ভিডিও EN
  1. Home/
  2. একুশে বইমেলা

ভালো কিছু লিখতে চাই: প্রিন্স আশরাফ

সালাহ উদ্দিন মাহমুদ | প্রকাশিত: ০১:০৬ পিএম, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২

লেখক প্রিন্স আশরাফের জন্ম ৪ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরার বড়দল গ্রামে। বাবা ডা. সফেদ আলী সানা। মা সাহারা খাতুন। পেশায় চিকিৎসক হয়েও লেখালেখিতে মনোযোগী তিনি। রহস্য, থ্রিলার, হরর, অতিপ্রাকৃত, সায়েন্স ফিকশনের পাশাপাশি মূলধারার গল্প-উপন্যাসেও তার দক্ষতা সমানভাবে চোখে পড়ে। শিশুসাহিত্যেও পদচারণা লক্ষণীয়।

লেখালেখির পাশাপাশি আলো ও ছায়া নামে সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন। দৈনিক যায়যায়দিনের সিনিয়র সাব-এডিটরের দায়িত্বে আছেন। রোদ্দুর শিশু-কিশোর ম্যাগাজিন সম্পাদনা করছেন। বৈশাখী টিভি চ্যানেলে নাট্যকার প্রতিযোগিতায় পুরস্কার জিতেছেন। অনুবাদ সাহিত্যেও তার পদচারণা আছে।

‘ধুয়াশা গন্তব্যে’, ‘রূ’, ‘মৃত্যুছায়া’, ‘চক্র’, ‘মূর্তিরহস্য’, ‘ছিন্নমস্তা’, ‘পিশাচসাধক’, ‘যুযুধা’, ‘দানব’, ‘নিশাচর’, ‘হিম’, ‘দস্যিপনা’, ‘অপচ্ছায়া’, ‘রক্তচক্র’, ‘একাত্তরের রঙিন ঘুড়ি’, ‘সুন্দরবনে শিহরণ’, ‘মগজ ধোলাই’, ‘অপরাধযাপন’, ‘আগুনের ফুল’, ‘আপনালয়’, ‘মাটি’, ‘রাজশহরের পরী’, ‘তামাম শুদ’ তার উল্লেখযোগ্য বই।

তিনি একাত্তর সিরিজের বইয়ের জন্য ‘বিশাল বাংলা সাহিত্য পুরস্কার ২০১৬’ লাভ করেন। এ ছাড়া ‘দেশজ পাণ্ডুলিপি পুরস্কার ২০১৮’, ‘কিশোর কলম সাহিত্য পুরস্কার ২০১৯’, ‘প্রিয় বাংলা পাণ্ডুলিপি পুরস্কার ২০১৯’, ‘অক্ষরবৃত্ত পাণ্ডুলিপি পুরস্কার ২০১৯’, ‘বাসাসপ সাহিত্য পুরস্কার ২০১৯’ এবং ‘এসবিএসপি সাহিত্য পুরস্কার ২০২০’ লাভ করেন।

সম্প্রতি তিনি লেখালেখি ও আগামী বইমেলা নিয়ে কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কথাশিল্পী ও গণমাধ্যমকর্মী সালাহ উদ্দিন মাহমুদ—

জাগো নিউজ: এবারের বইমেলায় আপনার কয়টি বই প্রকাশ হতে যাচ্ছে?
প্রিন্স আশরাফ: এবারের অমর একুশে বইমেলায় আমার মৌলিক বই চারটি এবং সম্পাদিত একটি বের হচ্ছে। অক্ষরবৃত্ত প্রকাশন থেকে হরর-থ্রিলার উপন্যাস ‘সূর্য ডুবে গেলে’, বাবুই থেকে কিশোর উপন্যাস ‘প্ল্যান চ্যাট’, য়ারোয়া প্রকাশনী থেকে গোয়েন্দা ‘হেকিম মুনশী’ এবং রোদ্দুর প্রকাশনী থেকে গল্পগ্রন্থ ‘সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখিত’। আমার সম্পাদনায় থ্রিলার গল্প সংকলন ‘থ্রিলার কোস্টার’ আসছে অক্ষরবৃত্ত প্রকাশনী থেকে।

জাগো নিউজ: আপনি পেশায় চিকিৎসক, পাশাপাশি সম্পাদনার কাজ করছেন—সময় বের করেন কীভাবে?
প্রিন্স আশরাফ: চিকিৎসা পেশায় হাসপাতালের ব্যস্ততার পাশাপাশি চেম্বারে রোগী দেখার ফাঁকে ফাঁকে সময় পেলেই লিখি, দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার সহ-সম্পাদকের দায়িত্ব পালন আমার লেখার জগতটাকে বিস্তৃত করে, অনেকের সাথে পরিচয় হয়, লেখার অনুপ্রেরণা পাই। প্রতিদিনের ব্যস্ততা থেকে কিছুটা সময় বের করে কিছু না কিছু হলেও লিখি। একটা পেশা। একটা নেশা। পেশাটা না থাকলে নেশাটা টিকিয়ে রাখা কষ্টকর। কাজেই দুটোই দরকার। তবে লেখক পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।

