ভয় কেটে জমছে মেলা
গেল দু’বছর রাজনৈতিক আঁধার নামেনি বইমেলায়। রেকর্ড পরিমাণ বিক্রি হয়েছিল গত বছরের মেলা আয়োজনে। চাপা ভয়, উদ্বেগ থাকলেও, তা মনে সুপ্ত রেখেই মেলায় প্রাণ মেলে ধরেছিলো বইয়ের মানুষেরা। এবারও ঠিক তাই।
তবে মেলা শুরুর আগে থেকেই বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মামলার রায় নিয়ে চাপা উদ্বেগ কাজ করছিলো যেন। মামলার রায়কে ঘিরে খানিক প্রভাবও পড়েছিল বইমেলায়। যদিও মেলার প্রথম দিকের চিত্র ঠিক এমনই থাকে।
শুক্রবার মেলার প্রথম সপ্তাহ গড়ালো। ছুটির দিনে সকাল থেকেই মেলার রূপ বদলে যায় এ ক’দিন থেকে। সকালে শিশুপ্রহর। মা-বাবার হাত ধরে যে শিশুরা সকালে এসেছিল মেলায়, তাদের অনেকের দেখা মিলেছে বিকেলেও।
এদিন দুপুরের পর থেকেই মেলায় দর্শক ভিড়তে থাকে। বিকেল হতে না হতেই পূর্ণতা পায় বাংলা একাডেমি আর সোহরাওয়ার্দী প্রাঙ্গণে। কেউ স্বজনের হাত ধরে, কেউ বন্ধুর হাত ধরে মেলায় প্রবেশ করে। আবার অনেকে দল বেধেও আসেন নতুন বইয়ের গন্ধ নিতে। বই দেখা, বই কেনা আর আড্ডা জমিয়ে তোলেন পাঠকেরা। আবার লেখক, প্রকাশকরাও এদিন মেলায় বাড়তি সময় কাটিয়েছেন। লেখকদের অনেককেই অটোগ্রাফ দিয়ে পাঠকের হাতে বই তুলে দিতে ব্যস্ত ছিলেন।
সময় প্রকাশনীর ফরিদ আহমেদ বলেন, ছুটির দিনেই তো মেলা জমে ওঠে। আজই ঠিক মেলার রূপ ফিরেছে। রাজনৈতিক অস্থিরতার ভয় ছিল বটে। তবে সে ভয় অনেকটাই কেটে গেছে। আশা করছি, সবাই দায়িত্ববান আচরণ করবেন। আমাদের প্রাণের মেলা শেষ পর্যন্ত সফল হবে।
বিকেলে মেয়েকে নিয়ে ‘অন্য’ প্রকাশের স্টলে বইয়ের পাতা উল্টিয়ে দেখছিলেন শাওন প্রামানিক। সঙ্গে মেয়েকেও নিয়ে এসেছেন। বই কিনেছেনও বেশ কয়েকটি। বলেন, ব্যাংকে চাকরি করি। মেয়ের স্কুল থাকে। শুক্রবার ছাড়া আসবো কি করে? সারা বিকেল মেলায় কাটাব। ভয় তো কাল কেটেই গেছে। তবে সামনের দিন নিয়ে চিন্তা করতেই হয়।
কাকলী প্রকাশনীর প্রকাশক নাসির আহমেদ বলেন, আমরা আশা করছি রাজনৈতি অস্থিরতা থাকবে না। তবুও উদ্বেগ রয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার তো ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। সামনে কি হবে বোঝা যাচ্ছে না। লোকসানের চ্যালেঞ্জ তো আছেই।
মেলা পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সচিব জালাল আহমেদ বলেন, আমরা সুন্দরের পক্ষে। এ মেলা নিয়ে বাঙালির আবেগের শেষ নেই। উদ্বেগ ছিল তিন বছর আগে। তবুও মানুষ এসেছে। মানুষ ভয়কে জয় করেই এই মেলায় আসে। এবারও তাই আসবে। আজও তাই প্রমাণ হয়েছে।
এএসএস/এমআরএম/আইআই