), সুনীল কুমার সরকার (কী- বোর্ড), মো. আবু কামাল (বেহালা) এবং নাজমুল আলম খান (মন্দিরা)।
এমএম/এমএইচ/এসকেডি/এবিএস