জাগো নিউজ: রহস্য, থ্রিলার, হরর, অতিপ্রাকৃত, সায়েন্স ফিকশনের পাশাপাশি মূলধারার গল্প-উপন্যাস লিখছেন—এ বিষয়ে কিছু বলুন—
প্রিন্স আশরাফ: কিশোরকালেই পরিচয় শ্রদ্ধেয় কাজী আনোয়ার হোসেনের সেবা প্রকাশনীর সাথে। তখন থেকেই তিন গোয়েন্দা সিরিজ, নীহাররঞ্জন গুপ্তের কিরীটি রায়, প্রেমেন্দ্র মিত্রের ঘনাদা, সেবার কুয়াশা সিরিজ—এসব পড়তে পড়তেই রহস্য ঘরানার লেখার প্রতি আগ্রহ জন্মে। রহস্য পত্রিকায় লেখালেখি থেকেই রহস্য, থ্রিলার, হরর, অতিপ্রাকৃত, সায়েন্স ফিকশন—এসব লিখতে শুরু করি, পাঠকও সেই লেখাগুলো আগ্রহের সঙ্গে গ্রহণ করে। তবে এসব লেখালেখির পাশাপাশি মূলধারার সাহিত্যের প্রতি দায়বদ্ধতা সব সময় ভেতরে ভেতরে কাজ করতো। ছোটগল্প এবং উপন্যাসেই মূলত কাজ করতে চাই। একাত্তর সিরিজে ‘গুরুদাসী মা’, বৃদ্ধাশ্রম নিয়ে ‘আপনালয় ও মেঘমুখী ফুল’, ‘অপরাধযাপন’, ‘কাঁটাতারে পুষ্পলতা’, ‘রাজশহরের পরী’, ‘মাটি’, ‘আগুনের ফুল’ আমার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস, যার মধ্যে কয়েকটি পাণ্ডুলিপি পুরস্কারপ্রাপ্ত। ছোটগল্পের বই ‘অন্ধের শহরে একজন আয়নার ফেরিওয়ালা’ দেশজ পাণ্ডুলিপি পুরস্কারপ্রাপ্ত এবং ‘এখানে শিরদাড়া মেরামত করা হয়’ অক্ষরবৃত্ত পাণ্ডুলিপি পুরস্কারপ্রাপ্ত।

জাগো নিউজ: নাটক, অনুবাদ ও শিশুসাহিত্যেও আপনার পদচারণা লক্ষণীয়—এত সব কাজের ধারাবাহিতা রক্ষা করেন কীভাবে?
প্রিন্স আশরাফ: অনুবাদ এক সময় প্রকাশকের চাহিদার কারণে করলেও বর্তমানে আর কোনো অনুবাদের কাজ করছি না। দৈনিক যায়যায়দিনের শিশুতোষ পাতা ‘হাট্টিমাটিম টিম’ সম্পাদনার পাশাপাশি শিশুদের নিয়ে লিখতে ভালো লাগে। আমার লেখা গল্প নিয়ে বৈশাখী টিভি ও বাংলা ভিশনে খণ্ড নাটক হয়েছে। এর পরে কিছু শর্টফিল্মের গল্প লিখেছি। ধারবাহিকতা বলতে অনেক সময়ে প্রয়োজনের তাগিদে আর বেশিরভাগ সময় যেটা লিখতে ভালো লাগে, সেটাই লিখি।

জাগো নিউজ: এবারের অমর একুশে বইমেলা কেমন হওয়া উচিত বলে মনে করেন?
প্রিন্স আশরাফ: করোনাকালের বইমেলা নিয়ে লেখক-প্রকাশকদের প্রত্যাশা থাকলেও গতবারের অভিজ্ঞতায় জানি, সেই প্রত্যাশা পূরণ করাটা সত্যিই দুষ্কর। এবারের বইমেলা নিয়ে এখনো নানা সিদ্ধান্তহীনতার মধ্যে সময় কাটছে। বইমেলা ১৫ দিন নাকি এক মাস, সেই বিষয়ে দ্বিধা কাটেনি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে হলেও বইমেলা লেখক-প্রকাশক-পাঠকের মিলনমেলায় পরিণত হোক, সব আশঙ্কা কেটে যাক—এটাই প্রত্যাশা করি।

জাগো নিউজ: বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সাহিত্যচর্চা নিয়ে আপনার অভিমত কী?
প্রিন্স আশরাফ: বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সাহিত্যচর্চার ব্যাপ্তি এবং প্রসার অনেক বেশি হয়েছে বলে আমার মনে হয়। বই প্রকাশের ক্ষেত্রে যেমন সহজ হয়েছে, প্রকাশনীর সংখ্যাও যেমন বেড়েছে; তেমনই বেড়েছে লেখক ও পাঠকের সংখ্যাও। আমার কেন জানি মনে হয়, মানুষের পাঠের আগ্রহ আগের চেয়ে বেড়েছে, বেড়েছে পাঠের বৈচিত্র্যও। নানাবিধ প্লাটফর্ম থাকায় লেখক ও পাঠক একে অন্যের লেখার সাথে যেমন সহজে পরিচিত হতে পারছেন, তেমনি সহজে মতামত দিতে পারছেন। এর মধ্য থেকে যে লেখা পাঠক গ্রহণ করবে, সেটাই হয়তো কালের বিচারে টিকে থাকবে।

জাগো নিউজ: লেখালেখি নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে যদি বলতেন—
প্রিন্স আশরাফ: ভালো কিছু লিখতে চাই। এমন কিছু লিখে যেতে চাই যা পাঠক হৃদয়ে স্থান করে নেবে। ভবিষ্যতে মূলধারার লেখায় আরও মনোযোগী হতে চাই।

এসইউ/জিকেএস