আলো ফুটছে বইমেলার
একদিকে হাতুড়ির শব্দ, আরেক দিকে করাতের। কেউ কেউ রং দিচ্ছেন কাঠ বা বোর্ডের তৈরি দেয়ালে দেয়ালে। বইয়ের টেবিল সাজাতে ব্যস্ত একজন, অন্যজন ব্যস্ত র্যাক তৈরিতে। কাঠমিস্তি, রংমিস্ত্রি, নকশাকারীর যেন হাট বসেছে এ পাড়ায়। দম ফেলার ফুসরত নেই কারোরই।
দম ফেলবেই বা কী করে! এখন যে ঘণ্টা ধরে সময় গড়াচ্ছে বইমেলা আয়োজকদের। আর মাত্র তিন দিন বাকি। শুক্রবারেই উঠবে বইমেলার পর্দা। এরই মধ্যে আলো ফুটতে শুরু করেছে বইমেলা প্রাঙ্গণে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রস্তুতির শেষবেলায় মহাব্যস্ত প্রকাশকরাও। ব্যস্ততায় ঘাম ঝরিয়ে কাজে মগ্ন স্টল সাজানোর সঙ্গে জড়িতরা। বিশেষ করে প্যাভেলিয়ানগুলোয় যেন মহাযজ্ঞ শুরু হয়েছে। এবারে কড়া নির্দেশনা এসেছে মেলা শুরুর আগেই স্টল সাজানোর কাজ শতভাগ নিশ্চিত করার। ১ ফেব্রুয়ারির পর স্টল সাজানোর কাজ চললে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ।
বাংলা একাডেমি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মেলা প্রাঙ্গণে একটি প্যাভেলিয়ান তৈরির কাজে ব্যস্ত কাঠমিস্থি জুল হাশেম। ডিজাইনার নিয়াজের নির্দেশনায় গেল আট দিন হয় কাজ করছেন তিনি। হাশেম বললেন, পাঁচজন সহকর্মী নিয়ে টানা কাজ করে যাচ্ছি। মৌলিক কাজ প্রায় সম্পন্ন। বলতে পারেন, প্যাভেলিয়ানের প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী দুই দিনের মধ্যেই বাকি কাজ শেষ করতে পারব।
অনন্যা প্রকাশনীর প্রকাশক মনিরুল হক বলেন, মেলাকে নিয়ে আমাদের ব্যস্ততা এখন সব খানেই। মেলা প্রাঙ্গণে যেমন কাটছে তেমনি প্রেসেও। দম ফেলার সময় নেই। তবে এবার আমরা মেলা সাজানোর ব্যাপারে অধিক গুরুত্ব আরোপ করেছি। জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশনা সমিতির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে বিশেষ তাগিদ দেয়া হয়েছে। মেলা আয়োজনের মৌলিক কাজ শেষের দিকে। এখন আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। পরশুর মধ্যেই অধিকাংশ স্টল এবং প্যাভেলিয়ান দাঁড়িয়ে যাবে। আশা করছি, মেলা উদ্বোধনের আগেই মেলার সব আয়োজন সম্পন্ন হবে।
বইমেলা কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমির জালাল আহমেদ বলেন, এবারে ৫৫০টি সংস্থাকে ৭৫০টি ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ২৪ প্যাভেলিয়ান থাকবে। আর ১৪০টি স্টল থাকছে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে। আগামী দু’দিনের মধ্যেই মেলার রূপ দাঁড়িয়ে যাবে। মেলা আয়োজক কমিটির পক্ষে থেকে তদারকি করা হচ্ছে। এবারে বিশেষ তাগিদ দেয়া হয়েছে মেলা শুরুর আগেই সব কাজ সম্পন্ন করার। আশা করছি প্রকাশকরা তাই করবেন।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজও একই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ১ ফেব্রুয়ারির পর হাতুড়ির আর একটি শব্দও শুনতে চাইব না। মেলার শেষ বেলার প্রস্তুতি নিয়ে আমি এখন পর্যন্ত সন্তুষ্ট। সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বাকি কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি।
এএসএস/আরআইপি