মধুর বৃষ্টিতে কাঁদছে বইমেলা
টানা বৃষ্টিহীনতায় বালুর পাহাড়ে রূপ নিয়েছিল রাজধানী। বায়ুদূষণে অতিষ্ঠ নগরবাসী। বৃষ্টির জন্য চাতক সবাই। সামান্য বৃষ্টির পরশেই এ শহরের পিচঢালা সড়কে নির্মল পবিত্রতা নেমে আসে। আবার অতিবৃষ্টি ভোগান্তি বাড়ায়। তবে বৃষ্টিকে আপাতত মধুর পরশই জানছে রাজধানীবাসী। বসন্ত হাওয়া আর বৃষ্টির হাতছানিতে বদলে গেছে প্রকৃতির রুক্ষতা।
তবে বৃষ্টি ভেজা এমন আনন্দলগ্নেও কাঁদছে বইমেলা। নগরের অন্য প্রান্তে বৃষ্টি আশীর্বাদ আনলেও বইমেলায় যেন অভিশাপ হয়ে এসেছে। শেষ বেলার আয়োজনে বৃষ্টিই যেন বাঁধ সেধেছে। তুমুল বৃষ্টিতে টইটুম্বুর মেলার আঙ্গিনা। ইট বিছানো রাস্তাগুলো কাদায় ভরে ওঠেছে। প্রধান সড়কেও পানি। মূলত মেট্রোরেলের কাজ চলছে বলে মূল সড়কের পানি নিষ্কাশন হতে পারছে না। ফলে বৃষ্টিতে আটকে গেল বইপ্রেমীদের শেষ বেলার বই কেনার বাসনা।
বুধবার দুপুরের পর থেকেই বৃষ্টির আনাগোনা ছিল। মেলার পর্দা ওঠে বিকেল ৩টায়। আর সন্ধ্যা হতেই ঢল নামে। তবে সন্ধ্যার বৃষ্টি মেলার চিত্র পাল্টে দিয়েছে। শেষের দুদিন যেখানে ক্রেতা-দর্শকের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়, সেখানে ছিল হাতে গোনা অল্প কিছু মানুষের আনাগোনা। বৃষ্টির কারণে তাই নির্ধারিত সময়ের আগেই সন্ধ্যা ৬টায় বইমেলা বন্ধ ঘোষণা করে বাংলা একাডেমি।
শুরু থেকেই এবারের বইমেলা জমে ওঠেছিল। রাজনৈতিক বা সামাজিক কোনো অস্থিরতা না থাকায় প্রথম থেকেই মেলায় মানুষের ভিড় ছিল। বিশেষ করে বসন্তবরণ আর ভালোবাসা দিবস থেকেই বদলে যায় প্রাণের মেলার চিত্র। আয়োজকদের ধারণা ছিল শেষ বেলাতেও একই চিত্র থাকবে। কিন্তু বৃষ্টি যেন আশায় গুঁড়েবালি হয়ে দেখা দিল।
এ প্রসঙ্গে কথা হয়, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজীর সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা সফলভাবে মেলার ২৬ দিন পার করেছিলাম। এবারে মেলায় রেকর্ড সংখ্যক মানুষ এসেছে বলে ধারণা করছি। তবে শেষের দিকে বৃষ্টি এসে আয়োজনে বিঘ্ন ঘটাল। প্রকৃতির ওপর তো আর কারো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। বৃষ্টি যে মেলা আয়োজনে ছন্দ পতন ঘটিয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলার শেষ দিন। বাংলা একাডেমি জানিয়েছে, গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সমাপনী অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেবেন একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী।
এএসএস/এমবিআর/এমএস