লেখক সৃষ্টিতেও ভূমিকা রাখতে চাই: পবন
তৃতীয় বর্ষে পা রেখেছে সৃজনশীল প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান কিংবদন্তী পাবলিকেশন। সৃজনশীলতাকে সহজে ছড়িয়ে দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেছেন অঞ্জন হাসান পবন। গত দুই বছরে কাব্যগ্রন্থ, উপন্যাস এবং গল্পগ্রন্থের পাশাপাশি বিভিন্ন গবেষণামূলক বই প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটির এগিয়ে চলা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন অঞ্জন হাসান পবন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কথাশিল্পী ও সাংবাদিক সালাহ উদ্দিন মাহমুদ—
জাগো নিউজ: কিংবদন্তীর যাত্রা শুরু হলো কবে?
অঞ্জন হাসান পবন: ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয় কিংবদন্তী পাবলিকেশন। এরই মধ্যে বইয়ের মান ও প্রকাশনার দিক থেকে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই আমরা মানসম্মত বই প্রকাশ করে আসছি। তা ছাড়া ২০২১ সাল থেকে অমর একুশে বইমেলায় অংশগ্রহণের পাশাপাশি সারাবছরই বই প্রকাশ করে যাচ্ছি।
জাগো নিউজ: প্রকাশনা জগতে কেন এলেন?
অঞ্জন হাসান পবন: অনেকটা বিরক্তি থেকে। ২০১৯ সালের বইমেলায় আমার পঞ্চম বই ‘কয়েদি’ প্রকাশিত হয় একটা প্রকাশনী থেকে। প্রকাশক আমাকে বইমেলা শুরু হওয়ার এক সপ্তাহ আগে বই প্রকাশের প্রতিশ্রুতি দিলেও বই প্রকাশ হয় বইমেলার শেষ সময়ে। আমার মতো অনেক লেখক ওই প্রকাশকের কাছে জিম্মি ছিলেন। আমি তখন একজন নতুন লেখকের কষ্টটা অনুভব করতে পেরেছিলাম। কিছু প্রকাশকের জন্য প্রকাশনা জগতের সমালোচনা হয়, ব্যাপারটা আসলেই দুঃখজনক। প্রকাশকদের সম্পর্কে কিছু লেখকের মধ্যে একধরনের ভ্রান্ত ধারণা কাজ করে। কারণ অনেক প্রকাশক কথা দিয়ে কথা রাখতে পারেন না। আমি চেয়েছিলাম লেখকদের ভুল ভাঙাতে। কিছুটা জেদ থেকেই মূলত প্রকাশনা জগতে পা রাখা। বিগত দুই বছরে অনেক নতুন লেখক আমাদের শরণাপন্ন হয়েছেন। আমরা সবার বই প্রকাশ করতে পারিনি কিন্তু সঠিক পরামর্শ দিয়েছি। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
জাগো নিউজ: বইমেলা উপলক্ষে আপনাদের প্রস্তুতি কেমন?
অঞ্জন হাসান পবন: এবারের (২০২২) বইমেলা উপলক্ষে আমাদের প্রকাশনী থেকে চল্লিশের বেশি বই প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে বেশিরভাগ বই প্রেস থেকে বাঁধাইখানায় চলে গেছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে বাকি বইগুলো চলে আসবে। দেশের বিশিষ্ট লেখকগণের বই প্রকাশের সাথে সাথে তরুণ লেখকদেরও আমরা সুযোগ করে দিচ্ছি। এ বছর (২০২২) বইমেলায়ও পাঠকদের জন্য চমক রেখেছি আমরা। যেমন- এ বছর কথাসাহিত্যিক ও সম্পাদক মোস্তফা কামালের ‘ভাসানীর উত্থানপর্ব’ প্রকাশ হতে যাচ্ছে। এ ছাড়াও একঝাঁক প্রতিশ্রুতিশীল লেখকের বই প্রকাশ করছে কিংবদন্তী।
জাগো নিউজ: এত কম সময়ে জনপ্রিয় বইয়ের তালিকায় আপনার প্রকাশনীর বই―কেমন লাগছে?
অঞ্জন হাসান পবন: অবশ্যই ভালো লাগছে। আমরা সব সময়ই চেষ্টা করি ভালো কিছু করার। গত বছর অমর একুশে বইমেলায় জুনায়েদ ইভানের ‘শেষ’ উপন্যাসটি পাঠকমহলে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। আশা করি এ বছর একাধিক বই পাঠকপ্রিয় হয়ে উঠবে।
জাগো নিউজ: পাণ্ডুলিপি বাছাই ও সম্পাদনার ক্ষেত্রে কোন পদ্ধতি অবলম্বন করেন?
অঞ্জন হাসান পবন: আমরা পাণ্ডুলিপি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সব সময় লেখার মান ও কন্টেন্ট যাচাই করি। আমাদের প্রতিটি পাণ্ডুলিপি একাধিকবার প্রুফরিডিং হয়ে প্রেসে যায়। কেননা শুধু বই প্রকাশ নয়, লেখক সৃষ্টিতেও আমরা ভূমিকা রাখতে চাই।
জাগো নিউজ: প্রকাশনা শিল্প নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
অঞ্জন হাসান পবন: কতদিন বাঁচবো জানি না। তবে যতদিন বাঁচি, প্রকাশনা শিল্পের সাথেই আছি। ক্ষুদ্র এ জীবনে এমন কিছু বই প্রকাশ করতে চাই, যে বইগুলো আমৃত্যু পাঠক হৃদয়ে বেঁচে থাকবে। আমি বিশ্বাস করি, প্রচেষ্টার মৃত্যু নেই। চেষ্টা করলে সাফল্য আসবেই। আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি।
এসইউ/জিকেএস